শেয়ার করুন বন্ধুর সাথে

তারাবীহের নামাজ এবং তার হুকুম এই পবিত্র মাসে আল্লাহর রাসূল মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আমাদের জন্য শরীয়ত হিসেবে যা পেশ করেছেন তম্মধ্যে তারাবীর নামাজ একটি। এটি সুন্নতে মুয়াক্কাদাহ। মানুষ প্রতি চার রাকাত পর আরাম করে তাই এ নামাজকে তারাবীহ বলা হয়। তারাবীহ দুই রাকাত দুই রাকাত করে আদায় করতে হয়। তাহাজ্জুদও অনুরূপ। কোন কোন মসজিদের ইমাম না বুঝে ভুল করেন। তারা দুই রাকাতের পর তারাবীহ অথবা তাহাজ্জুদ কোনটিতেই সালাম ফিরান না। এটা সুন্নাতের খেলাফ। ওলামাগণ বলেছেন যে, যে ব্যক্তি তারাবীহ অথবা তাহাজ্জুদের তৃতীয় রাকাতের জন্য দাড়িয়ে যায় সে যেন ফজর নামাজের তৃতীয় রাকাতে দাড়ালো। অর্থাৎ তার নামাজ বাতিল বলে গণ্য হবে। তারাবীহ জামাআতে মসজিদে আদায় করা উত্তম। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এ নামাজ মসজিদে পড়েছেন। তার সাথে লোকজনও নামাজ আদায় করেছে। আগমনকারী পরবর্তী রাতেও তিনি নামাজ পড়লেন। লোকজনও হয়েছিল বেশি। তার পর লোকজন তৃতীয় কিংবা চুতুর্থ রাত্রিতে একত্রিত হলো অথচ আল্লাহর রাসূল তাদের নিকট আসেননি।সকাল বেলা তিনি লোকদের লক্ষ্য করে বললেন, তোমরা যা করেছ আমি তা দেখেছি, আমার বের না হওয়ার কারণ হলো, আমার ভয় হচ্ছিল যে, এ নামাজ তথা তারাবীহ তোমাদের জন্য ফরয হয়ে যাবে। (বুখারী: ১১২৯ মুসলিম : ৭৬১) বর্ণনাকারী বলেন, এ ঘটনা রমজান মাসে হয়েছিল। তার পর সাহাবা আজমাঈন তারাবীহ আদায় করেছেন। এবং সমস্ত উম্মত তা গ্রহণ করেছেন। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন: : "من قام مع الإمام حتى ينصرف كتب له قيام ليلة" [أخرجه أبو داود رقم 1375 وابن ماجة رقم 1327 والنسائي رقم 1365، 1606 والترمذي رقم 806، যে ব্যক্তি ইমামের সাথে তারাবীহ শুরু করে শেষ পর্যন্ত থাকে তাকে পুরো রাত ইবাদতের সওয়াব দেয়া হয়। আবু দাউদ, ১৩৭৫, ইবনে মাজা: ১৩২৭ নিসায়ী: ১৩৬৫ তিরমিযী: ৮০৬ নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন: যে ব্যক্তি ঈমান অবস্থায় সওয়াবের নিয়তে কিয়ামুল লাইল করে তার অতীতের সব গুনাহ ক্ষমা করে দেয়া হয়। (বুখারী: ২০০৯ মুসলিম : ৭৫৯) অতএব বুঝা গেল এটা গুরুত্বপূর্ণ সুন্নাত আদায় না করা কোন প্রকারেই উচিৎ নয়। তারাবীর রাকাত সংখ্যা সম্পর্কে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম থেকে নির্দিষ্ট কোন সংখ্যা পাওয়া যায় না। বরং এতে স্বাধীন সুযোগ রয়েছে। শাইখুল ইসলাম ইবনে তাইমিয়া বলেন : নামাজী ব্যক্তির ইচ্ছানুযায়ী ২০ রাকাত পড়বে। এটি শাফী রহ. এবং আহমদ রহ এর প্রসিদ্ধ মত। ইচ্ছে হয় ৩৬ রাকাত পড়বে। এটা ইমাম মালেকের মত। ইচ্ছে হয় ১১,১৩ পড়বে, সব ক'টিই সঠিক আছে। রাকাত কম হলে কিয়াম লম্বা হবে আর কিয়াম স্বল্প হলে রাকাত বেশি হবে। শরীয়তে এ বিষয়ে সুনির্দিষ্ট কোন সংখ্যা বর্ণিত হয়নি। ওমর রা. উবাই ইবনে কাআব রা. এর হালকায় যখন সবাইকে একত্র করলেন তাদেরকে নিয়ে তিনি বিশ রাকাত পড়েছিলেন। সাহাবা আজমাঈন কেউ কম রাকাতে আবার কেউ বেশি রাকাতে তারাবীহ পড়তেন। কতিপয় ইমাম-কে অস্বাভাবিক নামাজ আদায় করতে দেখা যায়, রুকু, সেজদা, ক্বিয়াম ইত্যাদিতে ধীরস্থীরতা বলতে কিছুই নেই। অথচ ধীরস্থীরতা নামাজের রুকন। নামাজে আল্লাহর সামনে হুজুরে কালব, একাগ্রতা এবং তিলাওয়াত থেকে নছিহত গ্রহণ হলো আসল। এটাতো অস্বাভাবিক তাড়াহুড়োর দ্বারা হাসিল হয় না। দীর্ঘ এবং ধীর স্থিরভাবে দশ রাকাত নামাজ উত্তম বিশ রাকাত তাড়াহুড়োর নামাজ থেকে। কারণ নামাজের প্রাণ এবং সার হলো মনকে আল্লাহর সামনে হাজির করা। অনেক সময় কমবস্তুও বেশি থেকে উত্তম হয়ে থাকে। এমনিভাবে তারতীলের সাথে ক্বিরাত পড়া দ্রুত পড়া হতে উত্তম। হ্যাঁ স্বাভাবিক দ্রুত, যে ভাবে পড়লে মাখরাজ এবং উচচারণ ঠিক থাকে তা চলে। যদি কোন হরফের উচ্চারণ বাদ পড়ে যায় দ্রুত পড়ার কারণে তাহলে তা নিষেধ। স্পষ্ট ক্বিরাত পড়া যা দ্বারা মুসল্লি উপকৃত হয় তা উত্তম। আল্লাহ তাআলা না বুঝে যারা পড়েন তাদের নিন্দা করেছেন । *******তারাবির নামাজের নিয়ত ..******* নাওয়াইতুয়ান উছাল্লিয়া লিল্লাহি তা'আলা রাকাআতাই ছালাতিত তারাবি সুন্নাতু রাসুলুল্লা হি তা'আলা মুতাওয়াজ্জিহান ইলা জিহাতিল কাবাতিশ শারীফাতি আল্লাহ আকবার ... *******তারাবির নামাজের তাসবীহ ****** সুবহানা যিলমুলকি ওয়াল মালাকুতি.সুবহানা যিল ইজ্জাতি ওয়াল আযমাতি ওয়াল হাইবাতি ওয়াল কুদরাতি ওয়াল কিবরিয়া ই ওয়াল জাবারুতি সুবহানাল মালিকিল হাইয়িল্লাযী লা ইয়ানামু ওয়াল ইয়া মুতু আবাদান আবাদান সুব্বুহুন কুদ্দুসুন রাব্বুনা ওয়া রাব্বুল মালাইকাতি ওয়ার রুহ.. ****** সব শেষ দুরুদ শরীফ. 124 বার ******* আসালাতু আসসালামু আলাইকা ইয়া রাসুলুল্লাহ (দ)

ভিডিও কলে ডাক্তারের পরামর্শ পেতে Play Store থেকে ডাউনলোড করুন Bissoy অ্যাপ
Jobedali

Call

তারাবী নামায নারী-পুরুষ সকলের জন্য সুন্নতে মুয়াক্কাদা। (তবে পুরুষ মসজিদে জামাতের সাথে আর মহিলাগণ ঘরে পড়বে।) কেননা খোলাফায়ে রাশেদীন (বিশেষ করে উমর রাযি.-এর খেলাফতের শেষ জামানা থেকে) মুয়াযাবাত তথা নিয়মিত তারাবী নামায পড়তেন। আর রাসূল ﷺ ইরশাদ করেছেন যে, عليكم بسنتي وسنة الخلفاء الراشدين المهديين من بعدي عضوا عليها بالنواجذ “তোমরা আমার সূন্নাতকে আঁকড়ে ধর এবং খোলাফায়ে রাশেদীনের সূন্নাতকে আঁকড়ে ধর। তার উপর তোমরা অটুট থাক।” (আবু দাউদ ৪৬০৭, তিরমিজী ২৬৭৬)
তারাবী নামায সুন্নত হওয়াকে যে অস্বীকার করবে অথবা অবৈধ মনে করবে সে বিদআতের আবিস্কারক, পথভ্রষ্ট। আর তাহতাবী কিতাবে রয়েছে যে তারাবী নামায সুন্নত, এই নামায বর্জন ও ছেড়ে দেওয়া জায়েয নাই। (কামুসুল ফিকহ ২/৪৪৮)

والله اعلم بالصواب

উত্তর দিয়েছেন
মাওলানা উমায়ের কোব্বাদী

ভিডিও কলে ডাক্তারের পরামর্শ পেতে Play Store থেকে ডাউনলোড করুন Bissoy অ্যাপ