বিদআত বলা হয় দ্বীন বিষয়ক কোন নতুন কর্মকে, যার কোন দলীল শরীয়তে নেই। মহানবী (সঃ) বলেছেন, “ অবশ্যই তোমাদের মধ্যে যারা আমার বিদায়ের পর জীবিত থাকবে তাঁরা অনেক রকমের মতভেদ দেখতে পাবে। অতএব তোমরা আমার ও আমার সুপথপ্রাপ্ত খোলেফায়ে রাশেদীনের সুন্নাহ অবলম্বন করো, তা দাঁত দ্বারা দৃঢ়তার সাথে ধারণ করো। (তাতে যা পাও মান্য কর এবং অন্য কোনও মতের দিকে আকৃষ্ট হয়ো না।) আর (দ্বীনে) নবরচিত কর্মসমূহ হতে সাবধান! কারণ, নিশ্চয় প্রত্যেক বিদআত (নতুন আমল) হল ভ্রষ্টতা।” ৮৩(আবু দাঊদ ৪৪৪৩, তিরমিযী ২৮১৫, ইবনে নাজাহ ৪২ নং)
আর নাসাঈর এক বর্ণনায় আছে, “ আর প্রত্যেক ভ্রষ্টতা জাহান্নামে(নিয়ে যায়)।”
উক্ত হাদিস থেকে এ কথাও প্রমাণ হয় যে, বিদআতে হাসানাহ (ভাল বিদআত) বলে কোন বিদআত নেই। কারণ মহানবী (সঃ) বলেছেন, “প্রত্যেক বিদআত হল ভ্রষ্টতা।”
বিদাআতের শাব্দিক অর্থ হলো, নতুনত্ব। পরীভাষায় শরীয়তের মাঝে নতুন কোনো বিষয় সংযোজনকে বিদ‘আত বলা হয়। শরঈ দৃষ্টিতে সমস্ত প্রকৃত বিদ‘আতই বিদ‘আতে সাইয়্যিয়াহ। তবে শাব্দিক অর্থগত দিক দিয়ে বিদ‘আত দুই প্রকার। যথা, (১) বিদ‘আতে হাসানা ও (২) বিদ‘আতে সাইয়্যিয়াহ। বিদ‘আতে সাইয়্যিয়াহ হলো, প্রত্যেক ঐ কাজ যা রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের যামানাসহ খাইরুল কুরূনে এর কোনো অস্তিত্ব ছিল না। পরবর্তীতে মনগড়াভাবে শরীয়তে সংযোজন করা হয়েছে। এ ধরনের সমস্ত বিদ‘আত বিদ‘আতে সাইয়্যিয়াহ, যা প্রত্যাখ্যাত। আর বিদ‘আতে হাসানা হলো, যা নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের পরে খাইরুল কুরূনের মাধ্যমে দীনের সহায়ক হিসেবে সংযোজিত কোনো কাজ। মূলত এটা বিদ‘আত নয়। এটাকে বিদ‘আতে লুগাবী (শাব্দিক অর্থে বিদা‘আত) বলা যায়। অতএব পারিভাষিক সংজ্ঞা বিবেচনায় বিদ‘আতের কোনো প্রকারভেদ নেই। যারা বিদ‘আতকে আভিধানিক সংজ্ঞার মাধ্যমে বিভিন্ন প্রকারে ভাগ করেছেন তারা হলেন ইমাম শাফেয়ী, ইয ইবনে আব্দুস সালাম, আবূ শামা, ইমাম নববী, ইমাম কারাফী, যুরকানী, ইবনুল জাওযী ও ইবনে আবিদীন রহ. প্রমুখ।
সহীহ মুসলিম; হাদীস ৬৯, সহীহ বুখারী; হাদীস ২৬৯৭, রদ্দুল মুহতার ২/২৯৯, ইমদাদুল ফাতাওয়া ৫/২৮৫, ফাতাওয়া মাহমূদিয়া ৫/২১৪, সহীহ মুসলিম; হাদীস ৮২৭, আলমাউসূ‘আতুল ফিকহিয়্যা আলকুওয়াইতিয়্যা ৮/২১, ফাতাওয়া মাহমূদিয়া ৫/২১৪, ২১৭, মু’জামুল মুসতালাহাত ফিল আলফাযিল ফিকহিয়্যা ১/৩৬২, ইমদাদুল ফাতাওয়া ৫/২৮৫, ফাতাওয়া হাক্কানিয়া ২/৪২, কামূসুল ফিকহ ২/২৯২।