যেহেতু আল্লাহ প্রদত্ত কমন সেন্স তাদের ছিল এবং ইসলাম সম্পর্কে জানার যথেষ্ট উপকরণ তারা পেয়েছিলেন, এরপরও তারা ইসলাম গ্রহণ করেন নি, তাই তারা জান্নাতে যেতে পারবেন না। তবে হ্যাঁ, আল্লাহ কারো ওপর জুলুম করেন না। তারা যা ভালো কাজ করেছেন, এর প্রতিদান পৃথিবীতে তাদের দিয়েছেন। মানুষ তাদেরকে চিনেছে, জেনেছে। তাদের মৃত্যুর পরও তাদের সুনাম পৃথিবীর মানুষ করেছে। তাদের ভালো কাজের পার্থিব প্রতিদান আল্লাহ এভাবে দিয়েছেন। কিন্তু পরলৌকিক প্রতিদানের জন্য যেহেতু আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের ওপর বিশ্বাস স্থাপনটা মূল রিকোয়েরমেন্ট, যা তাদের বেলায় অনুপস্থিত, তাই তারা পরলৌকিক কোন প্রতিদান পাবেন না। প্রশ্ন : যেসব এলাকায় ইসলামের বাণী পৌঁছে নি, তাদের কী বিধান। উত্তর : যারা ইসলাম গ্রহণ করেন নি, তাদের মধ্যে দু’ধরনের লোক রয়েছে। এক : যারা মুসলিমদের মাঝে ছিলেন, ইসলামের কথা শুনেছেন, ইসলাম সম্পর্কে জানা তাদের জন্য সহজ ছিল, এরপরও তারা ইসলাম সম্পর্কে অনুসন্ধান করেননি। তাদের অবস্থা প্রথম প্রশ্নের উত্তরে প্রদত্ত লোকদের অবস্থার অনুরূপ হবে। অর্থাৎ, তাদের জন্য জাহান্নামই নির্ধারিত থাকবে। দুই : যারা অমুসলিমদের মাঝে ছিলেন, ইসলাম সম্পর্কে জানার কোনো উপায় ছিল না। ইসলামের কথা কখনো শুনেনও নি। তাদের অবস্থা আহলুল ফাতরাত এর মতো হবে। অর্থাৎ, ক্বিয়ামতের দিন আল্লাহ তাদের পরীক্ষা করবেন। যেমন বলবেন, আগুনে ঝাপ দাও। যারা তাঁর অনুসরণ করবে, তারা আগুনে ঝাপ দিয়ে দেখবে সেটা শীতল বেহেশত। যারা অমান্য করবে, তারা সত্যিই জাহান্নামে যাবে। এভাবে আল্লাহ তাদের কাছ থেকে আনুগত্যের পরীক্ষা নিবেন। তিনি বলেন, ﻭَﻣَﺎ ﻛُﻨَّﺎ ﻣُﻌَﺬِّﺑِﻴﻦَ ﺣَﺘَّﻰ ﻧَﺒْﻌَﺚَ ﺭَﺳُﻮﻻً রাসূল না পাঠিয়ে আমি কাউকে শাস্তি দেই না। (ইসরা : ১৫) ইবনে কাসীর রহ. এই আয়াতের ব্যাখ্যায় বলেছেন, এটা আল্লাহর ইনসাফের প্রকাশ। আল্লাহ কাউকে তার বিরুদ্ধে প্রমাণ সংগ্রহ ছাড়া শাস্তি দিবেন না। হয়ত রাসূল প্রেরণের মাধ্যমে বা অন্য কোনো ভাবে দাওয়াত পৌঁছানোর মাধ্যমে। কাজেই তাদের পরিণাম কী হবে তা ক্বিয়ামতের দিনই নির্ধারিত হবে। আল্লাহ আমাদের হিদায়াতের পথে চলার তাওফীক দিন। আমীন।