Ataullah mdc ভাইয়ার     এই উত্তর টি দেখে আমাকে হাক্কানী পীর সম্পপর্কে কেউ বলবেন প্লিিজ। কোরআন কি পীর কে সমর্থন করে। Atullah mdc ভাই বলেছে  যারা হক্কানী পীর তাদের বিশ্বাস করি। এবং হক্কানী পীরের মুরিদ হওয়া সকলের উচিৎ। আসলেই এই কথা টা কি ঠিক। যদি ঠিক হয় তাহলে   রেফারেন্স থাকবে উত্তরে।



শেয়ার করুন বন্ধুর সাথে

আমি  Ataullah mdc ভাইয়ের কথার সমর্থনে দুটি কুরআনের আয়াত তুলে ধরছি। আশাকরি আপনার উপকার হবে।-


يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا أَطِيعُوا اللَّهَ وَأَطِيعُوا الرَّسُولَ وَأُولِي الْأَمْرِ مِنْكُمْ فَإِنْ تَنَازَعْتُمْ فِي شَيْءٍ فَرُدُّوهُ إِلَى اللَّهِ وَالرَّسُولِ إِنْ كُنْتُمْ تُؤْمِنُونَ بِاللَّهِ وَالْيَوْمِ الْآخِرِ ذَلِكَ خَيْرٌ وَأَحْسَنُ تَأْوِيلًا.

অর্থাৎ হে ঈমানদারগণ! আল্লাহর নির্দেশ মান্য কর, নির্দেশ মান্য কর রসূলের এবং তোমাদের মধ্যে যারা বিচারক তাদের। তারপর যদি তোমরা কোন বিষয়ে বিবাদে প্রবৃত্ত হয়ে পড়, তাহলে তা আল্লাহ ও তাঁর রসূলের প্রতি প্রত্যর্পণ কর-যদি তোমরা আল্লাহ ও কেয়ামত দিবসের উপর বিশ্বাসী হয়ে থাক। আর এটাই কল্যাণকর এবং পরিণতির দিক দিয়ে উত্তম। [সূরা নিসা: আয়াত ৫৯ ]

فَاسْأَلُوا أَهْلَ الذِّكْرِ إِنْ كُنْتُمْ لَا تَعْلَمُونَ

অর্থাৎ...অতএব জ্ঞানীদেরকে জিজ্ঞেস কর, যদি তোমাদের জানা না থাকে[সূরা নাহাল: আয়াত ৪৩]

 


ভিডিও কলে ডাক্তারের পরামর্শ পেতে Play Store থেকে ডাউনলোড করুন Bissoy অ্যাপ

বাইয়াত শব্দটি ‘বাইউন’ শব্দ থেকে নির্গত হয়েছে। যার অর্থ হল ক্রয়- বিক্রয় করা। এক্ষেত্রে ক্রয়-বিক্রয় এর অর্থ হচ্ছে, নিজেকে আল্লাহ রাব্বুল আলামীনের নিকট বিক্রি করে দেয়া এবং তার পরিবর্তে আল্লাহ তাআলার পক্ষ হতে জান্নাত খরিদ করে নেয়া। কুরআনে কারিমে সূরায়ে সফে আল্লাহ রাব্বুল আলামীন এ ক্রয়-বিক্রয়ের কথা এভাবে উল্লেখ করেছেন- ‘মুমিনগণ! আমি কি তোমাদেরকে এমন বাণিজ্যের সন্ধান দেব, যা তোমাদেরকে যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি থেকে মুক্তি দেবে? তা এই যে, তোমরা আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করবে এবং আল্লাহর পথে নিজেদের ধন সম্পদ ও জীবনপণ করে জিহাদ করবে। এটাই তোমাদের জন্য উত্তম, যদি তোমরা বুঝ।’ (সফ : ১০, ১১) পারিভাষিকভাবে বাইয়াত বলা হয়, শরিয়তের কোন বিষয়ের উপর মানুষদের থেকে অঙ্গিকার নেওয়া যে, ঐ কাজটি সম্পাদন করবে। এই অঙ্গিকার পূর্ণাঙ্গ শরিয়তের উপরও হতে পারে অথবা নির্দিষ্ট কোন মাসআলার উপরও হতে পারে। বাইয়াত এর প্রকারভেদ : কুরআন ও সুন্নাহর মাধ্যমে তিন প্রকারের বাইয়াত পাওয়া যায়। জিহাদের বাইয়াত : অর্থাৎ, সংশ্লিষ্ট আমিরের হাতে তাঁর নির্দেশ অনুযায়ি জিহাদ করার বাইয়াত গ্রহণ করা। যেমন : হুদাইবিয়ার সন্ধির সময় যখন হযরত উসমান রা.-এর শাহাদাতের সংবাদ আসল, তখন সমস্ত সাহাবায়ে কিরাম হুজুর সা. -এর হাতে হযরত উসমান রা. -এর শাহাদাতের বদলা নেওয়ার জন্য বাইয়াত গ্রহণ করেছিলেন। সূরায়ে ফাতাহ এর মধ্যে তা এভাবেই বর্ণিত হয়েছে- ‘যারা আপনার হাতে বাইয়াত গ্রহণ করে, তারা তো আল্লাহর হাতে বাইয়াত গ্রহণ করে। আল্লাহর হাত তাদের হাতের উপর রয়েছে, অতএব যে বাইয়াত ভঙ্গ করে; অবশ্যই সে তা নিজের ক্ষতির জন্যই করে এবং যে আল্লাহর সাথে কৃত অঙ্গিকার পূর্ণ করে আল্লাহ সত্ত্বরই তাকে মহাপুরষ্কার দান করবেন’। (সূরা ফাতাহ : ১০) খিলাফতের বাইয়াত : অর্থাৎ, ইসলামী রাষ্ট্রের খলিফার হাতে তার আনুগত্যের বাইয়াত গ্রহণ করা। যেমন: খোলাফায়ে রাশেদার প্রত্যেকের হাতে সাহাবায়ে কিরাম বাইয়াত গ্রহণ করেছিলেন। আত্মশুদ্ধির জন্য শায়েখের হাতে বাইয়াত : মানুষের অন্তরের ভিতর যে রোগগুলো থাকে তা সংশোধন এবং আমলের উন্নতির জন্য একজন আল্লাহওয়ালার হাতে বাইয়াত গ্রহণ করা। এ প্রসঙ্গে কুরআনে কারিমে ইরশাদ হয়েছে- ‘হে নবী! ঈমানদার নারীরা যখন আপনার কাছে এসে বাইয়াত গ্রহণ করে যে, তারা আল্লাহর সাথে কাউকে শরিক করবে না, চুরি করবেনা, ব্যাভিচার করবে না, তাদের সন্তানদেরকে হত্যা করবে না, জারয সন্তানকে স্বামীর ঔরশ থেকে আপন গর্ভজাত সন্তান বলে মিথ্যা দাবি করবে না এবং ভাল কাজে আপনার অবাধ্যতা করবে না, তখন তাদের আনুগত্য গ্রহণ করুন এবং তাদের জন্য আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করুন। নিশ্চয় আল্লাহ ক্ষমাশীল, অত্যান্ত দয়ালু।’ (মুমতাহিনা : ১২) পীর : পীর শব্দটি ফার্সি। আরবীতে বলা হয় মুর্শিদ। আর মুর্শিদ অর্থ হল পথ প্রদর্শক। যিনি মানুষদেরকে আল্লাহর বিধি- বিধান পালন করার জন্য পথ প্রদর্শন করেন। প্রয়োজনীয়তা : আল্লাহ রাব্বুল আলামীনের বিধানাবলী সাধারণত দুই প্রকার। প্রথমত বাহ্যিক বিধান। যেমন: নামায, রোজা, হজ্ব, যাকাত ইত্যাদি। দ্বিতীয়ত বাতেনী বিধান। যেমন: ইখলাস, সত্যবাদীতা, আল্লাহ পাকের মহব্বত ইত্যাদি। বাহ্যিক বিধানগুলো পালন যেমন জরুরি, বাতেনী বিধানগুলো পালন তেমন জরুরি। এ বাতেনী বিধানগুলো পালন করাকে বলা হয় ইসলাহে নফস, তাযকিয়া বা আত্মশুদ্ধি ইত্যাদি। সাধারণত যেকোনো বিষয়ে জ্ঞান অর্জন করার জন্য উস্তাদের প্রয়োজনীয়তা অনস্বীকার্য। দুনিয়ার যে কোন বিষয়ে জ্ঞান অর্জন করতে হলে উস্তাদের শরণাপন্ন হতে হয়। সে হিসেবে শরিয়তের বাহ্যিক বিধান হোক বাতেনী বিধান হোক তা শিক্ষা গ্রহণ করে ঐ অনুযায়ি আমল করার জন্য কোন না কোন উস্তাদের শরণাপন্ন হতে হবে। শরিয়তের ঐ বাতেনী বিষয়গুলো সম্পর্কে জ্ঞান অর্জন এবং তদানুযায়ি আমল করার জন্য যে উস্তাদের নিকট গমন করা হয়, তাকেই পীর বা মুর্শিদ বলে। কুরআন এবং সুন্নাহর বিভিন্ন যায়গায় এ বাতেনী বিষয়গুলোর উপর আমল করা এবং এর জন্য হক্কানী পীর- মাশায়েখদের শরণাপন্ন হওয়ার বিষয়ে গুরুত্বারোপ করা হয়েছে। যেমন : সূরায়ে তাওবার ১১৯নং আয়াতে বলা হয়েছে, ‘হে ঈমানদার বান্দাগণ! তোমরা আল্লাহকে ভয় কর এবং সত্যবাদীদের সাথে থাক।’ মানুষ যত প্রকার অন্যায় কাজ করে, সকল প্রকার অন্যায় থেকে বিরত থাকার একটি গুরুত্বপূর্ণ উপায় হল অন্তরে আল্লাহর ভয় থাকা। কারণ, আল্লাহর ভয় যদি অন্তরে থাকে তাহলে যে কোন অন্যায় কাজ করতে গিয়ে সে এ কারনেই থমকে দাঁড়াবে যে, আল্লাহ তাআলা আমাকে দেখছে। এর জন্য আমাকে আল্লাহর তাআলার দরবারে জিজ্ঞাসা করা হবে। তাই এই তাকওয়া বা খোদাভীতির মাধ্যমে সকল প্রকার অন্যায় থেকে বিরত থাকা সম্ভব। কিন্তু এই তাকওয়া কিভাবে অর্জন হবে তাও আল্লাহ রাব্বুল আলামীন সাথে সাথে বলে দিয়েছেন যে, ‘তোমরা সত্যবাদীদের সাথী হও’। বস্তুত: হক্কানী পীরগণ সত্যবাদী হয়ে থাকেন এবং তাঁদের হাতে যারা বাইয়াত গ্রহণ করেন তাঁদের আল্লাহভীতির শিক্ষা দান করেন। তাইতো অনেক হক্কানী পীরের মুরীদদের দেখা যায়, তাঁদের মাঝে আল্লাহভীতি থাকার কারণে অনেক গুণাহ থেকে মুক্ত থাকেন। কুরআন ও সুন্নাহর আলোকে পীর : কুরআনে কারিমে আল্লাহ রাব্বুল আলামীন বলেন, ‘যাকে আল্লাহ হেদায়াত দেন, সে হেদায়াত প্রাপ্ত। আর যাকে পথভ্রষ্ট করেন তার জন্য কোন মুর্শিদ বা পথ প্রদর্শক রাখেন না।’(সূরা কাহাফ:১৭) এই আয়াতের দ্বারা বুঝা যায়, যাকে আল্লাহ রাব্বুল আলামীন হেদায়াত দিতে চান তার জন্য মুর্শিদ বা পথ প্রদর্শক এর ব্যবস্থা করে দেন। আর পীর দ্বারা সাধারণত যে অর্থ বুঝানো হয় তার আরবী শব্দ হলো মুর্শিদ। সূরা মুমতাহিনায় আল্লাহ রাব্বুল আলামীন ইরশাদ করেন, ‘হে নবী! ঈমানদার নারীরা যখন আপনার কাছে এসে বাইয়াত গ্রহণ করে যে, তারা আল্লাহর সাথে কাউকে শরিক করবে না, চুরি করবেনা, ব্যাভিচার করবে না, তাদের সন্তানদেরকে হত্যা করবে না, জারয সন্তানকে স্বামীর ঔরশ থেকে আপন গর্ভজাত সন্তান বলে মিথ্যা দাবি করবে না এবং ভাল কাজে আপনার অবাধ্যতা করবে না, তখন তাদের আনুগত্য গ্রহণ করুন এবং তাদের জন্য আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করুন। নিশ্চয় আল্লাহ ক্ষমাশীল, অত্যান্ত দয়ালু।’ (মুমতাহিনা : ১২) অন্য আয়াতে আল্লাহ রাব্বুল আলামীন বলেন, ‘হে ঈমানদারগণ! তোমরা আল্লাহকে ভয় কর এবং সত্যবাদীদের সাথী হও।’ (সূরা তাওবা) এ আয়াতের ওপর সংক্ষিপ্ত আলোচনা পূর্বে উল্লেখ হয়েছে। এ প্রসঙ্গে হযরত আবু মুসা আশআরী রা. হতে বর্ণিত, হুজুর সা. বলেন, “পুন্যবান সঙ্গী এবং অসৎ সঙ্গী যথাক্রমে মেশক বহনকারী আর হাপরে ফুৎকার দানকারীর ন্যায়। মেশক বহনকারী হয়ত তোমাকে মেশক প্রদান করবে বা তার নিকট হতে তুমি ক্রয় করবে। তাও না হলে সুগন্ধি তুমি অবশ্যই পাবে। পক্ষান্তরে হাপরে ফুৎকারকারী হয়ত তোমার কাপড় জ্বালাবে, নতুবা দূর্গন্ধতো অবশ্যই পাবে। (বুখারী শরীফ : ২/৮৩০, হাদিস নং- ৫৫৩৪) হযরত আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস রা. হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সা. ইরশাদ করেন- ‘তোমাদের সর্বোৎকৃষ্ট সঙ্গী সে, যাকে দেখলে আল্লাহ তাআলার কথা স্বরণ হয়; যার কথায় ইলম বৃদ্ধি পায়; যার কাজ-কর্ম তোমাদেরকে পরকালের কথা স্বরণ করিয়ে দেয়।” (আবদ ইবনে হুমাইদ, আবু ইয়ালা-ইতহাফুল খিয়ারা ৮/১৬৩) এ হাদিসের ব্যাখ্যায় প্রখ্যাত মুহাদ্দিস মুনাভী রহ. বলেন, যে ব্যক্তির মধ্যে ঈমানী গুণাবলীর সমন্বয় ঘটে, ইসলামের আদব- শিষ্টাচার পূর্ণতা লাভ করে এবং যার অন্তর সৎচরিত্রে আলোকিত, যার অন্ত:করণ ইহসানের চূড়ায় আরোহন করে, তিনি নির্মলতায় হন আয়নাতুল্য। মুমিনগণ তাঁর দিকে তাকালে তাঁর স্বচ্ছতায় নিজেদের দোষগুলো দেখতে পায়। ভেসে উঠে তাঁর সুন্দরতম চরিত্রে নিজেদের অশুভ কার্যকলাপসমূহ। (ফয়যুল কাদীর ৬/২৫১-২৫২) এছাড়াও এ বিষয়ের উপর কুরআন ও সুন্নাহর মাঝে অসংখ্য দলীল-প্রমাণ বিদ্যমান। এই সংক্ষিপ্ত পরিসরে তার বিস্তারিত আলোচনা সম্ভব নয়। সঠিক পীরের পরিচয় : হক্কানী পীর- মাশায়েখদের সংস্পর্শে এসে বহুলোক দীনের পথে আসছে। সঠিক পথের সন্ধান পাচ্ছে। এজন্য ধর্মপ্রাণ মুসলমানগণ পীর- মাশায়েখদের প্রতি দুর্বল। তাদেরকে অত্যান্ত শ্রদ্ধার সাথে দেখে। তাই এই দুর্বলতাকে সুযোগ হিসেবে গ্রহণ করে ইয়াহুদি- খ্রিস্টান চক্র তাদের পা চাটা কিছু মূর্খ মানুষকে পীর সাজিয়ে, তাদের মাধ্যমে কিছু অদ্ভুট ভ্রান্ত আকিদা প্রচার করে সাধারণ মুসলমানদের ঈমান আকিদা ধ্বংস করার চক্রান্ত শুরু করেছে। তাই পীর গ্রহণ করতে অত্যান্ত সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে। কুরআন-সুন্নাহর কষ্টিপাথরে পরখ করে দেখতে হবে, যার হতে বাইয়াত হতে যাচ্ছি, তিনি সঠিক পীর কিনা? বাজারে সাধারণ দশ টাকা বিশ টাকার সদাই কিনতে গিয়ে অনেক পরখ করা হয় তা সঠিক কিনা? সেক্ষেত্রে যার হাতে আমার ঈমান-আমল সংশোধন করবো তাকে অবশ্যই ভালভাবে পরখ করতে হবে যে, তার হাতে বাইয়াত হলে আমার ঈমান-আমল সংশোধন হবে না ধ্বংস হবে। হাকিমুল উম্মত, মুজাদ্দিদে মিল্লাত আশরাফ আলী থানবী রহ. কুরআন-সুন্নাহর আলোকে সঠিক পীরের কতগুলো আলামত বর্ণনা করেছেন। সঠিক পীর চেনার ক্ষেত্রে এই আলামতগুলো যথেষ্ট সহায়ক হবে। ০১। পীর তাফসীর, হাদীস, ফিকাহ শাস্ত্রের অভিজ্ঞ আলেম হবেন। অন্ততপক্ষে মিশকাত শরীফ ও জালালাইন শরীফ বুঝে পড়েছেন এই পরিমাণ ইলম থাকা আবশ্যক। ০২। পীরের আমল-আকিদা শরিয়ত অনুযায়ি হতে হবে। তাঁর স্বভাব চরিত্র ও অন্যান্য গুণাবলী শরিয়ত যেমন চায় তেমনি হতে হবে। ০৩। পীরের মধ্যে কোন প্রকার লোভ (টাকা-পয়সা, সম্মান, যশ- খ্যাতি ইত্যাদি) থাকবে না এবং নিজেকে কামেল হওয়ার দাবী করবে না। ০৪। তিনি নিজে কোন কামেল ও সঠিক পীরের কাছ থেকে আত্মশুদ্ধি ও তরিকত অর্জন করে থাকবেন। ০৫। সমসাময়িক দীনদার আলেমগণ এবং খাঁটি সুন্নাত তরীকার পীর- মাশায়েখগণ তাকে ভাল বলে মনে করবেন। ০৬। দুনিয়াদার অপেক্ষা দীনদার লোকেরাই তাঁর প্রতি বেশি ভক্তি শ্রদ্ধা রাখে এমন হতে হবে। ০৭। তাঁর মুরীদদের অধিকাংশ এমন যে, তারা শরিয়তের পাবন্দি করে এবং দুনিয়ার লোভ- লালসা কম করে। ০৮। পীর মনোযোগ সহকারে মুরিদদের তালীম-তারবিয়াত ও আত্মশুদ্ধি করেন, তাদের কোন দোষ- ত্রুটি দেখলে সংশোধন করে দেন, তাদের ইচ্ছা অনুযায়ি স্বাধীন ছেড়ে দেন না। ০৯। তার সংস্পর্শে কিছু দিন থাকলে দুনিয়ার ভালবাসা কম ও আখিরাতের চিন্তা বেশি হতে থাকে। ১০। পীর নিজেও নিয়মিত যিকির- আযকারে মশগুল থাকেন। (অন্ততপক্ষে: নিয়মিত যিকির-আযকার করার পরিপূর্ণ ইচ্ছা রাখেন) কেননা নিজে আমল না করলে তার তালীম- তারবিয়াতে বরকত হবেনা। উল্লেখিত গুণগুলো যার মধ্যে আছে তিনি একজন কামেল বা সঠিক পীর। তার হাতে নির্দিধায় বাইয়াত হওয়া যাবে। এই গুণাবলী থাকার পর তার কারামাত আছে কিনা? তার কাশফ হয় কিনা বা তিনি কারো মনের ভাব জানতে পারেন কিনা? তার দোয়া কবুল হয় কিনা? তিনি ভবিষ্যৎবানী করেন কিনা ইত্যাদি বিষয়গুলো দেখার প্রয়োজন নেই। কারণ, অলি বা খোদার প্রিয় বান্দা হওয়ার জন্য এসব বিষয় জরুরি নয়। মুরীদ : মুরীদ শব্দটি ইরাদাহ থেকে নির্গত হয়েছে। যার অর্থ হচ্ছে ইচ্ছা করা। অর্থাৎ, যে ব্যক্তি কোন সঠিক পীরের হাতে বাইয়াত গ্রহণ করে এই ইচ্ছা পোষণ করল যে, সে আল্লাহ তাআলার সকল প্রকার আদেশ নিষেধ মেনে চলবে তাকে মুরীদ বলে। মুরীদ হওয়ার উদ্দেশ্য একমাত্র আল্লাহ তাআলার সন্তুষ্টি অর্জন। আসল উদ্দেশ্য আল্লাহকে পাওয়া। আর আল্লাহকে পাওয়ার অর্থ হচ্ছে আল্লাহকে সন্তুষ্ট করা। আল্লাহ তাআলাকে সন্তুষ্ট করার একমাত্র উপায়, আজীবন তাঁর যাবতীয় হুকুম পালন করা। মুরীদ হওয়ার সময় এ ধরনের উদ্দেশ্য অন্তরে থাকা ঠিক নয় যে, মুরীদ হলে আমার থেকে অনেক প্রকারের কারামত প্রকাশ পাবে, আমি যতই অন্যায় কাজ করিনা কেন, পীর সাহেব আমাকে কিয়ামতের দিন পার করে নিবেন, পীর সাহেব এক নজরেই আমাকে কামেল বানিয়ে দিবেন। আমার কোন আমল বা পরিশ্রম করার প্রয়োজন হবেনা অথবা আমার ভিতরে অনেক জযবা সৃষ্টি হবে, আমি অনেক চিল্লা-পাল্লা করব ইত্যাদি নানাহ বেহুদা উদ্দেশ্য অন্তরে যেন না আসে। মুরীদের করণীয় : ০১. শরীয়তের খেলাফ না হলে পীরের সব কথা ভক্তি সহকারে পালন করতে হবে। ০২. অন্তরে এই বিশ্বাস রাখা যে, এই পীর থেকেই আমার আত্মশুদ্ধি অর্জন হবে, অন্যদিকে মন দিলে ফয়েয ও বরকত থেকে বঞ্চিত হয়ে যাবে। ০৩. পীর যা কিছু দরুদ- অজিফা বা যিকিরের সবক দিবেন তাই পালন করবে, অন্য কোন অজিফা বা আমল নিজ থেকে বা অন্য কারো বলা থেকে শুরু করলে তা পীরকে বলে ছেড়ে দিবে। ০৪. পীরের কারামত বা অলৌকিক কিছু দেখার ইচ্ছা করবে না। ০৫. প্রয়োজন এবং অনুমতি ব্যতিত তার সংস্পর্শ ছেড়ে অন্যত্র যাবেনা। ০৬. নিজের অন্তরের ভাল মন্দ সব অবস্থা পীরকে অবগত করে যথাযথ ব্যবস্থা জেনে নিবে। তিনি কাশফের দ্বারা জেনে নিবেন এই ভরসায় বসে থাকবেন না। ০৭। পীর ব্যতিত অন্য কাউকে জিকির আযকারের অবস্থা এবং হালত সম্পর্কে বলবে না। এতে বরকত নষ্ট হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা আছে। সারকথা হল, পীর মুরীদের আসল উদ্দেশ্য নেক কাজে অলসতা আসলে তার মোকাবেলা করে কাজটি সম্পাদন করা এবং গুণাহের চাহিদা আসলে তা দমন করে বিরত থাকা। যে ব্যক্তি এ পর্যায়ে পৌঁছতে পেরেছে, তার আর কোন কিছুর প্রয়োজন নেই। এটাই পীর- মুরীদীর মূল কথা। অথচ এ ব্যাপারে উদাসীনতার কারণে, স্পষ্ট ধারণার অভাবে কিছু লোক পীর মুরীদী সম্পর্কে ভ্রান্ত ধারণায় পতিত হয়েছে এবং একে বিদআত বা শরিয়ত বিরোধী বলে আখ্যা দিয়েছে। অথচ সত্যিকারের পীর-মুরীদীর মাঝে শরিয়তের অনুস্বরণ-অনুকরণ ব্যতিত অন্য কিছুর সামান্যতম মিশ্রণ পর্যন্ত নেই।

ভিডিও কলে ডাক্তারের পরামর্শ পেতে Play Store থেকে ডাউনলোড করুন Bissoy অ্যাপ