তারাহবির নামাজ ২০ রাকাত । কিন্তু অনেকে ৮ রাকাত পড়ে । আর তারাহবির নামাজ ৮ রাকাত পড়ার ব্যাপারে ইসলাম কি বলে ।
শেয়ার করুন বন্ধুর সাথে

কথিত আহলে হাদীসের ভাইয়েরা কোথায়? আওয়াজ দেন। আর সহীহ হাদীসের দলিল দ্বারা তারাবিহের ২০ রাকাআত নামাজ বুঝিয়া নেন। না বুঝে তর্ক করবেন না, মূর্খরা তর্ক করে। এর আগে আপনাদের কাছে আমি একটা প্রশ্ন করছিঃ তারাবির নামাজ ফরজ,ওয়াজিব নাকি সুন্নত? দলীল দিন। রাসুলুল্লাহ (সা.) সাহাবায়ে কেরাম, তাবেয়ীন, তাবে তাবেয়ীন ও মুসলিম উম্মাহর অবিচ্ছিন্ন কর্মধারা হল তারাবির ২০ রাকাত নামাজ। তারাবি সম্পর্কে অসংখ্য হাদিস সমূহ থেকে কিছু সহিহ হাদিস দলিল এখানে উপস্থাপন করা হল ১ নং দলিল : ইমাম বুখারি ও ইমাম মুসলিম (রহ.) এর উস্তাদ ইমাম আবু বকর ইবনে শায়বা (রহ.) বর্ণনা করেন, হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) রমজান মাসে ২০ রাকাত তারাবি এবং বিতর পড়তেন। (মুসান্নাফে ইবনে আবী শায়বা ২/ ৩৯৪, হাদিস নং ৭৬৯০; সুনানে কুবরা ২/৪৯৮; মুজামে কাবির ১১/৩৯৬; আল- মুনতাখাব হাদিস নং ৬৫৩; মুজামে আওসাত ১/৪৪৪, হাদিস নং ৮০৭।) ২ নং দলিল : রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘তোমরা আমার সুন্নতকে এবং সৎপথ প্রাপ্ত খুলাফায়ে রাশেদীনের সুন্নতকে মজবুত ভাবে আঁকড়ে ধর। (সুনানে আবু দাউদ, হাদিস নং ৪৬০৭; সুনানে তিরমিযি, হাদিস নং ২৬৭৬; মুসনাদে আহমাদ, হাদিস নং ১৬৬৯২; সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদিস নং ৪২; সহিহ ইবনে হিব্বান, হাদিস নং ৫; মেশকাত ১/২৯) সহিহ সনদে প্রমাণিত যে, খুলাফায়ে রাশেদীন বিশ রাকাত তারাবি পড়তেন। এ প্রসঙ্গে ইমাম ইবনে তাইমিয়া (রাহ.) বলেন- বিশ রাকাত তারাবি খুলাফায়ে রাশেদীনের সুন্নতের দ্বারা প্রমাণিত। (মাজামুউল ফাতাওয়া ২৩/১১৩) ৩ নং দলিল : রাসুলুল্লাহ (সা.) সাহাবিদের নিয়ে মাত্র তিন দিন জামাতের সাথে তারাবি আদায় করার পর ফরজ হয়ে যাওয়ার আশঙ্কায় জামাতের সাথে তারাবি পড়া ছেড়ে দিলেন। অতঃপর রাসুলুল্লাহ (সা.) এর বাকী জীবনে, আবু বকর (রা.) এর খিলাফতকালে এবং উমর (রা.) এর খিলাফতের প্রথম দিকে এ অবস্থাই বিদ্যমান ছিল। (সহিহ বুখারি ১/২৬৯, সহিহ মুসলিম ১/২৫৯; সুনানে আবু দাউদ ১/১৯৫) রমজান মাসের কোন এক রাতে (১৪ হিজরীতে) হযরত উমর (রা.) মসজিদে নববিতে গেলেন এবং দেখতে পেলেন যে, মসজিদের বিভিন্নস্থানে ছোট ছোট জামাত হচ্ছে। তিনি ভাবলেন সকল নামাজিকে এক ইমামের পিছনে একত্র করে দেওয়া উচিত। তখন তিনি জামাতে তারাবি পড়ার নির্দেশ জারি করেন এবং হযরত উবাই ইবনে কা’ব (রা.) কে ইমাম বানিয়ে দেন। আর তিনি সাহাবিদেরকে নিয়ে বিশ রাকাত তারাবি পড়াতে লাগলেন। (সহিহ বুখারি হাদিস নং ২০১০; সুনানে আবু দাউদ হাদিস নং ১৩৭১; ইলাউস সুনান ৭/৬১) ৪ নং দলিল : ইমাম বায়হাকী (রহ.) বর্ণনা করেন, ‘বিখ্যাত সাহাবি সায়েব ইবনে ইয়াযিদ (রা.) বলেন, আমরা হযরত উমর রা. এর যুগে বিশ রাকাত তারাবি এবং বিতর পড়তাম।’ হাদিসটি সহিহ। সহিহ হওয়ার ব্যাপারে সুস্পষ্ট বক্তব্য দিয়েছেন বিখ্যাত মুহাদ্দিস, হাফেযুল হাদিস ইমাম নববি, ইমাম ওলিউদ্দীন ইরাকি, ইমাম তাকীউদ্দন সুবকি, ইমাম আইনি, ইমাম সুয়ূতি, ইমাম কাসতালানি, ইমাম যায়লায়ি প্রমুখ হাদিস বিশেষজ্ঞগণ। (উমদাতুল কারি শরহে সহিহ বুখারি ৭/১৭৮; ইরশাদুস সারি শরহে সহিহ বুখারি ৪/৫৭৮; মারেফাতুস সুনান ২/৩০৫; সুনানে কুবরা, বায়হাকী ১/২৬৭; আল- মাজমু শরহুল মুহাযযাব ৩/৫২৭; তুহফাতুল আখইয়ার ১০৮) ৫ নং দলিল : হযরত উসমান (রা.) এর খিলাফতকালে বিশ রাকাত তারাবি পড়া হত। হযরত ইয়াযিদ ইবনে খুসাইফা রহ. থেকে বর্ণিত, প্রখ্যাত সাহাবি সায়েব ইবনে ইয়াযীদ রা. বলেন, হযরত উমর রা. এর যুগে তারা (সাহাবায়ে কেরাম) বিশ রাকাত তারাবি পড়তেন এবং শতাধিক আয়াত বিশিষ্ট সূরা সমূহ পড়তেন। আর হযরত উসমান রা. এর যুগে দীর্ঘ দন্ডায়মান থাকার কারণে তারা লাঠিতে ভর দিতেন। হাদিসটি সহিহ। যেসকল হাদিস বিশেষজ্ঞগণ হাদিসটিকে সহিহ হিসেবে অভিহিত করেছেন তারা হলেন- হাফেজুল হাদিস ইমাম নিমাভি, ইমাম নববি, ইমাম সুবকি, ইমাম যায়লায়ি, প্রমূখ মুহাদ্দিসগণ। (সুনানে কুবরা, বায়হাকি ২/৪৯৬; আসারুস সুনান ২/৪৭৩, হাদিস নং ৭৭৭; আত-তালীকুল হাসান ২/৫৪; নাসবুর রায়াহ ২/১৫১; ইলাউস সুনান ৭/৬৯) উল্লিখিত হাদিসটি স্পষ্ট প্রমাণ বহন করে যে, তৃতীয় খলীফা হযরত উসমান রা. এর খিলাফতকালেও বিশ রাকাত তারাবি পড়া হত। ৬ নং দলিল: হযরত আলী (রা.) তার খেলাফতকালে বিশ রাকাত তারাবি পড়ার আদেশ দিয়েছেন। প্রখ্যাত তাবেয়ি আবু আব্দুর রহমান বলেন, ‘হযরত আলী (রা.) রমজান মাসে বিজ্ঞ কারীদেরকে ডাকলেন এবং তাদের একজনকে আদেশ দিলেন, যেন তিনি লোকদেরকে নিয়ে বিশ রাকাত তারাবি পড়েন।’ হাদিসটি হাসান এবং সহিহ। ৭ নং দলিল : পবিত্র কুরআনে এসেছে, ‘যারা আনসার ও মুহাজির সাহাবিদের অনুসরণ করে আল্লাহতায়ালা তাদের প্রতি সন্তুষ্ট এবং তাদের জন্য প্রস্তুত করে রেখেছেন জান্নাত’। (সুরা তাওবা, আয়াত- ১০০-১০১) আর সহিহ হাদিস দ্বারা প্রমাণিত যে, আনসার ও মুহাজির সাহাবায়ে কেরাম বিশ রাকাত তারাবি পড়তেন। (সুনানে আবু দাউদ ১/২০২; মাজমুউল ফাতাওয়া ইবনে তাইমিয়া ২৩/১১২-১১৩; ইলাউস সুনান ৭/৬১) ৮ নং দলিল : সকল সাহাবি জান্নাতি, আল্লাহ তাদের প্রতি সন্তুষ্ট। তাদের আমল ও আদর্শের অনুসরণে আখেরাতে জাহান্নাম থেকে মুক্তি ও জান্নাত লাভ।’ (সুরা হাদীদ, আয়াত ১০; সূরা আম্বিয়া, আয়াত ১০২; সুনানে তিরমিযি, মেশকাত ২/৫৫৪; তাফসিরে মারেফুল কুরআন ১২৭৫ পৃ:) মসজিদে নববিতে ১৪ হিজরিতে হযরত উমর (রা.) এর নির্দেশে বিখ্যাত সাহাবি উবাই ইবনে কা’ব (রা.) সাহাবিদেরকে নিয়ে জামাতে বিশ রাকাত তারাবি পড়া আরম্ভ করেন। আর এর উপর সাহাবিদের ঐক্যমত প্রতিষ্ঠিত হয়। (আত-তামহীদ ৮/১০৮-১০৯) এ প্রসঙ্গে ইমাম ইবনে তাইমিয়া ও হাফেযুল হাদিস ইবনে আব্দুল বার (রহ.) বলেন, ‘হযরত উবাই ইবনে কা’ব (রা.) রমজান মাসে সাহাবিদেরকে নিয়ে বিশ রাকাত তারাবি এবং তিন রাকাত বিতর পড়তেন। এতে কোন একজন সাহাবিও দ্বিমত পোষণ করেননি। (আল-ইস্তিযকার ৫/১৫৭; মাজমুউল ফাতাওয়া ২৩/১১২-১১৩; সুনানে তিরমিযী ১/১৬৬) ৯ নং দলিল : ‘হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে উমর (রা.) বলেন, ইবনে আবী মুলাইকা আমাদের কে নিয়ে রমজান মাসে বিশ রাকাত তারাবি পড়তেন।’ হাদিসটি সহিহ। (মুসান্নাফে ইবনে আবী শায়বা ২/৩৯৩; আসারুস সুনান ২/২৫৩, হাদিস নং ৭৮৪; আওজাযুল মাসালেক ২/৩০৫) ১০ নং দলিল : হাফেজুল হাদিস ইবনে হাজার আসকালানি (রহ.) সহিহ সনদে বর্ণনা করেন যে, রমজানের প্রথম রাত যখন আগমন করত তখন ইমাম বুখারি র. এর নিকটে তার ছাত্র ও ভক্তবৃন্দরা একত্রিত হত। তিনি তাদেরকে নিয়ে তারাবির নামাজ আদায় করতেন। প্রতি রাকাতে বিশ আয়াত করে তেলাওয়াত করতেন। আর এভাবেই তিনি তারাবিতে কুরআন খতম করতেন। (মুকদ্দমায়ে ফাতহুল বারী শরহে সহিহ বুখারি ৫৬৫ পৃ: ১৫ নং লাইন) তারাবির ক্ষেত্রে রাসুলুল্লাহ (সা.) ও সাহাবায়ে কেরামের আমল ও আদর্শ ৮ রাকাত নয়, বিশ রাকাত। সুতরাং আখেরাতে যারা জাহান্নাম থেকে মুক্তি পেয়ে জান্নাতে প্রবেশ করতে চায় তাদের উচিত হল রাসুলুল্লাহ (সা.) ও সাহাবায়ে কেরামের আমল ও আদর্শের অনুসরণে ও অনুকরণে বিশ রাকাত তারাবি আদায় করা এবং নাজাত প্রাপ্ত দলের অন্তর্ভুক্ত হওয়া ঈমানী দায়িত্ব।

ভিডিও কলে ডাক্তারের পরামর্শ পেতে Play Store থেকে ডাউনলোড করুন Bissoy অ্যাপ
MMRMahfuz

Call

৮ রাকাতকে সুন্নাত মনে করে তারাবি পড়া বিদআত। ২০ রাকাতই সুন্নাত।

ভিডিও কলে ডাক্তারের পরামর্শ পেতে Play Store থেকে ডাউনলোড করুন Bissoy অ্যাপ
MHR

Call

তারাবি নামাজ ৮ রাকাতই সহিহ ! দলিলঃ *** আয়েশা রাঃ হতে বর্নিত রাসুল সাঃ রমযান বা রমযানের বাইরে (8+3=11) রাকাতের বেশী আদায় করেন নি ! মুত্তাফাক আলাইহ মিশকাত হা / 1188 রাত্রির সালাত অনুচ্ছেদ 31 তাওহিদ প্রকাশনি ! *** হযরত ওমর রাঃ হযরত ঊবাই ইবনু কাব ও বনি তামিম দারি রাঃ কে রমযানের রাত্রিতে 8+3=11 রাকাত সালাত আদায় করার নির্দেশ প্রদান করেন ! মিশকাত হা /1302 রমযানের রাত্রি জাগরন অনুচ্ছেদ 37 তাওহিদ প্রকাশনি ! ঊল্লেখ্য যে প্রচলিত 20 রাকাত সম্পর্কিত যে প্রচলিত হাদিস গুলি রয়েছে তা জাল ও যয়িফ !. আলবানি হাসিয়া মিশকাত হা /1302 , 1/408 পৃষ্ঠা ইরওয়া হা /446 ,445 , 2/193 , 191 পৃষ্ঠা তাওহিদ প্রকাশনি !

ভিডিও কলে ডাক্তারের পরামর্শ পেতে Play Store থেকে ডাউনলোড করুন Bissoy অ্যাপ
Call


তারাবী ২০ রাকাত। এটাই সুন্নাহ দ্বারা প্রমাণিত। চার মাযহাবের ইমামগণ এ বিষয়ে একমত। সাহাবা-যুগ থেকে আজ পর্যন্ত হারামাইন শরীফাইনে এভাবেই তারাবী পড়া হয়েছে। বিশ রাকাতের কম কখনো পড়া হয় নি। বর্তমানে যারা তারাবীর নামায আট রাকাত বলে দাবি করে তারা কিছু ‘মুনকার’ রেওয়ায়েত দ্বারা দলিল দিয়ে থাকে, কিংবা তাহাজ্জুদের হাদীসকে তারাবীর ক্ষেত্রে প্রয়োগ করে থাকে।

‘২০ রাকাত তারাবীর কোনও দলিল নেই।’–উক্ত বক্তার এই বক্তব্য নিঃসন্দেহে অজ্ঞতাপ্রসূত কিংবা উদ্দেশ্য-প্রণোদিত। কেননা তারাবী ২০ রাকাত–এমর্মে বহু দলিল রয়েছে। উদাহরণস্বরূপ এখানে আমরা সহিহ সনদে বর্ণিত হয়েছে এমন কিছু দলিল উল্লেখ করছি–

১. ইমাম বুখারীসহ সিহাহ সিত্তার সকল গ্রন্থকারের উস্তাদের ২৬ খন্ডে রচিত কিতাব ‘মুসান্নাফ ইবনে আবি শাইবাহ’( ২/১৬৪)-তে সহিহ সনদে এসেছে, আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস রাযি. হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, ﺃَﻥَّ ﺭَﺳُﻮﻝَ ﺍﻟﻠَّﻪِ ﻛَﺎﻥَ ﻳُﺼَﻠِّﻲ ﻓِﻲ ﺭَﻣَﻀَﺎﻥَ ﻋِﺸْﺮِﻳﻦَ ﺭَﻛْﻌَﺔً ﻭَﺍﻟْﻮِﺗْﺮَ  রাসূল রমযান মাসে বিশ রাকাআত তারাবী ও বিতির আদায় করতেন।

হাদিসটি এই হাদিসগ্রন্থগুলোতেও বর্ণিত হয়েছে– সুনানুল কোবরা লিল-বায়হাকী: ২/৬৯৮, আল-মুনতাখিব: ৬৫৩, আল-মু’জামুল কাবীর: ১১/৩৯৩, আল-মু’জামুল আওসাত: ১/২৪৩।

২. ইয়াজিদ বিন রূমান বলেন, كان الناس يقومون في زمان عمر بن الخطاب في رمضان بثلاث وعشرين ركعة লোকেরা (সাহাবী ও তাবেয়িগণ) ওমর রাযি. এর শাসনামলে বিশ রাকাত তারাবী এবং তিন রাকাত বিতির রমযান মাসে আদায় করতো। (মারিফাতুস সুনান ওয়াল আসার, হাদীস নং-১৪৪৩, মুয়াত্তা মালিক, হাদীস নং-৩৮০, সুনানে বায়হাকী কুবরা, হাদীস নং-৪৩৯৪)

৩. সায়েব বিন ইয়াজিদ বলেন, كـانوا يقـومـون عهد عمر بن الخطاب رضى الله عنه فى شهر رمضان بعشرين ركعة وكانوا يقومون بالمأتين وكانو يتوكؤن على عصيتهم فى عهد عثمان من شدة القيام  ওমর রাযি. এর শাসনামলে লোকেরা (সাহাবী ও তাবেয়িগণ) বিশ রাকাত তারাবী পড়তেন। আর উসমান রাযি. এর শাসনামলে লম্বা কেরাতের কারণে লাঠির উপর ভর দিতেন। (বায়হাকী-৪/২৯৬)

৪. আবু আব্দুর রহমান সুলামী বলেন, عن على قال دعى القراء فى رمضان فامر منهم رجلا يصلى بالناس عشرين ركعة قالوكان على يوتر بهم আলী রাযি. রমযান মাসে কারীদের ডাকতেন। তারপর তাদের মাঝে একজনকে বিশ রাকাত তারাবী পড়াতে হুকুম দিতেন। আর বিতিরের জামাত আলী রাযি. নিজেই পড়াতেন। (বায়হাকী-৪/৪৯৬)

প্রশ্নকারী দীনি ভাই, লক্ষণীয় বিষয় হল, ওমর রাযি. উসমান রাযি. ও আলী রাযি. এর শাসনামলে যে বিশ রাকাত তারাবী হত; সেখানে মুসল্লি কারা ছিলেন? নিশ্চয় মুহাজির, আনসার ও বদরী সাহাবাসহ বিপুল সংখ্যক সাহাবী এবং তাবিঈ তখন মুসল্লী ছিলেন। কেননা, দারুল খিলাফায় মসজিদে নববীতে বিপুল সংখ্যক সাহাবীর উপস্থিতিতে এটি হয়েছে। তখন কেউ কোনো দিন আপত্তি করেছেন বলে একটা দুর্বল বর্ণনাও কেউ দেখাতে পারবে না! উপরন্তু রাসুলুল্লাহ বলেছেন, عليكم بسنتى وسنة الخلفـاءالمهـدين الراشـديـن عضوا عليها بالنواجذ ‘তোমরা আমার সুন্নতকে এবং সৎপথ প্রাপ্ত খুলাফায়ে রাশেদীনের সুন্নতকে মজবুত ভাবে আঁকড়ে ধর। তার উপর তোমরা অটুট থাক। (সুনানে আবু দাউদ ৪৬০৭, সুনানে তিরমিযি ২৬৭৬)

অতএব প্রশ্নকারী ভাই, আপনি তারাবীর নামাজ ২০ রাকাত হওয়ার ব্যাপারে বিভ্রান্ত হবেন না। কারণ মুসলিম উম্মাহ প্রজন্মের পর প্রজন্ম তারাবীর নামাজ ২০ রাকাত পালন করেছেন। ১২৮৪ হিজরীর ইংরেজ আমলের আগে পৃথিবীর কোন মসজিদে রমযানের পুরো মাস মসজিদে আট রাকাত তারাবী জামাতের সাথে পড়ার কোন নজীর নেই। একটি মসজিদের নাম এজাতীয় বক্তারা বা কোন কথিত আহলে হাদীস দেখাতে পারবে না। না মসজিদে নববীতে কোনদিন আট রাকাত তারাবী পড়া হয়েছে। না বাইতুল্লায়। না পৃথিবীর কোন মুসলিম পল্লিতে। মূলতঃ রানী ভিক্টোরিয়ার আমলে সর্বপ্রথম এ বিদআতের সূচনা হয়।

দুই. তারাবী সুন্নতে মুআক্কাদা। কেননা, রাসূলে করীম তারাবী সম্পর্কে বলেছেন, كتب الله عليكم صيامه وسننت لكم فيه قيامه আল্লাহ তাআলা এই মাসের রোযা তোমাদের উপর ফরয করেছেন এবং এই মাসে রাত জেগে নামায পড়াকে সুন্নত করেছি। (নাসাঈ ২২১০)

এজন্য ইমাম নববী বলেন, صلاة التراويح سنة بإجماع العلماء আলেমগণের ইজমা অনুযায়ী তারাবীর সালাত পড়া সুন্নত। (আলমাজমূ ৪/৩১)

মনে রাখবেন, সুন্নতে মুআক্কাদা ওয়াজিবের মতই। অর্থাৎ ওয়াজিবের ব্যাপারে যেমন জবাবদিহী করতে হবে, তেমনি সুন্নতে মুআক্কাদার ক্ষেত্রে জবাবদিহী করতে হবে। তবে ওয়াজিব তরককারীর জন্য সুনিশ্চিত শাস্তি পেতে হবে, আর সুন্নতে মুআক্কাদা ছেড়ে দিলে কখনো মাফ পেয়েও যেতে পারে। তবে শাস্তিও পেতে পারে।

সুতরাং প্রশ্নকারী ভাই, উক্ত বক্তার কথায় বিভ্রান্ত না হয়ে বরং সহিহ হাদিস এবং উলামায়ে সালাফের তরিকা মতে রমযানে তারাবীর প্রতি গুরুত্ব দিন এবং পূর্ণ বিশ রাকাআত পড়ুন।

والله اعلم بالصواب
উত্তর দিয়েছেন
মাওলানা উমায়ের কোব্বাদী নকশবন্দী

সূত্রঃ http://quranerjyoti.com

ভিডিও কলে ডাক্তারের পরামর্শ পেতে Play Store থেকে ডাউনলোড করুন Bissoy অ্যাপ