ডিভাইস রুট করার কারণ একেক জনের একেক রকম হয়ে থাকে। কেউ ডিভাইসের পারফরম্যান্স বাড়ানোর জন্য বা ইন্টারনাল মেমোরি ফাঁকা করার জন্য রুট করে থাকেন, কেউ ওভারক্লকিং করার মাধ্যমে ডিভাইসের গতি বাড়ানোর জন্য রুট করেন, কেউ স্বাধীনভাবে কাজ করা ডেভেলপারদের তৈরি বিভিন্ন কাস্টম রম ব্যবহার করার জন্য, কেউ বা আবার রুট করার জন্য রুট করে থাকেন। আমি নিজেও প্রথম রুট করেছিলাম কোনো কারণ ছাড়াই। লিনাক্স ব্যবহার করি বলে বিভিন্ন সময় রুট হিসেবে অনেক কাজ করেছি কম্পিউটারে। কিন্তু অ্যান্ড্রয়েড ফোনে রুট পারমিশন না থাকায় একটু কেমন যেন লাগছিল। তাই রুট হওয়ার জন্য রুট করেছিলাম।
পরে অবশ্য পারফরম্যান্স বাড়ানোর জন্য বিভিন্ন সিস্টেম অ্যাপ্লিকেশন ব্যবহার করতে শুরু করেছি যেগুলো রুট করা ডিভাইস ছাড়া কাজ করে না। তবে সেসব নিয়ে পড়ে কথা হবে। চলুন আগে এক নজর দেখে নিই রুট করার সুবিধা ও অসুবিধা।
আপনার মোবাইলের সার্কিট শর্ট হয়ে গেলে চার্জ বেশি যাবে । আবারও চার্জ কতক্ষণ থাকবে তা নির্ভর করে ব্যাটারির ক্ষমতার উপর এবং ব্যবহারের উপর । এছাড়া ব্যাটারি পুরনো হলে ক্ষমতা কমে যাবে । আপনার ক্ষেত্রে কোনদি ঘটেছে সেটা লক্ষ্য করে সার্ভিস সেন্টারে যান বা ব্যাটারি বদলান । . রুট বিষয়ে আপনার উত্তর . রুট প্রথমে ব্যবহ্রত হয় লিনাক্সে। আপনারা হয়ত জানেন যে এন্ড্রয়েড হল একটি মুক্ত অপারেটিং সিস্টেম এবং এটি লিনাক্সের উপর বেইস করে চলে । অর্থাৎ লিনাক্স অপারেটিং সিস্টেমকে মোবাইলে/স্মার্টফোনে চলার উপযোগী করে বানানো হয় যাকে আমরা এন্ড্রয়েড বলে চিনি এবং এই কাজটি করে গুগল (তাই গুগলের আন্ডারে এন্ড্রয়েড ভার্সনের আপডেট বের হয়, যেহেতু তারাই এটা ডেভেলপ করে)। এখন লিনাক্সে রুট মানে হল এডমিনিস্ট্রেটর টাইপ কিছু, এই এক্সেস থাকলে আপনি সিস্টেমের যে কোন পরিবর্তন/পরিবর্ধন/ পরিমার্জন করার পারমিশন পাবেন। যেহেতু এন্ড্রয়েড লিনাক্সের আন্ডাবাচ্চা, সেহেতু কাহিনী একই, আর আপনি যদি রুট এক্সেস পান তাইলে আপনি সিস্টেমের(মানে অপারেটিং সিস্টেমের কোর ফাইলগুলা সহ)যে কোন পরিবর্তন করতে পারবেন। তারমানে আমরা শিখলাম যে রুট মানে অফিসের বস টাইপ কিছু যার পাওয়ার সবার চেয়ে বেশি এবং এই পাওয়ার দিয়ে আমরা নিজের মত করে ফোনকে চালাবো, ফোন যেমন বলে আমরা তেমন চলবো না! Root করা বা Rooting মানে কি? আগে বললাম সিস্টেম ফাইল এক্সেস করার পারমিশন পাওয়া, এখন প্রত্যেক ম্যানুফ্যাচারার সিস্টেম পাথ গুলো Read-Only করে দেয় যাতে আপনি ঢুকতে না পারেন (এটা একচুয়ালি সিকিউরিটির জন্য করা হয়, আপনি ভুলভাল গুতাগুতি করে সিস্টেমের কোন ফাইল ডিলিট করে দিলে মোবাইল এর পরের বার অন ই হবে না)। আর রুটিং মানে এই সিস্টেম পাথের এক্সেস ফিরে পাওয়া। মানে Read-Write মুড করতে দেয়া। অনেকটা এইভাবে বললে মনে থাকবে- -“বৎস, তুমি কি স্বজ্ঞানে সিস্টেম এক্সেস পেতে চাও? পরে প্যাচালে পরলে আমার দোষ নাই!” -“জ্বি , কবুল কবুল কবুল।” রুট করে লাভ কি? এমনেই তো ভালো আছি ! রুট ছাড়া আপনি ভালো থাকলে কোন সমস্যা নাই। সমস্যা হল আমরা সন্তুষ্ট না, আজিব, আমার মোবাইল আমি যেমন ইচ্ছা তেমন করুম! “Access Denied” বলার তুমি কে হে? রুট ফিচারিং অনেক এপ্লিকেশন আছে যেগুলো অনেক উপকারী, আবার সেগুলো রুট ছাড়া চলে না! যেমনঃ এন্ড্রয়েডে ইন্টারনেট ইউজ এক বিরাট সমস্যা, রাতে অন রেখে সকালে উঠলে ৫০ এমবি গায়েব, নিজে নিজে সব আপডেট হয়ে যায়! তো DroidWall এমন একটি এপ যা দিয়ে আপনি অন্য এপ গুলোর নেট ইউজ রেস্ট্রিক্টেড করে দিতে পারবেন, আপনি যদি শুধু অপেরা মিনি,ইউসি ব্রাউজার চালান তাইলে শুধু এগুলোতে টিক মার্ক দিবেন, বাকি যত এপ আছে কেউ আর নেট এর ‘ন’ ও ছুঁইয়ে দেখতে পারবে না! এবং অনেক হাজার হাজার এপ আছে যেগুলো ব্যবহার না করলে আপনার জীবন ষোল আনায় মিছে। আপনি চাচ্ছেন মোবাইলের ‘লুক’টাই পাল্টে ফেলতে, স্ট্যাটাস বার, নেভিগেশন বার, সিস্টেম উইজার ইন্টারফেস সহ সব! আগে রুট করে আসেন। মাত্র গেল এপ্লিকেশনের কথা, মনে করেন আপনার মোবাইলের ম্যানুফ্যাচারার (say HTC) আপনার ফোনে 2.3.6 এর বেশি এন্ড্রয়েভ ভার্সনের আপডেট দিচ্ছে না। এখন HTC কেন দিচ্ছে না সেটা নিয়ে বালিশ ভিজাবেন নাকি নিজে কোন পথ খুঁজবেন? জ্বি, এন্ড্রয়েড ভার্সন আপডেট করা যায় কাস্টম রম(এইটা কি পরে বলতেসি) ইন্সটল করে, যার জন্য প্রথম প্রয়োজন Root! আশা করি এবার ব্যাপারটা বুঝা গেসে।কিভাবে, সেটা আস্তে আস্তে পড়লে ক্লিয়ার হয়ে যাবে।