শেয়ার করুন বন্ধুর সাথে

ইসলামে দাসীদের সাথে মিলন করা হারাম নয়। একটি নির্দিষ্ট সীমার মধ্যে ইসলামে দাসপ্রথা অবশ্যই জায়েয। মুসলিম মুজাহিদগণ যখন কোনো অঞ্চল জয় করেন, সেখানকার যুদ্ধবন্দী এবং তাদের নারী ও শিশুদের দাসদাসী হিসেবে মুজাহিদীনের মাঝে বণ্টন করা জায়েয। শাইখ শানক্বিতী রহ. বলেন, “দাসত্বের কারণ হলো কুফর এবং আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বিরুদ্ধে যুদ্ধ করা। মুসলিম মুজাহিদীন তাঁদের জীবন ও সম্পদ সঁপে দিয়ে আল্লাহর রাস্তায় সর্বস্ব ও সর্বশক্তি দিয়ে আল্লাহর কালামকে সমুন্নত করতে যুদ্ধ করেন। আল্লাহ যখন তাঁদেরকে কাফেরদের বিরুদ্ধে বিজয় দান করেন, তখন তাদেরকে দাসত্বের মাধ্যমে তাঁদের অধীন করে দেন যদি না মুসলিমদের বৃহত্তর কল্যাণার্থে শাসক তাদেরকে মুক্তিপণের বিনিময়ে অথবা মুক্তিপণ ছাড়াই ছেড়ে দেয়ার সিদ্ধান্ত নেন।” (আযওয়াউল বয়ান ৩/৩৮৭)
কাফিরদের জন্যও এটি উপকারী যে তারা এর মাধ্যমে ইসলামী পরিবেশে চলে আসতে পারে। ইসলামের বিরুদ্ধে তার কর্মকাণ্ডের সুযোগ সীমিত হয়ে যায়। তারা ইসলামকে কাছ থেকে দেখতে ও শিখতে পারে। ফলে আল্লাহ তাদের অন্তরকে ইসলামের দিকে ঘুরিয়েও দিতে পারেন। এর মাধ্যমে তাদের আখেরাতে জাহান্নাম থেকে মুক্তির পথ খুলে যায়। বনু মুস্তালিকের যুদ্ধে যুদ্ধবন্দীদের মধ্য হতে একজন নারীকে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বিবাহ করে নেন। ফলে তাঁর মর্যাদা উন্নত হয়ে যায়। উম্মাহাতুল মুমিনীন বা মুমিনদের মাতাগণের মধ্যে একজন হিসেবে তিনি পরিগণিত হন। তাঁর নাম জুয়াইরিয়া বিনতে হারিস রাযি.।
দাসদাসী যদি মুসলিম হয়ে যায়, তাহলেও সে স্বয়ংক্রিয়ভাবে মুক্তির উপযুক্ত হয়ে যায় না। কারণ, আগেই প্রতিষ্ঠিত কোনো অধিকার পরবর্তিতে স্থাপিত অধিকারের দ্বারা নাকচ হয় না। সে কাফির থাকা অবস্থায় মুজাহিদের অধিকার ছিলো তাকে দাস/দাসী বানানোর। সে দাসত্ব অবস্থায় মুসলিম হলেও মুজাহিদের সেই অধিকার নাকচ হয় না।


জাহিলি আরবে মানুষকে দাস বানানোর বেশ কয়েকটি পদ্ধতি ছিলো। যুদ্ধবন্দী হলে সে দাস হতো। ঋণের দেনা শোধ করতে না পারলে সে দাস হিসেবে বিক্রয় হয়ে যেতো। দারিদ্র্যের কারণে কেউ দাস হিসেবে বিক্রয় হতো। যুদ্ধে কেউ দাস হিসেবে বন্দী হলে তার সামনে দুটিই পথ ছিলো। দাস হয়ে বেঁচে থাকা অথবা মৃত্যুদণ্ড পাওয়া। ইসলামে যুদ্ধবন্দীদের জন্য মৃত্যুদণ্ড ও দাসত্ব ছাড়া আরও দুটি বিকল্প যোগ করা হয়েছে। মুক্তিপণ নিয়ে ছেড়ে দেয়া অথবা মুক্তিপণ ছাড়াই ছেড়ে দেয়া। পরিস্থিতি ও মুসলিমদের সুবিধা-অসুবিধা অনুযায়ী শাসক বা নেতা এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত দিয়ে থাকেন। আল্লাহ তা‘আলঅ বলেন, “অতঃপর হয় তাদের প্রতি অনুগ্রহ করো অথবা তাদের নিকট হতে মুক্তিপণ নাও…” (সূরা মুহাম্মাদ ৪৭:৪) বদর যুদ্ধের যুদ্ধবন্দী মুশরিকদের মুক্তিপণ নিয়ে ছেড়ে দেয়া হয়। বনু মুস্তালিক ও মক্কা বিজয়সহ অনেক যুদ্ধেই মুক্তিপণ ছাড়া ক্ষমা ঘোষণা করা হয়।


-সংগৃহীত
ভিডিও কলে ডাক্তারের পরামর্শ পেতে Play Store থেকে ডাউনলোড করুন Bissoy অ্যাপ