ভাই, আপনি খুব জটিল একটি প্রশ্ন করেছেন। এক কথায় যার উত্তর দেওয়া মুশকিল। আসলে বাংলাদেশের অধিকাংশ মানুষের ছালাত না রাসূল (সাঃ) এর ত্বরীকা মোতাবেক হয়, না ইমাম আবু হানীফার মতো হয়? আমরা অনেকেই হয়তো সহীহ সালাতের দাবীদার, কিন্তু বাস্তবতার নিরিখে বিচার করলে এর সত্যতা খুঁজে পাওয়া দায়। শরীয়ত সংখ্যাধিক্যের মাপ-কাঠিতে বিচার করা যায়না, একে বিচার করতে হয় শারয়ী মানদন্ডে। প্রচলিত কোন আমল শারঈ দৃষ্টিকোন থেকে ভুল প্রমাণিত হ’লে সাথে সাথে তা বর্জন করতে হবে এবং সঠিকটা গ্রহণ করতে হবে। এক্ষেত্রে বিন্দুমাত্র গোঁড়ামী করা যাবে না। পূর্বপুরুষরা এবং বড় বড় আলেমগণ করে গেছেন, এখনো সমাজে চালু আছে, বেশীর ভাগ আলেম বলছেন এ সমস্ত জাহেলী কথা বলা যাবে না। ভুল হওয়া মানুষের স্বভাবজাত। মানুষ মাত্রই ভুল করবে, কেউই ভুলের ঊর্ধ্বে নয়। তবে ভুল করার পর যে সংশোধন করে নেয় সেই সর্বোত্তম। আর যে সংশোধন করে না সে শয়তানের বন্ধু। রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেন, ﻛُﻞُّ ﺍﺑْﻦِ ﺁﺩَﻡَ ﺧَﻄَّﺎﺀٌ ﻭَﺧَﻴْﺮُ ﺍﻟْﺨَﻄَّﺎﺋِﻴْﻦَ ﺍﻟﺘَّﻮَّﺍﺑُﻮْﻥَ ‘প্রত্যেক আদম সন্তান ভুলকারী আর উত্তম ভুলকারী সে-ই যে তওবাকারী’। সর্বশ্রেষ্ঠ নবী মুহাম্মাদ (ছাঃ)ও ভুল করেছেন এবং সংশোধন করে নিয়েছেন। সাহো সিজদার বিধানও এখান থেকেই চালু হয়েছে। অনুরূপ চার খলীফাসহ অন্যান্য ছাহাবীদেরও ভুল হয়েছে। তাছাড়া অনেক সময় আল্লাহ তা‘আলা এবং রাসূল (ছাঃ) কোন বিধানকে রহিত করেছেন এবং তার স্থলে অন্যটি চালু করেছেন (বাক্বারাহ ১০৬) । তখন সেটাই সকল ছাহাবী গ্রহণ করেছেন। অতএব বড় বড় আলেমের ভুল হয় না এই ধারণা চরম ভ্রান্তিপূর্ণ। তাই সংশোধনের ক্ষেত্রে কখনো গোঁড়ামী করা যাবে না। কারণ ভুল সংশোধন না করে বাপ-দাদা বা বড় আলেমদের দোহাই দেওয়া অমুসলিমদের স্বভাব (বাক্বারাহ ১৭০; লোকমান ২১) ।