শেয়ার করুন বন্ধুর সাথে
MituShaleh

Call

নারীদের ঋতুর সময়ে কি কি বিষয়ে সতর্কতা জরুরি আপনারা হয়ত একটা বিষয় জানেন যে, মেয়েদের যৌবন আগমন থেকে যৌবনের সীমা পর্যন্ত এই সময়টায় প্রতি ১৮ দিন অন্তর তাদের যোনি থেকে কিছুটা রক্ত ও শ্লেষ্মা বেরিয়ে আসে। একই বলা হয়ে থাকে মাসিক বা ঋতু। ভারতীয় শাস্ত্র থেকে পাওয়া যায়, বাৎস্যায়ন বলেন - এই ঋতু নারীর বিবাহের সূচনা বোঝায়। তার মতে বিবাহের সূচনার সময়, ঋতুস্রাবের ঠিক প্রারম্ভে। কিন্তু আজকাল ও বিধান প্রাই মানা হয় না - কারণ ভারত সরকার আঠারো বছরের আগে কোনও নারীর বিবাহ অসিদ্ধ বলে ঘোষনা করেছেন। ঋতুমতী মহিলার সময় বা ঐ সময়ের পরে কতকগুলি বিশেষ সতর্কতা অবলম্বন করা জরুরি। তা না হলে তার দৈহিক ও মানসিক নানা প্রকার ক্ষতি হতে পারে। এই বিষয়টা ইসলাম ধর্মেও যথেষ্ট গুরুত্বের সাথে বর্ণনা করা হয়েছে । ঋতু যে একটি সাধারণ বিষয় নয়, তা আমাদের ভারতীয় সব শাস্ত্রকারদের বেশ জানা ছিল - তাই তাঁরা এটা মেনে চলতেন সব সময়ে। শাস্ত্রের ভাষায়ঃ - ঋতুমতী যদা নারী চণ্ডালী প্রথমেহনি। পাপীয়সী দ্বিতীয়ে চ তৃতীয়ে নষ্টরূপিনী। উপস্বিনী চতুর্থে চ লাতা চৈব বিশুদ্ধতি। প্রথমেহ হ্নি অগত্যা চ গমনে জীবন ক্ষয়। দিনভেদে ঋতুমতী নারীর বিভিন্ন নামকরণ করা হয়েছে ভারতীয় শাস্ত্রে। নারীর ঋতু হলে তিন দিন কোন নারীকে কি নামে ডাকা হয় এবং তার প্রকৃতি কি হয় তা বলা হয়েছে। যেদিন নারী জাতি প্রথম ঋতুমতী হয় সেদিন সে চণ্ডালিনীসদৃশা হয়ে থাকে। তেমনি দ্বিতীয় দিনে সে হয় মহাপাপীয়সী, তৃতীয় দিনে হয় নষ্টরূপী, চতুর্থ দিনে সে হয় উপস্বিনীসদৃশা। চতুর্থ দিনে নারী যথাবিধি স্নান করলে সে পবিত্রা হয়ে থাকে। ঋতু হলে প্রথম দিন নারী স্পর্শ করবে না। সেই দিন উপগত হলে পরমায়ু হ্রাস হয়ে থাকে। যদি দ্বিতীয় দিনে নারী গমন করা হয় তাহলে সেই পুরুষকে মহাপাপে লিপ্ত হতে হয়। তৃতীয় দিনেও নারীকে পরিত্যাগ করা উচিত। সেই দিন নারীকে স্পর্শ করলে সেই নারী বেশ্যাবৃত্তি অবলম্বন করে এবং সেই পুরুষকেও বেশ্যাগমনজনিত পাপে লিপ্ত হতে হয়। চতুর্থ দিনে নারী স্নান করে বিশুদ্ধা হলে তারপর তাকে স্পর্শ করবে। শাস্ত্রের এই কথাগুলির মধ্যে যে কতটা বাস্তবতা প্রচ্ছন্ন আছে তা একটু চিন্তা করলেই বোঝা যায়। তারপর ঋতুকালীন বিভিন্ন বিষয়ের ফলাফল বলা হচ্ছে। ঋতুর পরই নারীর জরায়ু থাকে নরম ও সংবেদনশীল। ঐ সময় কোন ব্যায়াম, দৌড় ঝাঁপ, ছুটাছুটি, লাফালাফি করা উচিত নয়। ঋতুর সময় নিয়মিতভাবে দৈহিক বিশ্রাম অবশ্য কর্তব্য। তাই আমাদের দেশে ঋতুর সময় তিন দিন পূর্ণভাবে নারীর অশৌচ পালন করা হয়ে থাকে। এর অর্থ আর কিছুই নয়। এই তিন দিন বিশেষ ভাবে গৃহকর্ম থেকে নারীকে বিশ্রাম দেওয়া কর্তব্য। এই সময় ঋতুস্রাব মুছে ফেলার জন্যে বা রক্ত শুষে নেবার জন্যে অনেকে অত্যন্ত ময়লা কাপড়ের টুকরো ইত্যাদি ব্যবহার করে থাকে এটি যে কত বড় ভুল জিনিস এবং এর জন্যে যে কতটা অনিষ্ট হতে পারে এটি তারা গভীরভাবে দেখবার অবসর পান না। যদি কাপড়ের বা কার্পাস তুলোর টুকরোতে কোন রোগের বা দুরারোগ্য ব্যাধির জীবাণু থাকে তবে তা যোনিনালী দিয়ে দেহের ভিতরে প্রবেশ করবে এবং এটা ক্ষতির কারণ হয়ে দাড়াবে। এর ফলে জরায়ু বা গর্ভাশয় কঠিন পীড়ায় আক্রান্ত হতে পারে। এজন্য অনেক সময় ধনুষ্টংকার বা রতিজ রোগ বা অন্য কোন রোগ হতে পারে। ঋতুমতী নারীর তাই এ বিষয়ে যথেষ্ট সাবধান থাকা উচিত। ঋতুমতী নারীর উত্তর ধৌত কার্পাস বস্ত্র ব্যবহার করা জরুরি। নারীদের ঋতুর সময় কখনও শরীরে ঠান্ডা লাগান উচিত নয়-রাত্রি জাগাও উচিত নয়। ঐ সময় শরীর দুর্বল থাকে। সহজেই ঠাণ্ডা লাগতে পারে। রাত জাগলেও শরীরের ক্ষতি হতে পারে। ঋতুস্রাবের সময়ে পরিষ্কার কার্পাস টুকরো বা সাবান গরম জল ইত্যাদি দ্বারা পচা কাপড়ের টুকরো যোনিতে ব্যবহার করা উচিত। ঋতুস্রাবের সময় অন্ততঃ তিন চার দিন কোন পুরুষের সঙ্গে যৌন মিলনে ব্রতী হওয়া উচিত নয়। তাতে জরায়ু কোন না কোন ভাবে আহত হতে পারে। তার ফলে নানা ক্ষতি হতে পারে। নারীদের ঋতু কালীন মাটির পাত্রে জলপান, কঠোর বিছানায় শয়ন করা উচিত। এ সময়ে চুলে তেল দেওয়া, গন্ধ দ্রব্য বা সুগন্ধি বস্তু ব্যবহার করা উচিত নয়। এ সব পর্যন্ত শাস্ত্রীয় মতে নিষিদ্ধ। যদিও আজকাল ও সব নিয়ম পালন করা হয় না। তবু এগুলি পালন করা উচিত। তার কারণ ঋতুকালে এমন কিছু করা উচিত নয়, যাতে নারী কামাতুর হয়ে সঙ্গমে লিপ্ত হতে পারে।

ভিডিও কলে ডাক্তারের পরামর্শ পেতে Play Store থেকে ডাউনলোড করুন Bissoy অ্যাপ