শেয়ার করুন বন্ধুর সাথে

Call

কোন কিছুরই সহজ উপায় থাকেনা। কোন স্বভাব খারাপ মনে হলে, তার বিপরীত  ভালো স্বভাব তৈরি করতে হবে। সেটা পুরোপুরি আপনার নিষ্ঠার উপর নির্ভর করবে।

ভিডিও কলে ডাক্তারের পরামর্শ পেতে Play Store থেকে ডাউনলোড করুন Bissoy অ্যাপ
Joy

Call

অবচেতনভাবে যে কাজগুলো আমরা করে ফেলি সেটাই হলো অভ্যাস। সচেতন অবস্থায় কিন্তু অবচেতন মনে অর্থাৎ যে কাজগুলো এমনিতেই হয়ে যায় অর্থাৎ করার জন্য চিন্তা করার প্রয়োজন হয় না। যেগুলোকে আমরা বলি অভ্যাসবশত যা প্রথম পর্যায়ে বরংবার করে করে রপ্ত হয়েছে। উদাহরণ, যেমন যারা সকালে উঠে পত্রিকা পড়েন তারা উঠেই পত্রিকা খোঁজেন। যেদিন পত্রিকা প্রকাশিত হয় না সেদিনও পত্রিকা খোঁজেন। আমরা অনেকে রাস্তায় চলতে গিয়ে কাগজের টুকরা, বাদাম বা চকোলেটের খোসা রাস্তায় বা পথেই ফেলি, এই ফেলাটি ইচ্ছাকৃত নয়, অভ্যাসবশত, আমরা জানি কাজটি ঠিক নয় তার পরও করছি বা হয়ে যাচ্ছে। যেমন আপনি যদি কাউকে প্রশ্ন করেন আশ্চার্য, রাস্তায় টিস্যু পেপার ফেলছেন? উত্তর আসবে ওহ্ তাই নাকি! বুঝতে পারিনি, সরি। আবার কেউ উত্তর দিতে পারে, ফেলছি তো কী হয়েছে! কারো সঙ্গে ভালো ব্যবহার করা বা খারাপ ব্যবহার করা, কারো কাজে প্রশংসা করা বা না করা, কাউকে ধমক দেয়া বা বুঝিয়ে বলা, কাউকে ধন্যবাদ বলা না বলা এসবই করা বা না করা অভ্যাসের ফসল। বিশ্বের অন্যতম সেরা দার্শনিক এরিস্টেটল বলেন ‘আমরা প্রতিদিন যা কিছু করি তার শতকরা ৯৫ ভাগ অভ্যাস থেকে করি’ (৯৫% ড়ভ ঊাবৎুঃযরহম বি ফড় ঃযব ৎবংঁষঃ ড়ভ যধনরঃং) আমরা অনেক সময় বলে থাকি- লোকটির অভ্যাস হলো মিথ্যা কথা বলা অথবা যে কোনো ঘটনার নেগেটিভটি দেখাই তার অভ্যাস, আরো বলি ওর সঙ্গে কথা বলে লাভ নাই সে কারো কথা শোনে না খালি নিজের কথাই বলে। এমন বহু বহু বিষয় আমাদের অভিব্যক্তি বা আচরণ অভ্যাস থেকে উৎসারিত। প্রতিটি মানুষ চায় সুখ শান্তি এবং মানুষের ভালোবাসা তথা সফলতা এবং সেটা পেতে গেলে প্রয়োজন উত্তম আচরণকারী হওয়া, বিনয়ী ও সভ্য হওয়া কিন্তু এটা কেমন করে সম্ভব? ছোটবেলা থেকে গড়ে উঠা ভালো অভ্যাস বড় হয়ে একজন উত্তম আচরণকারী হিসেবে বিবেচিত হতে পারে, অন্যদিকে ছোটবেলা থেকে নেতিবাচক পরিবেশে নেতিবাচক কর্মের মাধ্যমে খারাপ আচরণকারী হিসেবে বিবেচিত হয়। তাই তো গবেষকরা বলেন- ভালো অভ্যাস তৈরি করা কঠিন কিন্তু জীবনটা হয় সহজ ও সুন্দর, খারাপ অভ্যাস তৈরি হয় সহজে কিন্তু জীবন হয় কঠিন। উপরে উঠা কঠিন কিন্তু নিচে নামা সহজ। ভালো কাজ করতে হয় শিখতে হয়, খারাপ কাজ হয়ে যায়। রাগ করা সহজ রাগ না করা কঠিন। বদনাম করা সহজ প্রশংসা করা কঠিন, চরিত্রকে ভালো রাখা কঠিন। যে এই কঠিন কাজগুলো রপ্ত করতে পারবে সেই সফল হবে। পশুকে পশু হতে হয় না কিন্তু মানুষকে মানুষ হতে হয়। মানবিক গুণাবলিগুলোকে চর্চার মাধ্যমে অভ্যাসে পরিণত করে নিতে হয়। যখন মূল্যবোধ/ভেলুজ, সৎ গুণগুলো অভ্যাসে পরিণত হয়ে যায় তখন চলতে ফিরতে, উঠতে বসতে কথা বলতে অর্থাৎ প্রতিটি আচরণ হবে ইতিবাচক, গঠনমূলক, মধুর, উত্তম এবং আকর্ষণীয়। তখন সবাই তার আচরণে মুগ্ধ হবে। অথচ এই আচরণগুলো যে ইচ্ছা করে বা ভেবে করছে তা নয় এটা যেন চেতনার সঙ্গেই মিশে গেছে। এ কারণে অভ্যাস একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় যা শিশু বেলা থেকে মানুষকে শিখতে হয় এবং মূলত ১৬/১৭ বছর বয়সের মধ্যেই বিশ্বাসের ভিত্তির (বিলিভ সিস্টেম) মধ্যে গ্রথিত হয়ে যায়। ফলে বিলিভ সিস্টেম যদি ইতিবাচক হয় তবে পরিণত জীবনে নেতিবাচক পরিবেশে বা পরিস্থিতিতে তার আচরণ সব সময়ই উত্তম থাকবে। এখন প্রশ্ন হলো কারো নেতিবাচক অভ্যাসের ফলে তাকে যদি সামাজিকভাবে বিব্রত বা অপমানিত হতে হয় তবে সে কীভাবে তার নেতিবাচক অভ্যাস পরিবর্তন করবে? কাজটি কঠিন তবে সম্ভব। হযরত আলী (রা.) বলেন, পৃথিবীর মধ্যে সবচেয়ে কঠিন কাজ হলো নিজেকে (অভ্যাস) পরিবর্তন করা এবং সবচেয়ে সহজ কাজ হলো অন্যের বদনাম করা। চিরন্তন সত্য হলো মানুষকে কখনো বদলানো যায় না, যদি সে বদলাতে না চায়। অর্থাৎ যখন কেউ মনে করবে আমার বদলানো প্রয়োজন তখনই সে নিজ থেকে অন্তর থেকে প্রতিজ্ঞা বদ্ধ হয়ে পরিবর্তনের চেষ্টা করবে এবং বারবার চর্চার মাধ্যমে এক সময় বদ অভ্যাস সুঅভ্যাসে পরিণত হবে। কোনো কোনো গবেষক মনে করেন অন্তত ২১ বার ধারাবাহিক চেষ্টা বা চর্চার মাধ্যমে একটি কাজ অভ্যাসে পরিণত হয়। যেমন আমার অনেকেই রাস্তায় চলতে ফিরতে রাস্তায় কাগজ পত্র ছুড়ে ফেলি (যা উন্নত দেশে কেউ করে না) যদি কেউ এই বদঅভ্যাস বদলাতে চায় তবে তাকে মনে মনে সিদ্ধান্ত নিতে হবে আমি আজ থেকে রাস্তায় ময়লা ফেলবো না। তার পরেও মাঝে মাঝে ফেলা হয়ে যেতে পারে তখন ভাবতে হবে কাজটি ঠিক হলো না, অপরাধ বোধ কাজ করবে এই ভাবে ২/৩ সপ্তাহের চেষ্টা বা চর্চায় না ফেলার অভ্যাস হবে। একইভাবে রাগ নিয়ন্ত্রণের ক্ষেত্রে ‘মনে মনে সিদ্ধান্ত নিতে হবে’ আজ আমি কোনো অবস্থাতেই রাগ করব না যা কিছু হোক যা কিছু ঘটুক মাথা ঠাণ্ডা রেখে পরিস্থিতি মোকাবেলা করব’। এমন করে চর্চার মাধ্যমে খারাপ অভ্যাসগুলো দূর করা যায়। জীবনকে সুন্দর করতে হলে একজন আদর্শ মানুষ হতে হলে ভালো কাজের অভ্যাস গড়ে তুলতে হবে। প্রয়োজন দৃঢ় প্রতিজ্ঞা এবং চর্চা Copy to:bhorekagoj.com

ভিডিও কলে ডাক্তারের পরামর্শ পেতে Play Store থেকে ডাউনলোড করুন Bissoy অ্যাপ
Call

স্বভাব আসলে একজন মানুষের একটা Fundamental ব্যাপার। অনেক কিছুর ওপর ভিত্তি করে মানুষের স্বভাব গড়ে ওঠে। তাই এটা পরিবর্তন করাটা একটা জটিল কাজ। আর হুট করে পাল্টানো তো রীতিমত অসম্ভব ব্যাপার।


তারপরেও আপনি যদি নিজের স্বভাব পাল্টাতে চান তাহলে আপনাকে জানতে হবে স্বভাব গড়ে ওঠার উপাদানগুলো কি কি -

  • আপনার অতীত পরিবেশ (যেখানে ছোট থেকে বড় হয়েছেন)
  • আপনার বর্তমান পরিবেশ (যেখানে বর্তমানে আছেন)
  • আপনার ফ্যামিলি মেম্বারস ও তাদের ব্যক্তিত্ব
  • আপনার আর্থ সামাজিক অবস্থান
  • আপনার শিক্ষাগত যোগ্যতা ও দূরদর্শীতা
  • আপনার নিজের কল্পনা ও চিন্তা করতে পারার ক্ষমতা
  • আপনার ক্লাসমেট, বন্ধুবান্ধব সহ আরো যাদের সাথে মেশেন তাদের আচার আচরণ
এগুলো সহ আরো নানা ব্যাপার সেপার আছে যেগুলো আপনার স্বভাব গঠনের জন্য দায়ী। এখন আপনি যদি নিজেকে পাল্টাতে যান তাহলে দেখা যাবে External Factors (যেগুলোর নিয়ন্ত্রণ আপনার হাতে নেই) গুলো আপনি বদলাতে পারবেন না। কিন্তু সেগুলো ইতোমধ্যেই আপনার স্বভাব গঠনে যথেষ্ট ভূমিকা রেখেছে।
কিন্তু যেগলো আপনার নিয়ন্ত্রণে আছে সেগুলো পাল্টানোর মাধ্যমে আপনি আপনার ব্যক্তিত্ব এবং স্বভাব দুটোই পাল্টাতে পারবেন। সবচেয়ে জরুরী হল আপনি কেমন হতে চান সেটা। আর আপনার চিন্তা ও কল্পনা করতে পারার ক্ষমতা এক্ষেত্রে মূল ভূমিকা রাখবে।

আপনার Thinking Power, Imagination Power এই দুটো যদি শক্তিশালী হয় তাহলে এর মাধ্যমে আপনি বিভিন্ন ব্যাপারে চিন্তা করে নিজেকে অন্য উচ্চতায় নিতে পারবেন। কারণ এই দুটো যদি শক্তিশালী হয় তাহলে আপনি কি করছেন, কেন করছেন যা করছেন তা ঠিক আছে কিনা সেসব নিয়ে ভাবতে থাকবেন। আর আপনার চিন্তাকে গাইড করবে কে? ঐ যে একটু আগে বললাম। আপনি নিজেকে কেমন দেখতে চান সেটা।

এখন আপনার চিন্তা ও কল্পনাকে জাগানোর দায়িত্ব আপনারই। আপনার নিজে থেকেই অনুভব করতে হবে আপনার কোন ব্যাপারগুলো ভাল আর কোন ব্যাপারগুলো খারাপ। আপনার যদি মনে হয় মানুষের প্রতি আপনার আচরণ খারাপ তাহলে বলব সবার প্রতি শ্রদ্ধাশীল হতে শিখুন। তাহলে আপনার আচরণ আরো নম্র হবে। আপনার যদি মনে হয় আপনি লাজুক স্বভাবের তাহলে আস্তে আস্তে নিজেকে মেলে ধরতে শিখুন। অহেতুক লজ্জা কমে আসবে। আপনার যদি নিজেকে বেশীরকম উগ্র আর Aggressive মনে হয় তাহলে নিজের চাইতে অন্যদের ভাল গুণগুলো লক্ষ্য করতে থাকুন। দেখবেন নিজের এই ধরণের ভাবগুলো নিয়ন্ত্রণে আসতে থাকবে।

আপনি যেহেতু সরাসরি নিজের স্বভাব নিয়ে কিছু প্রকাশ করেন নি তাই আর কিছু লেখার মত সুযোগ পাচ্ছিনা। তবে আশা করি লেখাটা আপনার কাজে লাগবে। ধন্যবাদ।
ভিডিও কলে ডাক্তারের পরামর্শ পেতে Play Store থেকে ডাউনলোড করুন Bissoy অ্যাপ