শেয়ার করুন বন্ধুর সাথে
Call

অবশ্যই । এবং এর সবচেয়ে বড় দৃষ্টান্ত হলো হযরত মুহাম্মদ (সা: ) এর মিরাজ গমন । তিনি আল্লাহর কুদরতে লক্ষ-কোটি বছরের পথ এক রাতের ব্যবধানে গমণ করেছিলেন (সুবহানাল্লাহ )

ভিডিও কলে ডাক্তারের পরামর্শ পেতে Play Store থেকে ডাউনলোড করুন Bissoy অ্যাপ
সময় ভ্রমণের সারবক্তব্য হলো, অতীত কিংবা ভবিষ্যত জগতে চলে যাওয়া। এটা আদৌ সম্ভব কি সম্ভব নয়, এর সাথে বাস্তবতার সম্পর্ক আছে কি নেই এগুলো ভিন্ন বিষয়। ইসলামের দৃষ্টিতে সময় ভ্রমণ সম্ভব কি না ? প্রশ্নটি এমন না হয়ে ইসলামের দৃষ্টিতে সময় ভ্রমণ বৈধ কিংবা জায়েয কি না? এমন হ ওয়া চাই। কারণ কোনো বিষয়ের সক্ষমতা বা সম্ভাবনার বার্তা নৈতিক বিধানগুলো প্রদান করে না। চাঁদে যাওয়া সম্ভব কি না এ প্রশ্নের উত্তর ইসলামী আইন প্রদান করবে না। বরং এটা মানুষের চেষ্টা সাধনার উপর নির্ভর করবে। সুতরাং সময় ভ্রমণ ইসলামের দৃষ্টিতে বিধিসম্মত কি না তা নির্ভর করে তার সক্ষমতা ও সম্ভাবনার উপর। যদি বাস্তবিক পক্ষে সময় ভ্রমণ সম্ভব হয় তাহলে এক্ষেত্রে ইসলামী আইনে কোনো বিধি নিষেধ নেই। যেমন মহাকাশ, বিভিন্ন গ্রহ-উপগ্রহে গমনের ক্ষেত্রে ইসলামী আইনের কোনো বিধি নিষেধ নেই। তদ্রূপ সূর্যে গমন করা যদি বাস্তবে কোনো দিন কোনো উপায়ে সম্ভব হয় তাহলে সেখানে গমন করাও অবিধানিক হবে না। তবে এখানে ইসলামী আইনের একটি মূলনীতি জেনে রাখা প্রয়োজন তা হলো, যে কোনো কর্ম বিধিসম্মত হওয়ার জন্য তা অর্থময় এবং কল্যাণকর হওয়া শর্ত। অনর্থক এবং অকল্যাণকর কর্ম ইসলামী আইন মতে অনুমোদিত নয়। নিম্নে সময় ভ্রমণ সম্বন্ধে কিছুটা ধারণা লাভের জন্য এতদ সংশ্লিষ্ট একটি আলোচনা উল্লেখ করা হলো।

টাইম মেশিন দিয়ে টাইম ট্রাভেলিং আদৌ কি সম্ভব ? /সময় ভ্রমণ

মিতু ভিঞ্চি


আমরা যদি একটি সাদা খাতা অথবা কোন ব্ল্যাকবোর্ড দেখি তাহলে বুঝি যে এটি একটি দ্বি-মাত্রিক বস্তু ,কারণ এর দৈর্ঘ্য , প্রস্থ আছে ।এখন আমরা যদি আমাদের নিজেদের শরীর দেখি অথবা একটা পানির বোতল দেখি দেখব এর দৈর্ঘ্য , প্রস্থ , পুরুত্ব আছে অর্থাৎ এটি ত্রি-মাত্রিক । এখন চারমাত্রিক ব্যাপারটা আবার কি ?স্টিফেন হকিংস খুব সহজ ভাবে বলেছেন সময় হল চারমাত্রিক যা কিনা দৈর্ঘ্য , প্রস্থ , পুরুত্ব এর মতই । ধরি ,আমরা একটি গাড়ি চালাচ্ছি ।এখন গাড়িটি যদি সামনের দিকে যায় তাহলে সেটা হবে প্রথমমাত্রা, গাড়িটি যদি ইউটার্ণ নিয়ে ডান কি বামে যায় তাহলে সেটা হবে দ্বিতীয় মাত্রা , গাড়িটি যদি ওপরের দিকে কোন পাহাড়ের রাস্তা ধরে উঠতে থাকে তাহলে সেটা হবে তৃতীয় মাত্রা ।আর চতুর্থমাত্রাটা হল সময় ।

আমরা সায়েন্সফিকশন সিনেমায় দেখি একটি সুবিশাল,শক্তিশালী টাইম মেশিন যেটি চতুর্থমাত্রার মাধ্যমে একটি সুড়ংগ তৈরী করে ,একজন বিশেষ চরিত্র থাকে যিনি এই মেশিনের মধ্যে দিয়ে চলাফেরা করতে জানেন ।এই ধারণাটা করা খুব কষ্টকল্প ,বাস্তব এর থেকে ভিন্ন হতে পারে ; কিন্তু এমন সম্ভাবনা বাস্তব জগৎ এ অসম্ভব নয় ।

পদার্থবিদ্যার সুত্রসমুহ টাইম মেশিন দিয়ে সময় ভ্রমণ করার একটা ধারণা দেয় যেটা সম্ভব হতে পারে ওয়ার্মহোলর মাধ্যমে । ওয়ার্মহোল হল একটা অবস্থার নাম ওয়ার্মহোল অসম্ভব ছোট দেখার জন্য এবং এরা আমাদের চারিদিকেই অবস্থান করছে স্টিফেন হকিংস বলেন , এমন কোনকিছুই নেই যা কিনা সমতল এবং কঠিন ।আমরা যদি খুব ভাল করে দেখি দেখব পরমাণুগুলোর ভেতরে একটা শুণ্য স্থান আছে ।এটা হল মৌলিক ভৌত নীতি যেটা সময়ের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য ।

পরমাণুর চেয়েও আকারে অনেক অনেক ছোট একটি শুণ্য স্থান যেটিকে কোয়ান্টাম ফোম বলা হয় ,সেখানেই ওয়ার্মহোল অবস্থান করে ।এই ওয়ার্মহোলটিকে যদি ক্ষুদ্র সুড়ংগ ধরি নির্দিষ্ট স্থান ,সময় ধরে তা অদৃশ্য করার মাধ্যমে নতুন সময়, স্থান পাওয়া যাবে ।এটি আসলে দুটি ভিন্ন সময় ও স্থান এর সাথে একটি সংযোগ স্থাপন ।

কিন্তু এই সুড়ংগটি অথবা ওয়ার্মহোল অত্যাধিক ক্ষুদ্র (বিলিয়ন/ট্রিলিয়ন সেন্টিমিটার)হওয়ার দরুন এর ভেতর দিয়ে মানুষ কিংবা অন্যকিছুর যাতায়াত সম্ভব নয় ।কিন্তু পদার্থবিদগণ বিশ্বাস করেন ওয়ার্মহোল কে হয়ত একদিন বড় করে তৈরী করা সম্ভব হবে ।

বিজ্ঞানীগণ গবেষণা করে দেখলেন যে টাইম মেশিন বানানো সম্ভব হতে পারে কিন্তু তা দিয়ে কেবল ভবিষ্যতে যাওয়া সম্ভব ,অতীতে নয় ।কারণ ধরুন আপনি টাইম মেশিন দিয়ে অতীতে গেলেন আর কেউ তখন আপনাকে মেরে ফেলল ,তাহলে আপনি বর্তমানে আছেন কিভাবে কারন আপনিতো অতীতে মরে গেছেন ।

সময় নদীর মত বয়ে যায় ।কিন্তু এই কথাটি আমরা একটু ভিন্ন আঙ্গিকে যদি দেখি তাহলে বলা যায় ।নদীর পানি যেমন ভিন্ন ভিন্ন স্থান এ ভিন্ন ভিন্ন গতিতে বয় তেমনি সময়ও ভিন্ন ভিন্ন স্থান এ ভিন্ন ভিন্ন গতিতে প্রবাহিত হয় ,এটিই হল সময় ভ্রমণের মাধ্যমে ভবিষ্যতে যাওয়ার একটি উপায় ।সময় ভিন্ন ভিন্ন জায়গায় ভিন্ন ভিন্ন গতিতে প্রবাহিত হয় আইন্সটাইন বহু আগেই এই কথাটি বলেগেছেন ,এবং তিনি সম্পুর্ণ সঠিক ছিলেন ।
এর উদাহরণ স্বরূপ বলা যায় মিশরের পিরামিডগুলোর আশেপাশে যারা অবস্থান করে তারা যদি পিরামিড থেকে দূরে অবস্থানরত মানুষদের দেখে তাহলে দেখবে যে পিরামিড থেকে দূরে অবস্থানরত মানুষ গুলো খুব দ্রুত এবং তারা নিজেরা (পিরামিডের কাছে অবস্থানরত মানুষ)তাদের তুলনায় ধীর ।
আমাদের পৃথিবীর চারদিকে ৩১টি স্যাটেলাইট আছে । এই কৃত্তিম উপগ্রহ গুলোর সময়ের গতি দ্রুত পৃথিবীর চেয়ে অর্থাৎ মহাকাশের সময় গতি অন্তত পৃথিবীর চেয়ে দ্রুত ।
প্রতিটি মহাকাশযান অভ্যন্তরে থাকে একটি সঠিক ঘড়ি। কিন্তু সঠিক হওয়া সত্ত্বেও তা পৃথিবীর এক সেকেন্ডের শতকোটি ভাগের তিন ভাগ এগিয়ে ।একারনে এই হিসেব টাকে ঠিক করে নেওয়া হয় পৃথিবীর সময়ের সাথে মেলানোর জন্য ।এক্ষেত্রে মহাকাশযানের ঘড়ির কোন ত্রুটি নেই এমন হয় পৃথিবীর মেরুর কারণে ।সময়ের যেহেতু ধীর গতি আর দ্রুত গতি আছে তাহলে এখানেই শুরু হয় সময় ভ্রমণের মাধ্যমে ভবিষ্যতে পৌছনোর পথ ।

আমাদের ছায়াপথের কেন্দ্রে অবস্থিত কৃষ্ণ গহ্বর স্বয়ং নিজে একটি টাইম মেশিন ।কৃষ্ণ গহ্বর এর ঘনত্ব এত বেশি যে আলোও এর ভেতর ঢুকলে বেরিয়ে আসতে পারে না । কিভাবে কৃষ্ণ গহ্বর প্রাকৃতিক টাইম মেশিন হতে পারে তা ব্যাখ্যা করছি ।ধরি , পৃথিবী থেকে ২৬০০০ আলোকবর্ষ দূরে অবস্থিত আমাদের মহাবিশ্বের কেন্দ্র কৃষ্ণ গহ্বরকে কেন্দ্র একটি মহাকাশযান আবর্তন করছে তার চারপাশে তখন পৃথিবী থেকে দেখা যাবে মহাকাশযানটির মাত্র ১৬ মিনিট লাগছে একটি আবর্তন সম্পন্ন করতে কিন্তু মহাকাশযানে অবস্থানরত ব্যক্তিদের কাছে সময় ধীর মনে হবে কারন মহাকাশযানের ভেতর থেকে দেখলে মনে হবে একটি আবর্তন করতে মাত্র আট মিনিট লাগে ।এভাবে করে মহাকাশযানটি যদি ৫ বছর (মহাকাশযানে অবস্থানরত ব্যক্তিদের সাপেক্ষে ৫ বছর) ধরে কৃষ্ণ গহ্বরকে আবর্তন করতে থাকে তাহলে পৃথিবীর সময়ের সাপেক্ষে দেখা যাবে তারা মহাকাশযানটি ১০ বছর অতিক্রম করে ফেলেছে । এই পদ্ধতিতে ওয়ার্মহোল পদ্ধতির মত কোন ত্রুটি নেই ,কিন্তু এটি করা একটি অসাধ্য ব্যাপার ।

কিন্তু আরো একটি সম্ভাবনা আছে সেটি হল অতি দ্রুত ভ্রমণ ।আর এই অতি দ্রুত ভ্রমণ সম্ভব মহাকাশযানের গতি আলোর গতির সমান হলে ।বিজ্ঞানে প্রতিষ্ঠিত একটি সুত্র কোন কিছুর গতিই আলোর গতিকে অতিক্রম করতে পারে না ।কিন্তু আলোর গতির কাছাকাছি গতি হলেই আমরা ভবিষ্যত সময়ে পৌছতে পারব ।

এখন আমরা একটি ট্রেন এর চিন্তা করি যেটি পৃথিবীর এক প্রান্ত থেকে আরেক প্রান্ত ভ্রমণ করে । ট্রেনটি যদি এক সেকেন্ডে সাত বার পৃথিবীর এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্ত যায় তাহলে এটির যেই গতি সেটি আলোর গতির সমান হবে আর এর ভেতর যাত্রীদের সময় খুব ধীরভাবে চলবে ।কারন ট্রেনের ভেতরে যদি কেউ সামনের দিকে দৌড় দেয় তাহলে তার গতিটিও ট্রেনের গতির সাথে যোগ হত আর তা আলোর গতিকে অতিক্রম করত যা ট্রেনটির এক্সিডেন্ট ঘটাতে পারত ,তার ভারসাম্যের জন্য প্রাকৃতিকভাবেই ট্রেনের ভেতরে সময় খুব ধীর ভাবে চলবে ।এভাবে করে চলতে থাকলে ট্রেনটি এক সপ্তাহে ১০০ বছর সামনে অর্থাৎ ভবিষ্যতে চলে যেতে পারবে । অর্থাৎ সময় ভ্রমণ করে ভবিষ্যতে পৌছনো আসলে সম্ভব ।কিন্তু বাস্তবে এমন সুপার ফাস্ট ট্রেনের অস্তিত্ব এখন পর্যন্ত নেই ।

এখন পর্যন্ত পৃথিবীতে সবচেয়ে দ্রুত গতি সম্পন্ন কণা পাওয়া গেছে জেনেভায় অবস্থিত সার্ণের গবেষণাগারে যেখানে একটি বেলনাকৃতি সুড়ংগ দিয়ে কণা গুলোর মধ্যে সংঘর্স ঘটে সবচেয়ে দ্রুত গতির মাধ্যমে ।
কিন্তু মানুষের গতি বারাতে হলে আমাদের যেতে হবে মহাকাশে ।এপোল-১০ এর গতি ছিল ঘন্টায় ৩০,০০০ কিলোমিটার ।কিন্তু টাইম ট্রাভেলের জন্য দরকার এর চেয়ে ২০০০ গুণ গতি সম্পন্ন অনেক বড় ভারী মহাকাশযান ।যেটা অনেক জ্বালানী ধরে রাখতে পারবে আলোর গতিতে পৌছনোর জন্য ।এই গতি সম্পন্ন মহাকাশযানটি যদি আমাদের মহাবিশ্বের কেন্দ্রে অবস্থিত কৃষ্ণ গহ্বরকে আবর্তন করতে থাকে তাহলে এই আবর্তন শুরুর ৬ বছর পরে তা আলোর গতি অর্জন করবে ।তখন মহাকাশযানের একদিন হবে পৃথিবীর এক বছরের সমান ।

বিজ্ঞানীগণ আশা করেন সঠিক প্রযুক্তি ও পদার্থবিদ্যার সুত্র গুলো সঠিকভাবে ব্যবহারের মাধ্যমে একদিন টাইম মেশিন তৈরী হবে এবং মানুষ তা দিয়ে ভবিষ্যত সময়ে যেতে পারবে ।

বিদ্র. আমি লেখাটি লিখেছি ডিসকভারী চ্যানেলের ডকুমেন্টারী দেখে ।আশা করি খারাপ লাগবে না ।

টাইম ট্রাভেল বা সময় ভ্রমণ বিজ্ঞান ও দর্শনের একটি ধারণা। আমরা সবাই সর্বক্ষণ সময় ভ্রমণে নিয়োজিত। সময় হলো বিশ্বজগতের পরিবর্তনের একটা রেট বা হার। আমাদের পছন্দ হোক বা না হোক আমরা সর্বক্ষণ পরিবর্তিত হচ্ছি। আমাদের জন্ম হচ্ছে, বয়স বাড়ছে, মৃত্যু হচ্ছে। গ্রহগুলো সূর্যের চতুর্দিকে ঘুরপাক খেয়ে চলেছে। বস্তুর সৃষ্টি ও ধ্বংস হচ্ছে এবং এইভাবে পদার্থের রূপান্তর ঘটে চলেছে।

সময়ের এই যাত্রা বা পথ পরিক্রমকে আমরা সেকেন্ড, মিনিট, ঘণ্টা ও বছরের হিসাবে মাপি। তবে তার মানে এই নয় যে, সময় সর্বদা একই হারে বয়ে চলে। নদী কতটা চওড়া বা সংকীর্ণ তার উপর নির্ভর করে জলরাশি যেমন জোরে বা ধীরে বহে সময়ও তেমনি ভিন্ন ভিন্ন স্থানে ভিন্ন ভিন্ন হারে বয়ে চলে। অন্য কথায় সময় হলো একটা আপেক্ষিক ব্যাপার। তবে সময়ের চলার হারের এই যে তারতম্য এটা হয় কেন? হয় স্থানের সঙ্গে সময়ের সম্পর্ক থাকার জন্য। এ হলো চতুর্থ মাত্রিক সম্পর্ক। সময় স্থানকে বাদ দিয়ে থাকতে পারে না। তেমনি স্থানও সময়কে বাদ দিয়ে থাকতে পারে না। দুটোই এক সত্ত্বা হিসেবে অস্তিত্বমান। মহাবিশ্বের যে কোন ঘটনায় স্থান ও কাল দুটোই যুক্ত থাকতে হয়। মহাবিশ্বে যদি উন্মুক্ত সময় অনুরূপ বক্ররেখা থাকে তাহলে সেই বক্ররেখার সঙ্গে ভ্রমণ করে ফিরে আসা বস্তুকণাগুলো বর্তমানে সমাধানে অসাধ্য বা বাগে আনতে না পারা গণনার কাজ সম্পাদনে সহায়ক হতে পারে। এ ধরনের বক্ররেখার মাধ্যমে যদিও অতীতের কোন কিছুর সঙ্গে মিথষ্ক্রিয়ার কোন সুযোগ থাকে না তথাপি গবেষকরা দেখিয়েছেন যে, সময় ভ্রমণকারী বস্তুকণা যতক্ষণ বর্তমানে রক্ষিত একটি বক্ররেখার সঙ্গে যুক্ত থাকে ততক্ষণ গণনাগত শক্তি বেড়ে যায়। এটাই বর্তমানে সমাধানের অযোগ্য সমস্যাগুলোর সমাধানে গুরুত্বপূর্ণ চাবিকাঠি হয়ে দাঁড়াতে পারে। এনপিজে কোয়ান্টাম ইনফরমেশন ম্যাগাজিনের এক নিবন্ধে গবেষকরা এই মন্তব্য করেছেন।

আন্তর্জাতিক সহযোগিতার ভিত্তিতে পরিচালিত এক গবেষণায় গবেষকরা দেখিয়েছেন যে, সময়-ভ্রমণে না খোলা একটি বার্তা অতিমাত্রায় কার্যোপযোগী হতে পারে। গবেষণাগারে একজন পরীক্ষাকারী যদি সেই বার্তাটি সময় ভ্রমণে পাঠানোর আগে গবেষণাগারের অন্য কোন ব্যবস্থার সঙ্গে যুক্ত করে তাহলেও একথা প্রযোজ্য। এই বিজড়নগত অবস্থা সময়-ভ্রমণকারী বার্তা ও ল্যাবরেটরি ব্যবস্থার মধ্যে একটা অনুবন্ধ রচনা করে। এ হলো এক অদ্ভুত প্রভাব বা প্রতিফল যা একমাত্র কোয়ান্টাম ফিজিক্সের জগতেই সম্ভব।

প্রায় দশ বছর আগে গবেষক ডেভ বেকন দেখিয়েছেন সময়-ভ্রমণকারী কোয়ান্টাম কম্পিউটার বেশ কিছু সমস্যার দ্রুত সমাধান দিতে পারে। এই সমস্যাগুলো এনপি-কমপ্লিট নামে পরিচিত। গণিতবিজ্ঞানীর এই সমস্যাগুলোর সমাধান কঠিন বলে সেগুলোকে এই নামে একত্রীভূত করেছেন। উল্লেখ করা যেতে পারে যে ডেভ বেকন বর্তমানে গুগল-এ কর্মরত।

সমস্যাটি ছিল এই যে নেকনের কোয়ান্টাম কম্পিউটার রুদ্ধ সময়ের অনরূপ বক্ররেখায় ভ্রমণ করছিল। এগুলো হলো স্থান-কাল কাঠামোর এমন পথ যা উল্টো নিজেদের উপর ফাঁস লাগিয়ে ফেলে। সাধারণ আপেক্ষিকতায় স্থান-কালে বিকৃতি ঘটানোর মাধ্যমে এমন পথের অস্তিত্ব রক্ষার সুযোগ থাকে যা ওয়ার্ম হোল বা পোকায় কাঁটা গর্ত নামে পরিচিত।

পদার্থ বিজ্ঞানীদের যুক্তি হলো এ ধরনের সুযোগ সৃষ্টির ব্যাপারটা কোনকিছুর দ্বারা অবশ্যই রুদ্ধ হওয়া উচিত। কেননা তা না হলে কার্যকারণেরবিষয়টি বিপন্ন হয়ে পড়বে। এর একটা ক্লাসিক দৃষ্টান্ত দিয়ে বলা যায় যে, সেক্ষেত্রে যে কেউ অতীতে ফিরে গিয়ে তার দাদাকে হত্যা করে আসতে পারে এবং এইভাবে তার নিজের অস্তিত্বকেই নাকচ বা অকার্যকর করে তুলতে পারে।

আর এতে করে যে কেবল পারিবারিক সম্বন্ধই হুমকির মুখে পড়বে তাই নয়। সময়ের কার্যকারণগত প্রবাহ ভেঙ্গে দিলে কোয়ান্টাম ফিজিক্সের ক্ষেত্রেও তার বিরূপ পরিণতি দেখা দেবে। গত দুই দশকে গবেষকরা দেখিয়েছেন যে কোয়ান্টাম ফিজিক্সের মৌলিক সূত্রগুলো রুদ্ধ সময়ের অনুরূপ বক্ররেখার উপস্থিতিতে ভেঙ্গে যায়। এ ক্ষেত্রে কোয়ান্টাম ধর্মের অন্তর্নিহিত অস্পষ্টতাÑঅনিশ্চয়তা সূত্র এবং নো-ক্লোনিং থিওরামকে বাতিল করে দেয়া যায়। উল্লেখ্য, নো-ক্লোনিং থিওরাম বলে যে কোয়ান্টাম অবস্থাগুলোর প্রতিরূপ সৃষ্টি করা সম্ভব নয়।

অবশ্য নতুন গবেষণায় দেখা গেছে যে, কোয়ান্টাম কম্পিউটার উন্মুক্ত সময়ের অনুরূপ বক্ররেখা ধরে গমন করলেও সমাধানের অসাধ্য সমস্যাগুলোর সমাধান দিতে পারে। এতে কার্যকারণগত কোন সমস্যা সৃষ্টি হয় না। হয় না এই কারণে যে, এগুলো বস্তুর নিজস্ব অতীতে কোনকিছুর সঙ্গে সরাসরি মিথষ্ক্রিয়ার কোন সুযোগ ঘটায় না। সময় ভ্রমণকারী বস্তুকণাগুলো (কিম্বা যেগুলোতে থাকা উপাত্তসমূহ) নিজেদের সঙ্গে কখনই মিথষ্ক্রিয়া করে না। তথাপি যেসব অদ্ভুত কোয়ান্টাম ধর্ম বা বৈশিষ্ট্যগুলো অসম্ভবধরনের গণনার কাজ সম্পন্ন করার সুযোগ দেয় সেগুলো অক্ষুণœই থেকে যায়। গবেষণা কর্মের প্রধান মাইল গু বলেছেন, ‘এর মাধ্যমে আমরা কোন ব্যক্তির অতীতে ফিরে গিয়ে দাদাকে হত্যা করে আসার মতো চিরায়ত ধাচের আপাতবিরোধী সত্যকে পরিহার করছি এবং তারপরও এসব অদ্ভুত ফল লাভ করছি।

গবেষক দলের আরেক সদস্য জেইন টম্পসন বলেন, ‘এই ধারণাটা যখন আমরা উপস্থাপন করেছিলাম লোকে বলেছিল, এতে কোনই কাজ হবে না। কিন্তু কাজ হয়েছে। টাইমলুপে পাঠানো কোয়ান্টাম বস্তুকণা অতীতের কোনকিছুর সঙ্গে কখনই কোন মিথষ্ক্রিয়ায় না আসা সত্ত্বেও গণনার ক্ষেত্রে অমিত ক্ষমতা অর্জন করতে পারে।টম্পসন বলেন, ‘এমনটা হতে পারার কারণ হলো এই যে, এর সঙ্গে যুক্ত অনুবন্ধগুলোতে কিছু তথ্য সংরক্ষিত হয়ে পড়ে এবং সেটাকেই আমরা কাজে লাগাচ্ছি।

তবে একটা সতর্কবার্তাও আছে। রুদ্ধ টাইম লাইন কার্ভগুলো ভৌত মহাবিশ্বে যতটা উপলব্ধিযোগ্য বা আয়ত্তসাধ্য উন্মুক্ত টাইমলাইন কার্ভগুলো তার চেয়েও বেশি আয়ত্তযোগ্য হতে পারে এমনটা যে সমস্ত পদার্থ বিজ্ঞানীই মনে করেন তা নয়। রুদ্ধ টাইমলাইন কার্ভের বিরুদ্ধে একটা যুক্তি হলো এই যে, ভবিষ্যত থেকে কেউ কখনো আমাদের কাছে আসেননি। সেই যুক্তিটা অন্ততপক্ষে উন্মুক্ত টাইমলাইন কার্ভের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য নয়। কারণ ভবিষ্যতের যে কোন বার্তাই আটকা পড়ে বা রুদ্ধ হয়ে থাকবে।


ভিডিও কলে ডাক্তারের পরামর্শ পেতে Play Store থেকে ডাউনলোড করুন Bissoy অ্যাপ