পেরিফেরাল নিউরোপ্যাথি কি?
পেরিফেরাল স্নায়ুতন্ত্র শরীরের একটা যোগাযোগ পদ্ধতি যেটা কেন্দ্রীয় স্নায়ুতন্ত্রে, মানে মস্তিষ্ক ও মেরুদন্ড এবং শরীরের অন্যান্য অঙ্গে, সংকেত পাঠায়। এই সংকেতগুলো সংজ্ঞাবহ বার্তা হতে পারে, যেমন, ঠান্ডা হাত, পেশীর সংকোচনের জন্য বার্তা যেটা শরীরের নড়াচড়াতে সাহায্য করে এবং আরো অনেক কিছু। পেরিফেরাল স্নায়ুতন্ত্রের ক্ষতি হলে তাকে পেরিফেরাল নিউরোপ্যাথি বলে।

পেরিফেরাল নিউরোপ্যাথি এর প্রধান লক্ষণ ও উপসর্গগুলো কি কি?
লক্ষণ ও উপসর্গগুলো নির্ভর করে কোন স্নায়ু ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে তার উপর।

  • মোটর নার্ভে ক্ষতি
  • এর কারণে পেশীতে খিঁচুনি, পেশীর দূর্বলতা, পেশীতে ঝাঁকি মারা এবং পেশী কুঁচকে যায়।
  • সংজ্ঞাবহ নার্ভে ক্ষতি
  • এর কারণে কোনো সংবেদন অনুভব করতে পারা যায় না, যেমন, স্পর্শ, ব্যথা এবং তাপমাত্রার পরিবর্তন, এবং মোটর সমন্বয়ে অসুবিধা যেমন, হাঁটা, বোতাম আটকানো, ইত্যাদি।
  • অটোনোমিক নার্ভে ক্ষতি
  • এর কারণে ঘামে অস্বাভাবিক পরিবর্তন হয়, গরম সহ্য হয় না, এবং শরীরের ভিতরের অঙ্গ সম্পর্কিত অন্যান্য সমস্যা দেখা দেয়।

পেরিফেরাল নিউরোপ্যাথি এর প্রধান কারণগুলো কি কি?
পেরিফেরাল নিউরোপ্যাথির সবচাইতে প্রভাবশালী কারণ হলো ডায়াবিটিস। এর অন্যান্য কারণগুলো নিচে বলা হলো:

  • ভিটামিনের মাত্র কমে যাওয়া।
  • স্নায়ুতে আঘাত।
  • মদ্যপানে আসক্তি।
  • সংক্রমণ যেমন, লাইম অসুখ এবং ডিপথেরিয়া।
  • রক্তনালীতে প্রদাহ।
  • ক্রনিক যকৃতের অসুখ।
  • ক্রনিক কিডনীর অসুখ।
  • রিউমাটয়েড বাত।
  • এইচআইভি, হারপিস এবং ভারিসেলা-জোস্টার ভাইরাস সংক্রমণ।
  • শরীরে অতিরিক্ত বিষাক্ত পদার্থ যেমন, আর্সেনিক, মার্কারী এবং লেড।

পেরিফেরাল নিউরোপ্যাথি কিভাবে নির্ণয় ও চিকিৎসা করা হয়?
নিম্নলিখিত উপায়ে পেরিফেরাল নিউরোপ্যাথি নির্ণয় করা হয়:

  • ডায়াবিটিস বা ভিটামিনের অভাব নির্ণয়ের জন্য রক্তপরীক্ষা।
  • নার্ভ কন্ডাকসন পরীক্ষ।
  • ইমেজিং প্রকৃয়া যেমন এক্স-রে, সিটি স্ক্যান এবং ম্যাগনেটিক রেসোনেন্স ইমেজিং (এমআরআই) পরাীক্ষা।
  • ইলেক্টোমায়োগ্রাফি।
  • স্নায়ুর বায়োপসি।

যে সকল কারণে পেরিফেরাল নিউরোপ্যাথি হয় সেই কারণের চিকিৎসা করে ও উপসর্গগুলো নিয়ন্ত্রণ করে এই রোগের চিকিৎসা করা হয়। নিম্নলিখিত পদ্ধতিতে সাধারণত চিকিৎসা করা হয়:

  • ডায়াবিটিস নিয়ন্ত্রণ ও তার চিকিৎসা।
  • ভিটামিনের জন্য খাওয়ার ওষুধ বা ইনজেকশন।
  • যদি কোনো ওষুধের কারণে এই অসুখ হয় তাহলে সেই ওষুধ বন্ধ করা।
  • কর্টিকোস্টেরয়েডস।
  • ইমুনোগ্লোবুলিন ইঞ্জেক্সন।
  • ইমুনোসাপ্রেস্যান্টস।
  • স্নায়ুর ব্যাথা কমাতে ব্যথা কমানোর ওষুধ।
  • সংবেদন অনুভুতি কমে যাওয়ার জন্য সবসময় জুতো ও মোজা পরে থাকা উচিত।যাতে পায়ের পাতায় কোনো আঘাত না লাগে।

শেয়ার করুন বন্ধুর সাথে