বিদায়ী হজ্জের সময় মাহবূবে খোদা (সাঃ) উম্মতকে সর্বশেষ ভাষণ ও উপদেশ দান করতঃ ইরশাদ করেন যে,’’ ﻭﺇﺿﺮﺑﻮﻫﻦ ﺿﺮﺑﺎ ﻏﻴﺮ ﻣﺒﺮﺝ ‘‘ অর্থঃ- তোমরা তাদেরকে অপ্রকাশ্যযোগ্য প্রহার কর। অর্থাৎ প্রথম পর্যায়ে স্ত্রীকে প্রহার করার ধাপও তো আসাচাই। কিন্তু সেই পন্থাকে কেবলমাত্র ঐ সময় ব্যবহার করা হবে, যখন মারধর করা ছাড়া অন্যকোন উপায় অবশিষ্ট থাকবে না। কেননা মারপিট করাই হলো সর্বশেষ কাজ। তবে ঐ মারধরের ক্ষেত্রে এ শর্তারোপ করা হয়েছে যে, সেই মারপিট যেন কষ্টদায়ক না হয়; অর্থ্যাৎ মারধর করার দ্বারা স্ত্রীকে কষ্ট দেওয়া উদ্দেশ্য নয়। বরং তাকে আদব- কায়দা শিখানো এবং তাকে সংশোধন করা উদ্দেশ্য। কারণ কষ্টদায়ক মারপিট করা অবৈধ এবং যে মারেরদ্বারা শরীরে দাগ ও চিহ্ন পড়ে যায়; তেমন মারধর করাও জায়েজ নেই। হাদিসের বর্ণনা অনুয়ায়ী নারীগণ বক্র স্বভাবের হয়ে থাকে। তাদেরকে একেবারে ছেড়ে দিলে বক্রই থেকে যাবে, আবার অতিরিক্ত কড়া শাসন করতে চাইলে ভেঙে যাবে। তাই নারীদের একটু-আধটু শাসন করতে হবে এবং শাসনের ক্ষেত্রে মধ্যপন্থা অবলম্বন করতে হবে। হজরত আবু হুরায়রা রা. থেকে বর্ণিত, রাসুল সা. বলেন ‘তোমরা নারীদের সঙ্গে সদ্ব্যহার করবে। কেননা তাদেরকে সৃষ্টি করা হয়েছে পাঁজরের হাড় থেকে এবং সবচেয়ে বাঁকা হচ্ছে পাঁজরের ওপরের হাড়। যদি তুমি তা সোজা করতে যাও, তাহলে তা ভেঙে যাবে। আর যদি যেভাবে আছে সেভাবে রেখে দাও তাহলে বাঁকাই থাকবে। অতএব, তোমাদেরকে উপদেশ দেয়া হলো নারীদের সঙ্গে সদ্ব্যহার করার।’ [বুখারি : ৫১৮৫, ৫১৮৬, ৩৩৩১, সহিহ মুসলিম : ৩৫৩৯]। হাদিসের মর্মার্থ হলো তাদেরকে সংশোধনের প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখতে হবে। তবে পূর্ণ সংশোধন হবে এমন আশা করাটা হবে বোকামি। এক্ষেত্রে ইসলামের বক্তব্য হলো স্ত্রী অবাধ্য হলে প্রথমে তাকে বুঝিয়ে শুনিয়ে এবং উপদেশ দিয়ে সংশোধন করার চেষ্টা করতে হবে। এতে কাজ না হলে বিছানা ত্যাগ করতে হবে। (বিছানা ত্যাগ মানে স্ত্রীর পাশে না শুয়ে পাশের কোনো খাট, ফ্রোর কিংবা একই বিছানায় ভিন্ন দিকে ফিরে ঘুমানো)। এতেও সমাধান না হলে প্রয়োজনে কিছুটা মারধর করা যাবে। পবিত্র কোরআনে আল্লাহ তায়ালা বলেন, ‘পুরুষেরা নারীদের উপর কর্তৃত্বশীল এজন্য যে, তারা তাদের অর্থ ব্যয় করে। আর যাদের মধ্যে অবাধ্যতার আশঙ্কা কর, তাদের সদুপদেশ দাও, তাদের শয্যা ত্যাগ কর এবং প্রহার কর। যদি তাতে তারা বাধ্য হয়ে যায়, তবে তাদের জন্য অন্য কোনো পথ অনুসন্ধান করো না। নিশ্চয়ই আল্লাহ সবার উপর শ্রেষ্ঠ।’ [সুরা নিসা : আয়াত- ৩৪]। এ তিনটি বিষয়ের মধ্যে ধারাবাহিকতা বজায় রাখা উচিত। প্রথমে বোঝাতে হবে কিংবা উপদেশ দিতে হবে। বোঝানো এবং উপদেশ দেয়া ছাড়া বিছানা ত্যাগ করা যাবে না। আবার বিছানা ত্যাগ ছাড়া মারধর করাও যাবে না।

ভিডিও কলে ডাক্তারের পরামর্শ পেতে Play Store থেকে ডাউনলোড করুন Bissoy অ্যাপ