বিয়ের জন্য ইসলামি শরিয়তের সাক্ষী থাকা জরুরি। হযরত ইবনে আব্বাস (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, সাক্ষী ছাড়া কোনো বিয়ে হয় না। (তিরমিজি শরিফ) হযরত ইবনে আব্বাস (রা.) থেকে বর্ণিত অপর এক হাদিসে রয়েছে, যেসব নারী সাক্ষী ছাড়া বিয়ে করেন, তারা ব্যভিচারী। ইসলামি শরিয়তে সাহাবায়ে কেরাম,তাবেঈন, তাবে-তাবেঈন ও চার মাজহাবের ইমামরা বলেছেন, সাক্ষী ছাড়া কোনো বিয়ে হয় না। ফিকহ ও ফতোয়ার কিতাবে উল্লেখ, কোনো দুজন মুসলমান নর-নারীর বিয়ে দুজন স্বাধীন, সুস্থ জ্ঞানসম্পন্ন, প্রাপ্তবয়স্ক পুরুষ অথবা একজন পুরুষ ও দুজন নারী সাক্ষীর উপস্থিতি ছাড়া হবে না। (হিদায়া২/ ২৭৬,শামি ৪/ ৮৬ ফিকাহর সব কিতাবে বলা হয়েছে, যে বিয়ের অনুষ্ঠানে বর বা বরের উকিল এবং কনে বা কনের উকিল একই বৈঠকে একই স্থানে সশরীরে উপস্থিত থাকতে হবে এবং সে অনুষ্ঠানে সাক্ষীরাও সশরীরে উপস্থিত থেকে বর বা বরের উকিল ও কনে বা কনের উকিলের ইজাব-কবুল সরাসরি ও সামনাসামনি শুনতে হবে। তবেই তাদের সাক্ষ্য গ্রহণযোগ্য হবে, অন্যথায় নয়। (ফতোয়ায়ে আলমগীরি, ১/ ২৬৯ বুঝা গেল, সাক্ষীরা যদি বিয়ের অনুষ্ঠানে বর বা বরের উকিল এবং কনের উকিলকে সশরীরে সামনাসামনি না দেখেন, তাহলে বিয়ে হবে না। তদ্রুপ একই বৈঠকে বিয়ে অনুষ্ঠান হতে হবে। বৈঠক দুই হলে বিয়ে হবে না। মোবাইলে বিয়ের ক্ষেত্রে যেহেতু বর এক দেশে এবং কনে বা কনের উকিল অন্য দেশে পৃথক দুটি স্থানে অবস্থান করেন, উপরন্তু সাক্ষীরা ইজাব-কবুল ফোনের মাধ্যমে শুনে থাকেন, সরাসরি বর বা বরের উকিল, কনে বা কনের উকিলকে দেখেন না এবং তাদের কথাও শোনেন না; সেহেতু বলা যায় ইসলামের প্রাচীনতম নিয়মে এমন বিয়ে জায়েজ নয়। তবে আধুনিক মুফতিদের মতামত হলো, প্রবাসী পাত্র বা পাত্রী কোনো আপনজন বা যে কাউকে চিঠি, ফোন, ফ্যাক্স, ই-মেইল ইত্যাদির মাধ্যমে নিজের উকিল বানাবেন। উকিল অপর পক্ষের সামনে সাক্ষীদের উপস্থিতিতে বিয়ে সম্পন্ন করবেন। এতে উভয় পক্ষ ও সাক্ষীরা একই বৈঠকে বিয়ে সম্পন্ন করতে সমর্থ হবেন। তাহলে ইসলামের দৃষ্টিতে আর কোনো আপত্তি থাকবে না। (ফতোয়ায়ে মাহমুদিয়া, ১১/ ১৬৩, ফতোয়ায়ে নিজামিয়া ২/২০৭) বিয়ে নিশ্চয় আমাদের জীবনের গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়; তাই সামনা সামনি বিয়ে না হলে, বর কনে একে অন্যকে না দেখলে পরবর্তীতে মানসিক অসুবিধা সৃষ্টি হতে পারে। পৃথিবীতে আসা মানব সম্প্রদায়ের প্রথম ‘সম্পর্কের’ নাম স্বামী-স্ত্রী। বাবা-আদম ও হাওয়ার বিয়ে! জান্নাতেও আমরা স্বামী-স্ত্রী পরিচয়েই বসবাস করবো। অন্যকোনো পরিচয় সেখানে গৌণ। তাই দুনিয়ার জীবনে স্বামী-স্ত্রীদের উচিত স্বচ্ছ এবং পবিত্র জীবন যাপন করা। স্বচ্ছ ও পরিচ্ছন্ন জীবনই সুখ বয়ে আনবে। মহান রব আমাদের তাওফিক দান করুন।ব

ভিডিও কলে ডাক্তারের পরামর্শ পেতে Play Store থেকে ডাউনলোড করুন Bissoy অ্যাপ