শেয়ার করুন বন্ধুর সাথে
Call

বহু বিশেষজ্ঞের কাছে মারিজুয়ানা বা গাঁজা এক ধরনের ওষুধ। অনেক দেশে চিকিৎসার কাজে গাঁজার ব্যবহার চলছে। এটা একটা উদ্ভিদ যা বিশেষ ধরনের মৃগীরোগের চিকিৎসায় ওষুধের কাজ করে।

কিন্তু অনেকের কাছ তা নেশার উপকরণ। আসলে গাঁজা খেলে মন-মস্তিষ্কে অনেক কিছু ঘটে। এটা এমন এক উদ্ভিদ যা মনের ওপর প্রভাব ফেলে। অন্যান্য নেশা দ্রব্য ব্যবহার থেকে বাঁচতে বা মানসিক রোগের চিকিৎসাতেও গাঁজার ব্যবহারের প্রচলন রয়েছে। এখানে বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, গাঁজা আসলে মন ও মস্তিষ্কে কি ঘটায়?

১. গাঁজায় আছে টেট্রাহাইড্রোক্যানাবিনোল (টিএইচসি)। এটা মস্তিষ্কে এমন এক অংশে কাজ করে যে অংশটি সুখকর অনুভূতির সৃষ্টি করে। কাজেই পেটপুরে খাওয়া বা সেক্সের মতোই সুখ দেয় গাঁজা।

২. গাঁজা সেবনের পর হৃদস্পন্দন প্রতি মিনিটে ২০-৫০টি বেড়ে যায়। এ অবস্থা ২০ মিনিট থেকে ৩ ঘণ্ট পর্যন্ত স্থায়ী থাকে।

৩. গাঁজায় আরো আছে ক্যানাবিডিওল (সিবিডি)। এটি থেরাপির কাজ করে। বিশেষ ধরনের ব্যথানাশক হিসাবে দারুণ কাজের এটি। শিশুকালে কারো মৃগীরোগ থাকলে উপকার মেলে।

৪. বেশ কিছু ক্ষুদ্র গবেষণায় দেখা গেছে, বেশ কিছু অস্বাস্থ্যকর বিষয় থেকে মুক্তি দেয় গাঁজা। দেহের প্রদাহ বিনাশ করে। রিউমাটয়েড আর্থ্রাইটিসের মতো যন্ত্রণাদায়ক রোগ উপশমে কার্যকর ভূমিকা রাখে।

৫. কয়েকটি গবেষণায় বলা হয়, ক্রোন বা আলসারেটিভ কলিটিসের মতো প্রদাহপূর্ণ পেটের অসুখে গাঁজা উপকারী। তবে আরো বেশ কিছু গবেষণায় বলা হয়, গাঁজা এতে কাজ করে না। ২০১৪ সালের এক গবেষণায় ক্রনিক ক্রোনের ক্ষেত্রে এক দল রোগীকে গাঁজা ও অন্য একটি দলকে প্লেসবো দেওয়া হয়। প্রথম দলটি দারুণ উপকৃত হয়।

৬. ছোটকালে যাদের মৃগীরোগ দেখা দেয় তাদের জন্যে বহুল ব্যবহৃত ওষুধটি হলো এপিডিওলেক্স। এতে আছে ক্যানাবিডিওল যা গাঁজা থেকে সংগৃহিত হয়। এটা আমেরিকার ফুড অ্যান্ড ড্রাগ অ্যাডমিনিস্ট্রেশন কর্তৃক অনুমোদিত প্রথম ওষুধ।

৭. সেরেবেলাম এবং বাসাল গ্যাংলিয়া মস্তিষ্কের দুটি অংশ যা দেহের ভারসাম্য রক্ষা, সমন্বয় সাধন, প্রতিক্রিয়া এবং অঙ্গবিন্যাসের ক্ষেত্রে কাজ করে।

৮. গাঁজার একটি বিশেষ প্রভাব হলো, সময় খুব দ্রুত বয়ে যায় বা সময় কাটতেই চায় না এমন অনুভূতি হওয়া। ২০১২ সালের এক গবেষণায় বলা হয়, গাঁজা সেবনকারীরা ৭০ শতাংশ সময় সঠিকভাবে বুঝতে পারেন না। ১৯৯৮ সালের আরেকটি গবেষণায় বলা হয়, গাঁজা মস্তিষ্কের সেরেবেলাম অংশে রক্ত চলাচলে প্রভাববিস্তার করে। এমআরআই পরীক্ষায় দেখা গেছে, এতে সময়জ্ঞান কাজ করে না।

৯. গাঁজা দেহের রক্তনালীকে প্রসারিত করে। এর লক্ষণ প্রকাশ পায় চোখে। এ সময় চোখ দুটো লাল হয়ে যায়।

১০. যারা মাঝে মাঝে বা সব সময় গাঁজা খেয়ে থাকেন, তাদের ক্ষুধা বেড়ে যায়। গাঁজা মস্তিষ্কের এমন একটি অংশকে প্রভাবিত করে যা ক্ষুধা নিয়ন্ত্রণ করে। সম্প্রতি ইঁদুরের ওপর পরিচালিত এক গবেষণায় এসব তথ্য দেওয়া হয়।

১১. মস্তিষ্কে যে প্রক্রিয়ায় স্মৃতিশক্তি সঞ্চয় করে, তাতে বাধ সাধে গাঁজা। বেশ কিছু গবেষণায় বলা হয়, স্মৃতিশক্তি কমিয়ে দেয় গাঁজা। তবে অনেকের মতে, এর সঙ্গে গাঁজার কোনো সম্পর্ক নেই।

১২. বৈজ্ঞানীক গবেষণায় বলা হয়নি যে, গাঁজা বিষণ্নতা আনে বা বিষণ্ন মানুষ গাঁজায় আসক্ত হয়। তবে নেদারল্যান্ডসের এক গবেষণায় বলা হয়, যারা বিষণ্নতায় ভোগেন, গাঁজা তাদের এ সমস্যা আরো বৃদ্ধি করতে পারে। 

সূত্র : এমএসএন

ভিডিও কলে ডাক্তারের পরামর্শ পেতে Play Store থেকে ডাউনলোড করুন Bissoy অ্যাপ