বয়স হলে চুল পাকবে এটাই স্বাভাবিক। কিন্তু অসময়ে চুল পাকলে সেটা মোটেও স্বাভাবিক নয়। বর্তমানে অনেকেরই কম বয়সে চুল পাকছে। তবে কিছু উপায় আছে, যা করলে আপনি সহজেই এ চুল পাকার সমস্যা থেকে রক্ষা পাবেন। আসুন জেনে নেই অকালে চুল পাকা রোধের ৫ উপায় সম্পর্কে। ১) হরতকি গুঁড়া ১ চা চামচ, মেহেদি পাতা বাটা ২ চা চামচ এবং আধাকাপ নারকেল একসঙ্গে মেশাতে হবে। এরপর ভালো করে ফুটিয়ে নিয়ে মিশ্রণটি ঠাণ্ডা করে নিন। পুরোপুরি ঠাণ্ডা হলে চুলে লাগিয়ে ২ ঘণ্টা পর শ্যাম্পু করে ফেলুন। এতে অসময়ে চুল পাকা অনেকটাই কমে যাবে। ২) ১০ গ্রাম মেহেদিপাতা, ১০ গ্রাম কেশুতপাতা, হরতকির ছাল, ২টি আমলকি, জবাফুলের মাঝের অংশ ৭-৮টি ও বিটের রস ভালো করে ফুটিয়ে ছেঁকে নিয়ে হেয়ার টনিক তৈরি করে নিন। এই টনিক নিয়মিত পুরো চুলে লাগান। আর তা ৪০ মিনিট রেখে শ্যাম্পু করে ধুয়ে ফেলুন। এটি অসময়ে চুল পাকা রোধ করতে সাহায্য করবে। ৩) সপ্তাহে ২ থেকে ৩ দিন আমলকির রস, বাদামের তেল ও লেবুর রস একসাথে মিশিয়ে ব্যবহার করুন। চুল পাকা অনেকটাই কমে যাবে। ৪) চুল একটি দুটি করে সাদা হতে থাকলে মেহেদি, ডিমের কুসুম ও টকদই একসাথে মিশিয়ে প্যাক তৈরি করে চুলে লাগান। সপ্তাহে এক বার এই প্যাক লাগান। এই প্যাক চুল পাকা রোধে কার্যকরী ভূমিকা রাখে। ৫) ১ কাপ নারকেল তেল, ১ টেবিল চামচ মেথি গুঁড়া, ২ টেবিল চামচ আমলকি গুঁড়া একসাথে মিশিয়ে অল্প আঁচে জ্বাল দিন। তেল বাদামি রঙ হয়ে গেলে নামিয়ে ফেলতে হবে। ঠান্ডা হয়ে গেলে ছেঁকে সপ্তাহে ২ দিন চুলের গোড়াসহ পুরো চুলে লাগিয়ে ম্যাসাজ করুন। ২ ঘণ্টা পর শ্যাম্পু করে ফেলুন। এতে দ্রুতই দূর হবে চুল পাকার সমস্যা। এছাড়া, চুলের ধরণ অনুযায়ী ভালো ব্র্যান্ডের শ্যাম্পু ও কন্ডিশনার ব্যবহার করুন। নিয়মিত ফলমূল, রঙিন শাকসবজি, পুষ্টিকর খাবার খান ও প্রচুর পানি পান করুন। চুল সাদা হওয়া প্রতিরোধের সঙ্গে চুল হবে সুন্দর ও ঝলমলে। হরমোন সমস্যার জন্য আপনি কোনো এন্ডোক্রাইনোলজিস্ট এর সাথে যোগাযোগ করুন।
আমাদের ত্বকে মেলানোসাইট নামে এক ধরনের কোষ থাকে, যা মেলানিন উৎপাদন করে। যাদের কম মেলানিন উৎপাদন হয় তাদের গায়ের রঙ সাদা হয় এবং বেশি উৎপাদন হলে গায়ের রঙ কালো হয়। চুলের ক্ষেত্রেও একই কথা বলা যায়। যদি কোনো কারণে চুলের গোড়ার মেলানোসাইট কোষ নিষ্ক্রিয় হয়ে মেলানিনের উৎপাদন বন্ধ হয়ে যায়- ফল স্বরূপ চুলের রঙ সাদা হয় যাকে আমরা চুল পাকা বলি। এটা যে কোনো বয়সেই ঘটতে পারে। চুল পাকলে করণীয় কি : মেয়ে মহলে প্রচলিত,মাথায় নিয়মিত তেল না মাখলে চুল পেকে যায়। কিন্তু ধারণাটি সম্পূর্ণ ভুল। চুল পাকার সঙ্গে চুলে তেল দেওয়া-না দেওয়ার কোনো সম্পর্ক নেই। সত্যিকার অর্থে পাকা চুল কালো করার স্থায়ী কোনো উপায় এখনো আবিস্কার হয়নি। একমাত্র কলপ ব্যবহার করে চুল সাময়িক কালো রঙ্গ করা যায়। তবে রোগের কারনে চুল সাদা হলে যথাযথ চিকিতসার মাধ্যমে সাদা চুল কাল অবস্থায় ফিরে আসতে দেখা গেছে। সাবধানঃ বিভিন্ন ঔষধ কোম্পানি চুল কালো করে দেওয়ার গ্যারান্টি দিয়ে তেল বা ওষুধের বিজ্ঞাপন প্রচার করে থাকে। কিন্তু প্রকৃতপক্ষে এগুলোর কোনো বৈজ্ঞানিক ভিত্তি নেই। এইসব তেল বা ঔষধ চুলে মাখলে চুলে সাময়িক একটা কালো প্রলেপ পড়ে মাত্র কিন্তু কিছু দিন পর আবার চুলের রঙ্গ ফিকে হয়ে আসে। গবেষণায় দেখা গেছে এই ধরনের তেল বা ঔষধ ব্যবহারের দরুন মাথার ত্বকে অ্যালার্জিজনিত সমস্যা দেখা দেয়। তাই চুলে পাক ধরলে প্রথমে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক দেখিয়ে চুল পাকার প্রকৃত কারণ নির্ণয় করা উচিত।