ইসলাম ও খ্রিস্টান উভয় ধর্মই ঐতিহ্যগত সাংস্কৃতিক নারী খৎনার চর্চার শিকার।  wikipedia তে এটা বলা আছে।তাহলে কি এটা সত্য
শেয়ার করুন বন্ধুর সাথে

সমর্থন করে তবে মেয়েদের জন্য বাধ্যতামূলক না......

ভিডিও কলে ডাক্তারের পরামর্শ পেতে Play Store থেকে ডাউনলোড করুন Bissoy অ্যাপ
Muawiz

Call
ইসলামে নারীদের খৎনা।
নারীদের খৎনা করা সুন্নাত। এটি যদি মধ্যমপন্থা অবলম্বন করে করা হয়, তাহলে এতে খারাপ বা ক্ষতিকর কিছুই থাকে না। কিন্তু যদি খৎনা করতে গিয়ে গভীরভাবে কেটে ফেলা হয়, এতে নানাবিধ ক্ষতি হয়।
আমরা এমন কোনো হাদিস জানি না যেখানে নবী করিম (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাঁর স্ত্রী এবং কন্যাদেরকে খৎনা করার জন্য আদেশ করেছেন। তবে এই মর্মে বর্ণিত আছে যে, মদিনার এক নারী নারীদের খৎনা করাতো। রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাকে বলেছিলেন যাতে সে সঠিকভাবে খৎনা করায়। আবু দাঊদ (৫২৭১), আল তাবারানির আল আওসাত এবং আল বায়হাক্বির আল শুয়া’ব গ্রন্থে আছে, উম্মে আতিয়্যাহ আল আনসারিয়্যাহ বর্ণনা করেন যে, মদিনায় একজন মহিলা খৎনা করাতো। নবী আকরাম (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাকে বললেন, “বেশি গভীর করে কাটতে যেও না, এটা মহিলাদের জন্য ভালো এবং তাদের স্বামীদের কাছে অধিক পছন্দনীয়।” শায়খ আলবানি হাদিসটিকে তাঁর সহীহ আবু দাঊদ গ্রন্থে সহীহ বলেছেন।
অন্য বর্ণনা থেকে পাওয়া যায়, “কিছু অংশ কাটো এবং অতিরিক্তি করো না।”
আরো কিছু দলীল-প্রমাণ থেকে নারীদের খৎনার সাধারণ অনুমোদনের ব্যাপারে জানা যায়। যেমন, বুখারি (৫৮৯১) এবং মুসলিমে (৫২৭) আবু হুরায়রাহ (রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু) হতে বর্ণিত আছে যে, রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন, “ফিতরাত হলো পাঁচটি কাজ অথবা পাঁচটি কাজ হলো ফিতরাতের অংশ। খৎনা করা, গোপনাঙ্গের চুল কামানো, গোঁফ ছাঁটা, নখ কাটা এবং বগলের চুল উঠানো।”
সহীহ মুসলিমে (৩৪৯) আয়েশা (রাদ্বিয়াল্লাহু আনহা) হতে বর্ণিত আছে যে, নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, “যখন একজন পুরুষ চার অংশের মধ্যে বসে (তার স্ত্রীর দুই বাহু আর দুই পায়ের মাঝখানে) এবং দুইটি খৎনা-কৃত অংশ মিলিত হয় (অর্থাৎ, সহবাস), তখন গোসল ফরয হয়ে যায়।”
তিরমিযি (১০৯) ও অন্যান্য বর্ণনানুসারে, “যখন দুইটি খৎনা-কৃত অংশ মিলিত হয়............।”
ইমাম বুখারি একটি অধ্যায়ের শিরোনামে উক্ত শব্দগুচ্ছ ব্যবহার করেছেন।
আল হাফিয ইবন হাযার (রাহমাতুল্লাহ আলাইহি) বলেন, “উপর্যুক্ত উপমা দিয়ে যা বুঝানো হয়েছে তা হলো, যখন পুরুষ এবং মহিলার খৎনা-কৃত অংশ মিলিত হয়।”
মহিলাদের খৎনা করা হয় মূত্রনালীর প্রবেশদ্বারের বাইরে থাকা চামড়ার একটি ছোট অংশ কাটার মাধ্যমে যা দেখতে অনেকটা মোরগের ঝুঁটির মতো। সুন্নাত হলো এর সম্পূর্ণ অংশ না কেটে কিছু অংশ কাটা। আল মায়সুয়া’হ আল ফিকহিয়্যাহ (১৯/২৮)
ইবন কুদামাহ (রাহমাতুল্লাহ আলাইহি) আল মুঘনিতে বলেন, “খৎনা করা পুরুষদের জন্য ফরয, আর মেয়েদের জন্য একটি সম্মান কিন্তু তাদের জন্য ফরয নয়।” এটাই অনেক আলেমের মত। ইমাম আহমাদ বলেন, “এটা পুরুষদের জন্য অধিক জরুরি তবে মহিলাদের জন্য এত জরুরি নয়।” (আল মুঘনি-১/৭০)।
মহিলাদের খৎনা করা হয় মূত্রনালির প্রবেশদ্বারের বাইরে থাকা ভগাঙ্কুরের একটি অংশ কাটার মাধ্যমে। সুন্নাত হলো এর সম্পূর্ণ অংশ না কেটে কিছু অংশ কাটা। (আল মায়সুয়া’হ আল ফিকিয়্যাহ-১৯/২৮)।
এ ব্যাপারে মহিলাদের মতামত নেওয়াই ভালো। যদি ভগাঙ্কুর বড় হয়, তাহলে এর কিছু অংশ কাটা যেতে পারে, অন্যথায় এটা না করলেও চলে। একেকজনের ভগাঙ্কুরের আকারে পার্থক্য থাকে এবং উষ্ণ জলবায়ু ও শীতল জলবায়ুর কারণেও পার্থক্য দেখা দিতে পারে।
কীভাবে খৎনা করতে হবে এই নিয়ে উম্মে আতিয়্যাহর যে হাদিসটি বর্ণিত হয়েছে, তা আবু দাঊদের মতে যঈফ (দুর্বল)। তবে ইসলামে নারীদের খৎনার অনুমোদনের বিধান মূলত এই হাদীস থেকে গৃহীত হয়নি। বরং উপরোল্লেখিত বুখারিমুসলিম-এর সহীহ হাদিসগুলো থেকে এ রায় দেওয়া হয়েছে। তবে এর বাধ্যবাধকতার ব্যাপারে আলেমগণ মতভেদ করেছেন। তিন রকমের মত আছে-
(১) পুরুষ ও মহিলা উভয়ের জন্যই এটা ফরয। এটাই শাফেঈ এবং হাম্বলি মাযহাবের মত। মালেকিদের মধ্যে আল ক্বাদি আবু বকর ইবন আল আরাবি (রাহমাতুল্লাহ আলাইহি) এই মতকে সমর্থন করেছেন।
ইমাম নববি (রাহমাতুল্লাহ আলাইহি) আল মাজমু (১/৩৬৭) গ্রন্থে বলেন, আমাদের মতে পুরুষ ও মহিলা উভয়ের জন্যই খৎনা করা ফরয। আল খাত্তাবির মতে এটাই অনেক সালাফের মত। তাঁদের মধ্যে একজন হলেন আহমাদ, তিনিও এটাকে ফরয বলেছেন। এটাই সুপরিচিত সঠিক মত এবং ইমাম শাফেঈ হতে বর্ণিত, এবং অধিকাংশই বলেছেন, পুরুষ ও মহিলা উভয়ের জন্য এটা ফরয। (দেখুন- ফাতহ আল-বারি ১০/৩৪০; কিশশাফ আল-ক্বিনা ১/৮০)
(২) পুরুষ ও মহিলা উভয়ের জন্যই খৎনা করা সুন্নাত। এটা হানাফি ও মালেকিদের মত, এবং ইমাম আহমাদের এ বিষয়ে একটি বর্ণনা পাওয়া যায়। ইবন আবেদীন আল হানাফি (রাহমাতুল্লাহ আলাইহি) তাঁর হাশিয়াহ (৬/৭৫১) গ্রন্থে বলেন, আল সিরাজ আল ওয়াহহাজ-এর কিতাবুৎ তাহারাহ-তে আছে, জেনে রাখো যে খৎনা করা আমাদের (হানাফিদের) মতে পুরুষ ও মহিলা উভয়ের জন্যই সুন্নাত। (দেখুন- মাওয়াহিব আল জালিল ৩/২৫৯)।
(৩) খৎনা করা পুরুষদের জন্য ফরয এবং মহিলাদের জন্য উত্তম ও মুস্তাহাব। এটা ইমাম আহমাদের তৃতীয় একটি মত এবং কিছু মালেকিও এই মতকে সমর্থন করেন, যেমন সাহনুন। আল মুয়াফাক্ব ইবন ক্বুদামাহও তাঁর আল মুঘনি গ্রন্থে এই মতকে সমর্থন করেছেন। (দেখুন- আল তাহমিদ ২১/৬০; আল মুঘনি ১/৬৩; ফতোয়া আল লাজনাহ আল দা’ইমাহ ৫/২২৩)।
খৎনা করা সুন্নাত, পাঁচটি ফিতরাতের মধ্যে একটি এবং তা পুরুষ ও মহিলা উভয়ের জন্যই। ব্যতিক্রম হচ্ছে, এটা পুরুষদের জন্য বাধ্যতামূলক কিন্তু মহিলাদের জন্য সুন্নাত এবং উত্তম।
তাই এটা স্পষ্ট যে, খৎনা করার বিধান পুরুষ ও মহিলা উভয়ের জন্যই প্রযোজ্য এই বিষয়ে ইসলামের সকল ফকিহগণ একমত। কেউ একে মাকরুহ অথবা হারাম বলেননি।
ভিডিও কলে ডাক্তারের পরামর্শ পেতে Play Store থেকে ডাউনলোড করুন Bissoy অ্যাপ
Call

ইসলামী শরীয়তে মহিলাদের খাতনা করার বিধান রয়েছে। বিদ্বানগণ খাতনা করার হকুম এর ব্যাপারে তিনটি মতামত পেশ করেছেন। (১) নারী পুরুষ সকলের খাতনা করা ওয়াজিব। (২) উভয়ের জন্য খাতনা করা মুস্তাহাব। (৩) পুরুষের জন্য ওয়াজিব ও নারীর জন্য মুস্তাহাব। ইবনে কুদামা মুগনি গ্রন্থে বলেনঃ খাতনা করা পুরুষের জন্য ওয়াজিব। আর মহিলাদের জন্য সম্মানজনক কাজ। এটা তাদের প্রতি ওয়াজিব নয়। অনেক আলিম এ অভিমত পেশ করেছেন। আয়িশা (রাঃ) হতে বর্ণিত আছে, তিনি বলেন, পুরুষাংগের খাতনার স্থান স্ত্রীর খাতনার স্থান অতিক্রম করলে গোসল ওয়াজিব হয়ে যায়। আমি 'আয়িশা' ও রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এরূপ করেছি, অতঃপর আমরা গোসল করেছি। (সূনান আত তিরমিজী হাদিস নম্বরঃ ১০৮ হাদিসের মানঃ সহিহ)। এখানে হাদিসের ﺍﻟﺨﺘﺎﻥ শব্দটি দ্বারা নারী- পুরুষের যৌনাংগের কর্তিত স্থানকে বুঝানো হয়েছে। সুতরাং এ দ্বারা স্পষ্ট হয়ে যায় যে, মহিলারা খাতনা করতেন। নারীদের খাতনা করার ব্যাপারে অনেক হাদীস বর্ণিত হয়েছে, তবে একটিও ক্রটিমুক্ত নয়। তন্মধ্যে নারীদের খাতনা করা সম্পর্কে উম্মে আত্বীয়া বর্ণিত হাদীসঃ সুলায়মান ইবন আবদুর রহমান (রহঃ) উম্মু আতীয়া নামক জনৈকা আনসারী থেকে বর্ণিত যে, মদীনাতে একজন মহিলা মেয়েদের খাতনা করতো। তখন নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে বলেনঃ তুমি মেয়েদের লিংগাংগ্র বেশী গভীর করে কাটবে না। কেননা, এটা মেয়েদের শরীরের এমন একটা অংশ, যা পুরুষদের কাছে খুবই প্রিয়। (সূনান আবু দাউদ হাদিস নম্বরঃ ৫১৮১ হাদিসের মানঃ সহিহ)। অপর বর্ণনায় রয়েছেঃ অর্থাৎ যখন নারীদের খাতনা করবে, তখন একে বারে কেটে শেষ করে দিও না। কেননা এতে চেহারা উজ্জল থাকবে এবং স্বামীর জন্য তা তৃপ্তিদায়ক হবে। এ হাদীস এর সনদ দুর্বল, যদিও আলবানী সিলসিলা সহীহাহ গ্রন্থে হাদীস নং ৭২২ সহীহ বলেছেন। ব্যাপারটি এরূপ হওয়ার ফলে এক দল বলেনঃ এসব হাদীস যঈফ হলেও পুরুষের ন্যায় মহিলাদের খাতনা করা ওয়াজিব। কেননা নারী-পুরুষ উভয়েই শরীয়াতের বিধান পালনে সমধিকারী, যতক্ষণ না বিধানগতভাবে উভয়কে পৃথক করার দলীল বর্ণিত হয়। অথচ এরূপ দলীল বর্ণিত হয় নি। আর অপর একদল বলেনঃ এটা মহিলাদের জন্য মুস্তাহাব ও সম্মানজনক কাজ এটা ওয়াজিব নয়। আর নারী পুরুষের মাঝে পৃথক করার কারণ হলো, পুরুষদের খাতনা করায় অনেক কল্যাণ রয়েছে। এর ফলে সালাতের জন্য পবিত্র হওয়ার যে শর্ত রয়েছে তা রক্ষা পায়। কেননা পুরুষাঙ্গের অগ্রভাগের এ চামড়াটি যদি কাটা না হয়, তাহলে তাতে পেশাব অবশিষ্ট ও জমা হয়ে থাকে। আর মহিলাদের খাতনা করার ফলে তাদের কামভাব হরাস পায়, অথচ এটা পরিপূর্ণ পাওয়াটা স্বাভাবিকতার দাবী। মূলতঃ তাদের কষ্ট দূর করার জন্য খাতনা করা হয় না।

ভিডিও কলে ডাক্তারের পরামর্শ পেতে Play Store থেকে ডাউনলোড করুন Bissoy অ্যাপ