শেয়ার করুন বন্ধুর সাথে

পৃথিবী সূর্যকে কেন্দ্র করে ঘোরে। একবার সূর্যকে পূর্ণঅতিক্রম করতে পৃথিবীর সময় লাগে ৩৬৫ দিন ৫ ঘণ্টা ৪৮মিনিট ৪৭ সেকেন্ড। পৃথিবীর এই গতিকে বার্ষিকগতি বলে। পৃথিবীর এই বার্ষিক গতির কারণে ঋতু পরিবর্তন হয়।তোমরা হয়তো জানো যে, পৃথিবীকে ঠিক মাঝখানথেকে দু’ভাগে ভাগ করা হয়েছে একটি রেখার মাধ্যমে,যার নাম বিষুব রেখা। এই বিষুব রেখার একপাশেরঅংশকে বলা হয় দক্ষিণ গোলার্ধ, অন্যপাশকে বলা হয়উত্তর গোলার্ধ।পৃথিবী যখন সূর্যকে প্রদক্ষিণ করে, তখন সূর্যেরদিকে খানিকটা হেলে থাকে। পৃথিবী যেহেতু তার নিজঅক্ষেও ঘোরে, তাই বিভিন্ন সময়ে পৃথিবীর বিভিন্নঅংশ সূর্যের দিকে হেলে থাকে। এভাবে কখনো দক্ষিণগোলার্ধ সূর্যের কাছে চলে যায়, কখনো যায় উত্তরগোলার্ধ। যখন যে অংশ সূর্যের দিকে হেলে পড়ে তখনসে অংশ খাড়াভাবে বেশিক্ষণ ধরে সূর্যেরআলো এবং তাপ পায়। আর তখন সেই অংশে বেশি গরমপড়ে, অর্থাৎ গ্রীষ্মকাল থাকে। একটা অংশ সূর্যের কাছে থাকা মানে তারউল্টো দিকের অংশটা থাকবে সূর্য থেকে দূরে। আরদূরে থাকলে কী হবে? সেই অংশটা কম তাপএবং আলো পাবে। তখন সেই অংশে থাকবে শীতকাল। পৃথিবীর ঘূর্ণনের কারণে সূর্য পৃথিবীর যে গোলার্ধেরনিকট অবস্থান করে সেই গোলার্ধে দিন বড়থাকে এবং রাত ছোট হয়। তাহলে বুঝা যাচ্ছে যে, বিপরিত গোলার্ধে রাত বড় ও দিন ছোট থাকে। পৃথিবী দিনের বেলায় তাপ গ্রহণ করে বলে ভূপৃষ্ঠ উত্তপ্তহয় ও রাতের বেলায় বিকিরণ করে বলে শীতল থাকে। যখন একটি স্থানে বড় দিনে যে তাপ গ্রহণ করে তা ছোটরাতে তাপ পুরোটা বিকিরণ করতে পারে না। তাই ,স্বাভাবিকভাবেই আবহাওয়া উষ্ণ থাকে ও গ্রীষ্মকালীনআবহাওয়া দেখা যায়। বিপরীত গোলার্ধে রাত বড় ওদিন ছোট হওয়ার কারণে দিনের বেলায় যে তাপ গ্রহণকরে তা রাতের বেলায় সব তাপ বিকিরণকরে ঠাণ্ডা অনুভূত হয় ও শীতকালীনআবহাওয়া দেখা যায়। পৃথিবী গোল হওয়ার কারণে কোথাওসূর্যরশ্মি লম্বভাবে পড়ে আবার কোথাওতির্যকভাবে পড়ে। এছাড়া , পৃথিবীর বার্ষিক গতিরকারণে সূর্যকিরণ বিভিন্ন স্থানে কম – বেশি পড়ারকারণে বায়ুমণ্ডলের তাপমাত্রার পার্থক্য ঘটে।ফলে জলবায়ুর বিভিন্নতা হয় ও ঋতু পরিবর্তিত হয় ।তাপমাত্রা পার্থক্য আরেকটি কারণে ঘটে পৃথিবীরআবর্তন পথ উপবৃত্তাকার বলে। এর ফলে বছরের বিভিন্নসময় সূর্য থেকে পৃথিবীর দূরত্ব কম – বেশি হয় । বাংলাদেশে যখন গ্রীষ্মকাল থাকে, অস্ট্রেলিয়ায় তখনশীতকাল থাকে। আবার ওদের যখন গ্রীষ্ম থাকে, তখনআমাদের থাকে শীত। কারণঅস্ট্রেলিয়া দক্ষিণ গোলার্ধের দেশ এবং বাংলাদেশউত্তর গোলার্ধের দেশ। আর উত্তর গোলার্ধে যখন শীতথাকবে, দক্ষিণ গোলার্ধে থাকবে গরম। একইভাবে উত্তরগোলার্ধে গরম থাকলে দক্ষিণে থাকবে শীত। যদি পৃথিবী সূর্যের চারপাশে না ঘুরতো, তবে তো সবসময় একটা দেশে একটাই ঋতু থাকতো।

ভিডিও কলে ডাক্তারের পরামর্শ পেতে Play Store থেকে ডাউনলোড করুন Bissoy অ্যাপ