জাকির নায়েক সালাফি। তিনি বুকের উপর হাত বাধেন।

ভিডিও কলে ডাক্তারের পরামর্শ পেতে Play Store থেকে ডাউনলোড করুন Bissoy অ্যাপ
NaiemIalam

Call

♥♥বিসমিল্লাহির-রহমানির-রহীম ♥♥ ইমাম আবু হানাফি বলেন, (১) إذا صح الحديث فهو مذهبى অর্থঃ হাদীছ বিশুদ্ধ সাব্যস্ত হলে ওটাই আমার মাযহাব বলে পরিগণিত হবে।[1]ইবনু আবিদীন এর হাশিয়া ১ম খন্ড ৬৩ পৃষ্ঠা, “রসমিল মুফতী” ১ম খণ্ড ৪র্থ পৃষ্ঠা, ছালিহ আল ফাল্লানীর “ইকাযুল হিমাম” পৃষ্ঠা ৬২, ইবনু আবিদীন ইবনুল হুমামের উস্তায ইবনুশ শাহনা আল কাবীরের “শারহুল হিদায়া” থেকে উদ্ধৃতি করেনঃ إذا صح الحديث وكان على خلاف المذهب عمل بالحديث ويكون ذلك مذهبه ولا يخرج مقلد عن كونه حنيفا بالعمل به فقد صح ان ابى حنيفة انه قال: إذا صح الحديث فهو مذهبي وقد حكى ذلك الامام ابن عبد البر عن ابى حنيفة وغيره من الأئمة অর্থঃ যখন হাদীছ বিশুদ্ধ সাব্যস্ত হয়ে যাবে আর তা মাযহাবের বিপক্ষে থাকবে তখন হাদীছের উপরেই আমল করা উচিত হবে এবং এটাই তাঁর (ইমামের) মাযহাব বলে বিবেচিত হবে। উক্ত হাদীছের উপর আমল করাটা তাকে হানাফী মাযহাব থেকে বহিষ্কার করবে না। কেননা বিশুদ্ধ সূত্রে ইমাম আবু হানীফা থেকে এসেছে যে, হাদীছ বিশুদ্ধ সাব্যস্ত হলে এটাই আমার অনুসৃত পথ বলে জানতে হবে। একথা ইমাম ইবনু আব্দিল বার ইমাম আবু হানীফাসহ অন্যান্য ইমামদের থেকেও বর্ণনা করেন।♥♥ (প্রতেক ইমাম বলছেন সহীহ হাদীসই হলো আমার মাযহাব ) ♥♥ সহীহ হাদীসে বুকের উপর হাত বাঁধার কথা রয়েছে (দেখুন আবু দাউদ ৭৫৯ নম্বর হাদীস, সনদ সহীহ) ♥♥ আল্লাহ বলেন- وَكَانَ الْإِنْسَانُ أَكْثَرَ شَيْءٍ جَدَلاً ‘‘মানুষ অধিকাংশ ব্যাপারেই বিতর্ক প্রিয়’’- (সূরাহ্ আল-কাহ্ফ ১৮/৫৪) ♥♥ আল্লাহ্ তা‘আলা বলেন: «إِنَّ الَّذِيْنَ يُجَـادِلُوْنَ فِيْ آيَاتِ اللهِ بِغَيْرِ سُلْطَانٍ أَتَاهُمْ، إِنْ فِيْ صُدُوْرِهِمْ إِلاَّ كِبْرٌ، مَا هُمْ بِبَالِغِيْهِ، فَاسْتَعِذْ بِاللهِ، إِنَّهُ هُوَ السَّمِيْعُ الْبَصِيْرُ» ‘‘নিশ্চয়ই যারা কোন দলীল ছাড়াই আল্লাহ্ তা‘আলার নিদর্শনসমূহ নিয়ে বিতর্কে লিপ্ত হয় তাদের অন্তরে রয়েছে শুধু অহঙ্কার যা সফল হবার নয়। অতএব তুমি আল্লাহ্ তা‘আলার শরণাপন্ন হও। তিনিই তো সর্বশ্রোতা সর্বদ্রষ্টা’’। (গাফির/মু’মিন : ৫৬)

ভিডিও কলে ডাক্তারের পরামর্শ পেতে Play Store থেকে ডাউনলোড করুন Bissoy অ্যাপ

একাধিক হাদীস ও অধিকাংশ সাহাবী ও তাবেয়ীর আমল একথা প্রমাণ করে যে, নামাযে শুধু প্রথম তাকবীরের সময় কান পর্যন্ত হাত তোলা সুন্নত। 

  শুধু তাকবীরে তাহরীমার সময় রফয়ে ইয়াদাইনের দলিলঃ- 
 ১ আলকামা র. বলেন, অর্থ: আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ রা. বলেছেন, আমি কি তোমাদেরকে নিয়ে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের নামাযের মত নামায পড়বনা? একথা বলে তিনি নামায পড়লেন, এবং তাতে শুধু প্রথম বারই হাত তুললেন। আবূ দাউদ শরীফ, হাদীস নং ৭৪৮, তিরমিযী শরীফ, হাদীস নং ২৫৭, নাসায়ী শরীফ, হাদীস নং ১০৫৮, মুসান্নাফে ইবনে আবী শায়বা, হাদীস নং ২৪৫৬, মুসনাদে আহমদ, ১খ, ৩৮৮পৃ। ইমাম তিরমিযী র. এ হাদীসকে ‘হাসান’ বলেছেন, ইবনে হাযম জাহিরী (যিনি কোন মাযহাব অনুসরণ করতেন না) এটিকে সহীহ বলেছেন। তিরমিযী শরীফের টীকায় শায়খ আহমদ শাকের (তিনি মিসরের কাজী ছিলেন) বলেছেন, এ হাদীসটিকে ইবনে হাযমসহ অনেক হাফেজে হাদীস সহীহ আখ্যা দিয়েছেন। আসলেও এটি সহীহ হাদীস। অনেকে এর যেসব ত্রুটির কথা বলেছেন সেগুলো বাস্তবে কোন ত্রুটি নয়। আহমদ শাকের রহ. অন্যদের উত্থাপিত যে ত্রুটির প্রতি ইংগিত করেছেন তন্মধ্যে একটি হলো; কেউ কেউ বলেছেন, এ হাদীসটি সম্পর্কে ইমাম তিরমিযী র. বলেছেন, আব্দুল্লাহ ইবনুল মুবারক র. বলেছেন : ولم يثبت حديث ابن مسعود أن النبي صلى الله عليه وسلم لم يرفع إلا في أول مرة. অর্থাৎ ইবনে মাসউদ রা. এর এ হাদীসটি প্রমাণিত নয় যে, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম শুধু প্রথমবারই হাত তুলেছেন। এর জবাব এই যে, ইবনে মাসউদ রা. থেকে এ ব্যাপারে দুটি হাদীস বর্ণিত হয়েছে। একটি মৌখিক বর্ণনারূপে, অপরটি নিজে আমল করে দেখানোর মাধ্যমে। ইবনুল মুবারক র. প্রথমটি সম্পর্কে ঐ মন্তব্য করেছেন। উপরে উদ্ধৃত তার বক্তব্য থেকেও তাই প্রমাণিত হয়। দ্বিতীয় বর্ণনা সম্পর্কে তিনি ঐ মন্তব্য করেননি। এর প্রমাণ তিনি নিজেও দ্বিতীয় হাদীসটি বর্ণনা করেছেন, যা নাসায়ী শরীফে উদ্ধৃত হয়েছে। হাদীস নং ১০২৬। 
 ২ হযরত বারা ইবনে আযিব রা. থেকে বর্ণিত: রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নামায শুরু করার সময় কানের কাছাকাছি হাত তুলতেন। এরপর আর কোথাও হাত তুলতেন না। আবূ দাউদ শরীফ, হাদীস নং ৭৫২, মুসান্নাফে ইবনে আবী শায়বা, হাদীস নং ২৪৫৫। মুসান্নাফে আব্দুর রাযযাক (২৫৩১), দারাকুতনী (১খ, ২৯৩ পৃ.) হাদীস ২১। 
 ৩ হযরত ইবনে আব্বাস রা. থেকে বর্ণিত: অর্থ: রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, সাতটি জায়গায় হাত তুলতে হয়। ১. নামাযের শুরুতে, ২. কাবা শরীফের সামনে আসলে, ৩. সাফা পাহাড়ে উঠলে, ৪. মারওয়া পাহাড়ে উঠলে। ৫. আরাফায় ৬. মুযাদালিফায় ৭. হাজরে আসওয়াদের সামনে। তাবারানী, মুজামে কাবীর(রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের বক্তব্যরূপে) নং ১২০৭২। মুসান্নাফে ইবনে আবী শায়বা, হাদীস নং ২৪৬৫ (সাহাবীর বক্তব্যরূপে)। সুনানে বায়হবাকী, ৫খ, ৭২-৭৩ পৃ। হায়ছামী র. হযরত ইবনে উমর রা. থেকেও মারফূরূপে এটি উল্লেখ করেছেন।(দ্র. মাজমাউয যাওয়ায়েদ, ২খ, ২২২ পৃ) এখানে উদ্ধৃত হাদীসটি এই শব্দে মুসনাদে বাযযারের বরাত দিয়ে হায়ছামী তার কাশফুল আসতারে উল্লেখ করেছেন। (হা. ৫১৯) 
 ৪ হযরত ইবনে উমর রা. বলেছেন, অর্থ: রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন নামায শুরু করতেন তখন রফয়ে ইয়াদাইন করতেন। এর পর আর করতেন না। (বায়হাকী, আল খিলাফিয়াত) । হাফেজ মুগলতাঈ র. বলেছেন, এর সনদে কোন সমস্যা নেই। শায়খ আবেদ সিন্ধী র. বলেছেন, আমার দৃষ্টিতে এটি অবশ্যই সহীহ। ইমাম মালেক র. থেকে ইবনুল কাসেম ও ইবনে ওয়াহব র. একবার হাত ওঠানোর যে বর্ণনা পেশ করেছেন, যা আল মুদাওয়ানা’য় বিদ্ধৃত হয়েছে, তা এই বর্ণনার সমর্থন করে। এমনিভাবে হযরত ইবনে উমর রা. থেকে বর্ণিত পূর্বের হাদীসটি এবং তাঁর আমলও এর সমর্থক। ইবনে আবী শায়বা র. স্বীয় মুসান্নাফে ও তাহাবী র. শরহে মাআনিল আছার গ্রন্থে মুজাহিদ থেকে বর্ণনা করেছেন যে, তিনি বলেছেন, আমি হযরত ইবনে উমর রা. এর পেছনে নামায পড়েছি। তিনি নামাযের সূচনায় ছাড়া আর কোথাও হাত তোলেন নি। এর সনদ সহীহ। ইমাম মুহাম্মদ র.ও মুয়াত্তায় হযরত ইবনে উমর রা.এর অনুরূপ আমলের কথা উদ্ধৃত করেছেন। 
 ৫ আসওয়াদ র. বলেছেন, অর্থ: আমি উমর ইবনুল খাত্তাব রা.কে দেখেছি, তিনি প্রথম তাকবীরের সময় হাত তুলতেন; পরে আর তুলতেন না। মুসান্নাফে ইবনে আবী শায়বা, হাদীস নং ২৪৬৯; তাহাবী শরীফ, ১খ, ১১১পৃ। যায়লাঈ র. এই হাদীসকে সহীহ বলেছেন। হাফেজ ইবনে হাজার আসকালানী র. আদদিরায়া গ্রন্থে লিখেছেন, এর বর্ণনাকারীরা সবাই বিশ্বস্ত। আল্লামা আলাউদ্দীন মারদীনী র. আল জাওহারুন নাকী গ্রন্থে বলেছেন, এসনদটি ইমাম মুসলিমের শর্তানুযায়ী সহীহ। ইমাম তাহাবী এই হাদীসটি উল্লেখ করার পর লিখেছেন অর্থাৎ উমর রা. কর্তৃক এই আমল করা এবং সাহাবীগণের তার উপর কোন আপত্তি না করা স্পষ্ট প্রমাণ করে যে, এটাই এমন সঠিক পদ্ধতি, যার ব্যতিক্রম করা কোন ব্যক্তির জন্য উচিৎ নয়। 
 ৬ আসিম ইবনে কুলায়ব র. তার পিতার সূত্রে বর্ণনা করেছেন, অর্থ: হযরত আলী রা. নামাযে শুধু প্রথম তাকবীরের সময় হাত তুলতেন। এরপর আর কোথাও তুলতেন না। মুসান্নাফে ইবনে আবী শায়বা, হাদীস নং ২৪৫৭; তাহাবী শরীফ, ১খ, ১১০পৃ। যায়লাঈ র. এই হাদীসকে সহীহ বলেছেন। হাফেজ ইবনে হাজার আসকালানী র. আদদিরায়া গ্রন্থে লিখেছেন, এর বর্ণনাকারীরা সবাই বিশ্বস্ত। আল্লামা আয়নী র. বলেছেন, এটি মুসলিম শরীফের সনদের মানসম্পন্ন। ইমাম তাহাবী র. এটি উল্লেখ করার পর বলেন, فإن عليا لم يكن ليرى النبي صلى الله عليه و سلم يرفع ثم يترك هو الرفع بعده إلا وقد ثبت عنده نسخ الرفع অর্থাৎ রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে হাত তুলতে দেখেও তাঁর ইন্তেকালের পর আলী রা.তো শুধু একারণেই হাত তোলা ছেড়ে দিতে পারেন যে, তার নিকট হাত তোলার বিধান রহিত হওয়ার কোন প্রমাণ বিদ্যমান ছিল।
 ৭ ইবরাহীম নাখায়ী র. হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ রা. সম্পর্কে বর্ণনা করেন, أنه كان يرفع يديه في أول ما يفتتح ثم لا يرفعهما . أخرجه ابن أبي شيبة (٢٤٥٨) والطحاوي ١/١١١ وعبد الرزاق ٢/٧١ وإسناده صحيح. অর্থ: তিনি নামায শুরু করার সময় হাত তুলতেন। পরে আর কোথাও হাত তুলতেন না। মুসান্নাফে ইবনে আবী শায়বা, হাদীস নং ২৪৫৮; তাহাবী শরীফ, ১খ, ১১১পৃ; মুসান্নাফে আব্দুর রাযযাক, ২খ, ৭১পৃ। এটির সনদ সহীহ। ৮ হযরত আব্বাদ ইবনুয যুবায়র থেকে বর্ণিত: أن رسول الله صلى الله عليه وسلم كان إذا افتتح الصلاة رفع يديه في أول الصلاة ثم لم يرفعهما في شيئ حتى يفرغ. أخرجه البيهقي في الخلافيات. كما في نصب الراية ١/٤٠٤ অর্থ: রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন নামায শুরু করতেন, তখন শুধু নামাযের শুরুতেই উভয় হাত তুলতেন। এর পর নামায শেষ করা পর্যন্ত আর কোথাও হাত তুলতেন না। বায়হাকী তার ‘আল-খিলাফিয়াত’ গ্রন্থে এটি উদ্ধৃত করেছেন। এ হাদীসটির সনদ সম্পর্কে আল্লামা আনোয়ার শাহ কাশ্মীরী র. বলেছেন, এর বর্ণনাকারীরা সকলেই বিশ্বস্ত। 
 ৯ আবূ ইসহাক সাবিয়ী র. বলেন, كان أصحاب عبد الله وأصحاب علي لا يرفعون أيديهم إلا في افتتاح الصلاة. قال وكيع: ثم لا يعودون. أخرجه ابن أبي شيبة بسند صحيح جدا (٢٤٦١) অর্থ: আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ রা. এর শাগরেদগণ এবং হযরত আলী রা. এর শাগরেদগণ কেবল মাত্র নামাযের শুরুতে হাত ওঠাতেন। ওয়াকী র. বলেন, এর পর আর হাত ওঠাতেন না। মুসান্নাফে ইবনে আবী শায়বা, হাদীস নং ২৪৬১। এর সনদ অত্যন্ত সহীহ। রফয়ে ইয়াদাইন কত জায়গায় ছিল? সহীহ হাদীসসমূহে দেখা যায়, রফয়ে ইয়াদাইন একবার থেকে শুরু করে প্রত্যেক ওঠানামায় ছিল। খোদ হযরত ইবনে উমর রা. এর হাদীসে এক্ষেত্রে ভিন্ন ভিন্ন বিবরণ উদ্ধৃত হয়েছে। নিম্নে সংক্ষেপে তা তুলে ধরা হলো। ক শুধু এক জায়গায় অর্থাৎ নামাযের শুরুতে। যেমনটি পেছনের হাদীসগুলো থেকে জানা গেল। খ দুই জায়গায়, অর্থাৎ শুরুতে এবং রুকু থেকে ওঠার পর। হযরত ইবনে উমর রা. থেকে ইমাম মালেক র. মুয়াত্তায় এটি উদ্ধৃত করেছেন। আবূ দাউদ হযরত ইবনে উমর রা. থেকে (৭৪২), ইবনে মাজা র. হযরত আনাস রা. থেকে (৮৬৬)। গ তিন জায়গায়, অর্থাৎ নামাযের শুরুতে এবং রুকুর পূর্বে ও পরে। হযরত ইবনে উমর রা. থেকে বুখারী ও মুসলিমসহ অনেকে এটি উদ্ধৃত করেছেন। ঘ চার জায়গায়, অর্থাৎ উপরোক্ত তিন জায়গায় এবং দুরাকাত শেষ করে দাঁড়ানোর সময়। ইবনে উমর রা. থেকে বুখারী (৭৩৯), আবূ দাউদ(৭৪৩)। আবূ হুমায়দ রা. থেকে ইবনে মাজা (৮৬২) ও তিরমিযী (৩০৪), তিনি এটিকে হাসান সহীহ বলেছেন। হযরত আলী রা. থেকে আবূ দাউদ (৭৪৪), ইবনে মাজাহ (৮৬৪), ও তিরমিযী (৩৪২৩)। তিনি এটিকে হাসান সহীহ বলেছেন। হযরত আবূ হুরায়রা রা. থেকে আবূ দাউদ(৭৩৮)। ঙ পাঁচ জায়গায়, উক্ত চার জায়গা ছাড়াও সেজদায় যাওয়ার সময়। বুখারী, ‘জুযউ রাফইল ইয়াদাইন গ্রন্থে’, (পৃ ২৬); এবং তাবারানী ‘আল আওসাত’ গ্রন্থে। হায়ছামী র.বলেছেন, এর সনদ সহীহ। নাসাঈ র. মালেক ইবনুল হুয়ায়রিছ রা. থেকে (১০৮৫) । এর সনদও সহীহ। ইবনে মাজাহ র. হযরত আবূ হুরায়রা রা. থেকে (৮৬০)। আবূ ইয়ালা র. হযরত আনাস রা. থেকে (৩৭৪০)। এর সনদও সহীহ। (দ্র, মাজমাউয যাওয়ায়েদ, ২/২২০)। দারা কুতনী র. হযরত ওয়াইল ইবনে হুজর রা. থেকে। এর সনদও সহীহ। (দ্র, আছারুস সুনান) এছাড়া হযরত ওয়াইল ইবনে হুজর রা. এর বর্ণনায় ২য় রাকাতের শুরুতে : আবূ দাউদ (৭২৩), এবং হযরত ইবনে আব্বাস রা. এর বর্ণনায় দুই সেজদার মাঝে : আবূ দাউদ (৭৪০), নাসায়ী (১১৪৩)- রফয়ে ইয়াদাইনের উল্লেখ পাওয়া যায়। চ প্রত্যেক ওঠানামার সময়। অর্থাৎ রুকু, সেজদা, কেয়াম (দাঁড়ানো), কুউদ (বসা) এবং উভয় সেজদার মাঝখানে রফয়ে ইয়াদাইন। তাহাবী মুশকিলুল আছার গ্রন্থে হযরত ইবনে উমর রা. থেকে (৫৮৩১) । এর রাবীগণ সকলে বিশ্বস্ত। ইবনে মাজাহ র. উমায়ের ইবনে হাবীব থেকে (৮৬১) এর সনদ দুর্বল। প্রত্যেক ওঠানামায় হাত তোলার হাদীসকে ইমাম আহমাদ সহীহ বলেছেন। (দ্র. মুগনী, ১/৩৬৯) আবুল হাসান ইবনুল কাত্তানও তার বায়ানুল ওয়াহাম ওয়াল ঈহাম গ্রন্থে এটিকে সহীহ আখ্যা দিয়েছেন। (৫/৬১২) ইবনে হাযমও (মৃত্যু-৪৫৬হি) আল মুহাল্লা গ্রন্থে এটিকে সহীহ আখ্যা দিয়েছেন। একটু পরেই তার বক্তব্য আসছে। হানাফীদের দৃষ্টিভঙ্গি হলো, রাফয়ে ইয়াদাইন অনেক জায়গায়ই ছিল, তবে ক্রমে ক্রমে একবারের মধ্যে এসে ঠেকেছে, যা পূর্বোল্লিখিত হাদীসগুলি থেকে স্পষ্ট প্রতীয়মান হয়। এ দৃষ্টিভঙ্গি অবলম্বনের কারণ হলো, প্রথম দিকে নামাযে চলাফেরা, সালাম-কালাম অনেক কিছুই বৈধ ছিল। ক্রমান্বয়ে স্থিরতা ও কম নড়াচড়ার নির্দেশ কুরআন ও হাদীসে আসতে থাকে। হানাফীগণ মনে করেন পূর্বোল্লিখিত হাদীসগুলো প্রমাণ করে যে, রাফয়ে ইয়াদাইনও স্থিরতার পরিপন্থী। তাই ক্রমে ক্রমে এটিকে কমানো হয়েছে। অন্যথায় হযরত আলী রা., ওয়াইল ইবনে হুজ্্র রা.ও আবু মূসা আশ্আরী রা. প্রমুখ সাহাবীগণ রফয়ে ইয়াদাইনের হাদীস বর্ণনা করা সত্ত্বেও তদনুযায়ী আমল না করার কোন কারণ থাকতে পারে না। বাড়াবাড়ি কাম্য নয় আমাদের পূর্বসূরিগণের যুগেও এ মাসআলা নিয়ে দ্বিমত ছিল। তবে বাড়াবাড়ি ছিল না। এখানে দু’জন বড় আলেমের বক্তব্য তুলে ধরা হচ্ছে। একজন ইবনে হাযম জাহেরী এবং অপরজন ইবনুল কায়্যিম হাম্বলী। তারা দু’জনই আমাদের লা-মাযহাবী ভাইদের অত্যন্ত আস্থাভাজন। ইবনে হাযম জাহিরী আল মুহাল্লা গ্রন্থে হযরত ইবনে মাসউদ রা.এর হাদীসটি উল্লেখ করার পর লিখেছেন: صَلِّي. المحلى ٣/٢٣٥ অর্থাৎ রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকবীরে তাহরীমার পর প্রত্যেক ওঠা-নামার সময় হাত তুলতেন বলে যখন সহীহ হাদীসে প্রমাণিত, তখন এর সব ধরণই মুবাহ বা বৈধ হবে, ফরজ হবে না। আমরা এর যে কোন পদ্ধতি অনুসারেই নামায পড়তে পারি। আমরা যদি রফয়ে ইয়াদাইন করি তাহলে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের নামাযের মতো আমাদের নামায পড়া হবে। আর যদি রফয়ে ইয়াদাইন না করি তবুও রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের নামাযের মতো আমাদের নামায পড়া হবে। (মুহাল্লা, ৩ খ., ২৩৫ পৃ.) হায়! যদি আমাদের লা-মাযহাবী ভাইয়েরা ইবনে হাযম (তিনিও কোন মাযহাব অনুসরণ করতেন না)এর উপরোক্ত বক্তব্য গ্রহণ করে নিতেন তাহলে ফেতনা অনেকাংশেই কমে যেত। আল্লামা ইব্নুল কায়্যিম র. (মৃত্যু-৭৫০হি.)ও তাঁর ‘যাদুল-মাআদ’ গ্রন্থে ফজরের নামাযে কুনুত পড়া হবে কি না, সে প্রসঙ্গে লিখেছেন, وهذا من الاختلاف المباح الذي لا يُعنَّف فيه من فعله، ولا مَنْ تَركه، وهذا كرفع اليدين في الصلاة وتركه، وكالخلاف في أنواع التشهدات، وأنواع الأذان والإِقامة، وأنواع النسك من الإِفراد والقِران والتمتع، অর্থাৎ এটা এমন বৈধ মতপার্থক্যের অন্তর্ভুক্ত, যে ব্যক্তি এটা করলো এবং যে করলো না কাউকেই দোষারোপ ও নিন্দা করা যায় না। এটা ঠিক তেমনই যেমন নামাযে রাফয়ে ইয়াদাইন করা বা না করা, তদ্রুপ তাশাহহুদ বিভিন্ন শব্দে পড়া,আযান-ইকামতের বিভিন্ন নিয়ম অবলম্বন করা, এবং হজ্জের তিনটি নিয়ম-ইফরাদ,কিরান ও তামাত্তু বিষয়ে মতানৈক্যের মতোই। (দ্র. ১/২৬৬) 
ভিডিও কলে ডাক্তারের পরামর্শ পেতে Play Store থেকে ডাউনলোড করুন Bissoy অ্যাপ