avir

Call

লাইলাতুল ক্বদর সম্পর্কে মহান আল্লাহ বলেন, ‘নিশ্চয় আমি একে (পবিত্র কুরআনকে) লাইলাতুল ক্বদরে নাযিল করেছি। (লওহে মাহফুয হতে দুনিয়ার আকাশে নাযিল করা হয়েছে) আপনি জানেন কি এ ক্বদরের রাত সম্পর্কে? (কত মাহাত্ম্য ও ফযিলতপূর্ণ এ রাত?) ক্বদরের রাত হাজার মাস হতেও উত্তম। (হাজার মাসে ইবাদত করলে যে সওয়াব পাওয়া যাবে ক্বদরের রাতে ইবাদত করলে তার চেয়েও বেশী সওয়াব পাওয়া যাবে) এ রাতে ফিরিশতাগণ অবতীর্ণ হন এবং রুহুল কুদুস তথা জীব্রাইল (আ)ও অবতরণ করেন তাঁদের রবের নির্দেশে প্রত্যেক কল্যাণকর বিষয়সহ (পৃথিবীর দিকে অবতরণ করেন)। এ রাত নিরাপত্তার যা ফজর পর্যন্ত অব্যাহত থাকে।’ (সূরাহ ক্বদর) আল্লাহ তা‘আলা আরও বলেন, ‘হা- মীম, শপথ এ সুস্পষ্ট কিতাবের, একে আমি নাযিল করেছি এক বরকতময় রাতে (লাইলাতুল ক্বদরে)। নিশ্চয় আমি সতর্ককারী। এ রাতে প্রত্যেক প্রজ্ঞাপূর্ণ বিষয় স্থিরীকৃত হয়। আমার পক্ষ হতে আদেশক্রমে, আমিই প্রেরণকারী। আপনার প্রভুর পক্ষ হতে রহমতস্বরূপ। তিনিই সর্বশ্রোতা, সর্বজ্ঞ।’ (দুখান-১-৬) রাসূল (সা) বলেন, ‘যে ঈমানের সাথে ও সওয়াবের আশায় ক্বদরের রাতে কিয়াম করে (নামাযে দাঁড়ায়) তার অতিতের সব গুনাহ মাফ করে দেয়া হয়।’ (বুখারী) রমাযানের শেষ দশকের বেজোড় রাতগুলোতে (২১, ২৩, ২৫, ২৭ ও ২৯ তারিখের রাতে) লাইলাতুল ক্বদর তালাশ করা উচিত। শুধু ২৭ শে রমাযানের রাতকে লাইলাতুল ক্বদর ভাবা উচিত নয়। অথচ অনেকে ২৭ শে রমাযানের রাতকে লাইলাতুল ক্বদর বিশ্বাস করেন, জাঁকজমকের সাথে এ রাত উদযাপন করেন। এগুলো সঠিক নয়। ২৭ শে রমাযানের রাতকে লাইলাতুল ক্বদর ধরে নেয়ার ব্যাপারে বিশুদ্ধ কোন প্রমাণ নেই। রাসূল (সা) বলেছেন, ‘তোমরা লাইলাতুল ক্বদরকে রমাযানের শেষ দশকের বিজোড় রাতগুলোতে তালাশ (সন্ধান) কর।’ (বুখারী) তিনি (সা) আরও বলেন, ‘তোমরা লাইলাতুল ক্বদরকে সন্ধান করবে রমাযানের ৯ রাত বাকী থাকতে বা ৭ রাত বাকী থাকতে বা ৫ রাত বাকী থাকতে বা ৩ রাত বাকী থাকতে অথবা শেষ রাত্রিতে (২১, ২৩, ২৫, ২৭ ও ২৯ শে রাত্রিতে) (২৯ তারিখের রাত বা ৩০ তারিখের রাত)।’ (বুখারী, তিরমিযী) লাইলাতুল ক্বদরের রাতগুলোতে নিচের দো‘আ বেশী পাঠ করা দরকার। ‘আল্লা-হুম্মা ইন্নাকা আফুব্বুন তুহিব্বুল আফওয়াফা ফা‘ফু ‘আন্নী’ অর্থ: হে আল্লাহ তুমি ক্ষমাশীল, ক্ষমাকে তুমি পছন্দ কর। অতএব আমাকে ক্ষমা কর। (বুখারী) লাইলাতুল ক্বদরের রাতগুলোতে আল্লাহর ইবাদতে মশগুল থাকতে হবে। সুতরাং এ রাতগুলোতে নামায, কুরআন তিলাওয়াত এবং আল্লাহর যিক্র করতে হবে। এ রাতের নির্দিষ্ট কোন ইবাদত নেই। আবার নফল নামাযের নির্দিষ্ট কোন সংখ্যাও নেই। আল্লামা ইবন কাছীর (র) বলেন, এটা (লাইলাতুল ক্বদর) গোপন রাখার মধ্যে হিকমত হচ্ছে, তার অনুসন্ধানকারী ও আগ্রহীগণ সম্পূর্ণ রমাযান মাসে ইবাদত করার প্রতি গুরুত্বারোপ করবেন। আল্লামা যামাখশারী বলেন, লাইলাতুল ক্বদরের নির্দিষ্ট তারিখ গোপন রাখার মধ্যে হিকমত ও কল্যাণ রয়েছে যে, ঐ রাতের অনুসন্ধানকারী বছরের অধিকাংশ রাতেই তা অনুসন্ধান করবে, যাতে তা পেলে তার ইবাদত ও বন্দেগীর প্রতিফল ও সওয়াব অনেক বৃদ্ধি পেতে পারে। লাইলাতুল ক্বদর নির্দিষ্ট হলে লোকেরা কেবল এ রাতে ইবাদত করে অনেক ফযিলত ও মর্যাদা অর্জন করে ফেলত এবং তার উপর ভরসা করে অন্যান্য রাতে ইবাদতকরণে অলসতা করে বসত। হয়ত বা এজন্যও এটা গোপন করা হয়েছে।

ভিডিও কলে ডাক্তারের পরামর্শ পেতে Play Store থেকে ডাউনলোড করুন Bissoy অ্যাপ