একটা প্রতিবন্ধী মেয়েকে একজন বিয়ে করতে ভয় পায়। ছেলের ও মেয়ের পরিবারের একটা চিন্তা যে, মেয়েটির গর্ভেও প্রতিবন্ধী বাচ্চা আসবে নাতো? মেয়েটির একটি পা অনেক শর্ট। প্রতিবন্ধীর গর্ভে প্রতিবন্ধী বাচ্চা আসার সম্ভাবনা কতটুকু?
শেয়ার করুন বন্ধুর সাথে
Call

প্রতিবন্ধব মেয়েকে বিয়ে করলেই যে প্রতিবন্ধি বাচ্চা হবে এরকম কোনো কথা বিজ্ঞান বিশ্বাস করে না। প্রতিবন্ধি বাচ্চা যে কারনে হতে পারে। প্রতিবন্ধী শিশু ঠিক কী কারণে হয় তার সঠিক ব্যাখ্যা দেয়া কঠিন তবে কিছু কারণ উল্লেখ করা যায় যার কারণে প্রতিবন্ধী শিশু জন্মগ্রহণ করে। গর্ভবতী অবস্থায় ঔষধ গ্রহণ :- গর্ভাবস্থায় শিশুর মা যদি ডাক্তারের পরামর্শ ছাড়াই নানা প্রকার ঔষধ খেতে থাকে, তা শিশুর জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর হতে পারে। অনেক ঔষধ ভ্রুনের অঙ্গ সৃষ্টিতে বাঁধার সৃষ্টি করে ফলে শিশু যে কোন ধরনের বিকলাঙ্গ বা প্রতিবন্ধিতা নিয়ে জন্মগ্রহণ করতে পারে। গর্ভবতী মায়ের অপুষ্টি :- গর্ভবতী মা যদি দীর্ঘদিন যাবৎ রক্তাল্পতায় ভোগেন, পর্যাপ্ত পুষ্টিকর খাবার না খান তবে ভ্রুনের গঠনগত বিকলাঙ্গড় দেখা দেয়, মস্তিস্কের বিকাশ ব্যাহত হয়, ফলে শিশু বিকলাঙ্গ অথবা প্রতিবন্ধী হয়। দেখা যায় এই কারণেই বাংলাদেশে ৩৭ শতাংশ নবজাতক কম ওজন নিয়ে জন্মায় এবং তাদের অর্ধেকেরই মৃত্যু পর্যন্ত ঘটে জন্মের প্রথম ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে। গর্ভাবস্থায় মায়ের রোগসমূহ :- গর্ভাবস্থায় প্রথম তিন মাসে মা যদি যক্ষ্মা, ম্যালেরিয়া, জার্মানহাম, চিকেনপক্স, মাম্পস, রুবেলা ভাইরাস, এইডস ইত্যাদি রোগে আক্রান্ত হন তবে গর্ভস্থ শিশুর উপর তার প্রভাব অত্যন্ত ক্ষতিকর হয়। এর ফলে শিশু শারীরিকভাবে বিকলাঙ্গ ও মানসিক প্রতিবন্ধী হতে পারে। এ ছাড়া মায়ের ডায়াবেটিস, উচ্চরক্ত চাপ, কিডনির সমস্যা, থাইরয়েড গ্রন্থির সমস্যা প্রভৃতি শারীরিক অবস্থায় গর্ভস্থ শিশু প্রতিবন্ধী হতে পারে। মায়েরা ফরমালিন দেয়া খাদ্য খেলে :- মায়েরা ফরমালিন দেয়া খাদ্য খেলে বিকলাঙ্গ শিশু জন্ম নিতে পারে। এর পাশাপাশি সন্তানেরা বোকা হাবা-গোবা হয়ে যেতে পারে। মায়ের বয়স :- গর্ভধারনের সময় মায়ের বয়স কম বা বেশি দুটিই শিশুর জীবনের জন্য ঝুঁকি পূর্ণ। অপরিণত বয়সে প্রজণন অঙ্গের বিকাশ সম্পূর্ণ হয় না। তাই অপরিণত বয়সে মা হলে ত্রুটিপূর্ণ শিশু জন্ম হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। আবার বেশি বয়সে অন্ত:ক্ষরা গ্রন্থির স্বাভাবিক কার্যাবলি হ্রাস পায়। তাই ৩৫ বৎসরের পর যে সব মহিলা প্রথম সন্তান জন্ম দেন, সে সব শিশু বিকলাঙ্গ বা প্রতিবন্ধী হওেয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে। গর্ভাবস্থায় ঘণ ঘণ খিঁচুনি :- গর্ভাবস্থায় মা যদি ঘন ঘন খিঁচুনি রোগে আক্রান্ত হন তবে গর্ভস্থ শিশুর শরীরে অক্সিজেনের অভাব ঘটে ও তার মস্তিস্কের ক্ষতি করে। ফলে শিশু মানসিক প্রতিবন্ধী বা বিকলাঙ্গ হতে পারে। গর্ভাবস্থায় তেজস্ক্রিয় পদার্থের প্রবেশ :- গর্ভাবস্থায় বিশেষত প্রথম তিন মাস এক্স-রে বা অন্য কোনো ভাবে মায়ের দেহে যদি তেজস্ক্রিয় রশ্মি প্রবেশ করে তবে গর্ভস্থ ভ্রুণের নার্ভতন্ত্র ক্ষতিগ্রস্থ হয়। ফলে শিশু মানসিক প্রতিবন্ধী বা বিকলাঙ্গ হয়। মা বাবার রক্তের Rh উপাদান :- মা যদি Rh পজেটিভ আর বাবা যদি Rh নেগেটিভ হয় তা হলে গর্ভস্থ সন্তানের Rh পজেটিভ বা নেগেটিভ হতে পারে। মা ও সন্তানের Rh উপাদানের মধ্যে যদি মিল না থাকে তবে তাকে Rh অসংগতা Rh Incompatiability বলা হয়। এতে মৃত সন্তান হয়। আর যদি শিশু বেঁচে যায় তাহলে পক্ষাঘাতগ্রস্থ বা মস্তিস্কের ত্রুটি নিয়ে জন্মায়।

ভিডিও কলে ডাক্তারের পরামর্শ পেতে Play Store থেকে ডাউনলোড করুন Bissoy অ্যাপ

আপনার বাবা/দাদা/বংশের কেউ প্রতিবন্ধী না হলে গ্রেগর জোহান মেন্ডেল এর বংশগতিবিদ্যা (Heredity) তত্ত্বানুসারে আপনার স্ত্রীর সন্তান প্রতিবন্ধী হওয়ার সম্ভাবনা নেই। তবে আপনার নাতি/নাতনির প্রতিবন্ধী হওয়ার সম্ভাবনা ২৫% বা চার ভাগের এক ভাগ। আর যদি আপনার বংশে কেউ প্রতিবন্ধী থাকেন, তবে আপনার সন্তানেরই প্রতিবন্ধী হওয়ার সম্ভাবনা ২৫% প্রতিটি মানুষের দুধরণের ক্রোমোজোম থাকে। ছেলেদের XY আর মেয়েদের XX। যেহেতু উভয়ের কাছ থেকে আলাদা ক্রোমোজম আসবে তাই আপনি প্রতিবন্ধী জিনের বাহক না হলে শুধু আপনার স্ত্রীর প্রতিবন্ধী হওয়ায় সন্তান প্রতিবন্ধী হবে না।

ভিডিও কলে ডাক্তারের পরামর্শ পেতে Play Store থেকে ডাউনলোড করুন Bissoy অ্যাপ