Junait

Call

একটি মহাকাশীয় বস্তু দেখার সময়, যদি অপর একটি মহাকাশীয় বস্তুর তা আড়ালে চলে যায়, তখন গ্রহণ সংঘটিত হয়। এরূপ ঘটনা ঘটার সময়, একটি মহাকাশীয় বস্তুর সম্পূর্ণ বা আংশিকভাবে আড়ালে চলে যেতে পারে। যখন একটি মহাকাশীয় বস্তু সম্পূর্ণভাবে, অপর মহাকাশীয় বস্তুর আড়ালে চলে যায়, এবং তখন তৃতীয় মহাকাশীয় বস্তু থেকে তাকে পূর্ণগ্রাস বলা হয়। একইভাবে যদি মহাকাশীয় বস্তুটি যদি আংশিকভাবে আড়ালে চলে যায়, তখন তাকে আংশিক গ্রাস বা খণ্ডগ্রাস বলা হয়।

 

গ্রহণের বিষয়টি পর্যবেক্ষণ করা হয় তৃতীয় একটি মহাকাশীয় বস্তু থেকে। যেমন সূর্য, পৃথিবী এবং চন্দ্র নিয়ে যে গ্রহণ সংঘটিত হয়, তা পর্যবেক্ষণ করা হয় পৃথিবী থেকে। চন্দ্র, সূর্য, ও পৃথিবী নিয়েই শুধু গ্রহণের বিষয়টি ঘটে না। এর বেশির ভাগই সাধারণ মানুষের কাছে অজ্ঞাত থেকে যায়। পৃথিবীর সাধারণ মানুষের কাছে সবচেয়ে পরিচিত দুটি গ্রহণ হলো― সূর্যগ্রহণ ও চন্দ্রগ্রহণ।

 

সৌরজগতে সূর্যকে ঘিরে আবর্তিত হচ্ছে পৃথিবী, আবার পৃথিবীকে ঘিরে আবর্তিত হচ্ছে চন্দ্র। এই বিচিত্র আবর্তন চলার সময় কখনো কখনো সূর্য, পৃথিবী এবং চন্দ্র একই সরল রেখাতে অবস্থান নেয়। আর তখনই চন্দ্রগ্রহণ বা সূর্যগ্রহণের সৃষ্টি হয়।  বৈজ্ঞানিক পরীক্ষা-নিরীক্ষা চন্দ্রগ্রহণের চেয়ে সূর্যগ্রহণ বেশিবার হয়। প্রতি সাতটি গ্রহণের মধ্যে সূর্যগ্রহণ ও চন্দ্রগ্রহণের অনুপাত ৫:২ বা ৪:৩।

 

এই আবর্তনের সূত্রে, যখন সূর্য ও পৃথিবীর মাঝখানে চন্দ্র অবস্থান নেয়, তখন পৃথিবীপৃষ্ঠের পর্যবেক্ষকের দর্শন-সাপেক্ষে সূর্য চন্দ্র-এর পেছনে আড়ালে চলে যায় এবং তখন সূর্য গ্রহণ ঘটে।

 

সূর্য গ্রহণ 

এই সময় সূর্যের আলো চাঁদের দ্বারা বাধাপ্রাপ্ত হয়। ফলে চাঁদের ছায়া পৃথিবীর উপর পড়ে। সূর্যের আকার অনেক বড় বলে সূর্যগ্রহণের সময় চাঁদ পুরোপুরি ঢাকতে পারে না। বিশেষ করে চাঁদের চার পাশ দিয়ে সূর্যের ছটামণ্ডল ও বর্ণমণ্ডল উজ্জ্বলভাবে দেখা যায়। এই অবস্থায় একে বলয়গ্রাস বলা হয়।

 

ব্যাবিলনীয় সভ্যতা থেকে সূর্যগ্রহণের পর্যায়কাল মাপার চেষ্টা শুরু করছিল। ১০০০ খ্রিষ্ট- পূর্বাব্দের দিকে গ্রহণের পূর্বাভাস মানুষ দিতে সক্ষম হয়। ঐ সময় জ্যোতিষীরা লক্ষ্য করেন যে, প্রতি ১৮ বছর ১০ দিন পরপর গ্রহণ পুনরাবর্তিত হয়। এই থেকে সারোস চক্র (পুনরাবৃত্তি চক্র) দিয়ে পূর্ণগ্রাস সূর্যগ্রহণগুলি চিহ্নিত করার প্রথা চালু হয়। ২২ জুলাই, বাংলাদশে থেকে পূর্ণগ্রাস সূর্যগ্রহণ দেখা যায় তা ছিল ১৩৬ সারোসচক্রের ৩৭তম গ্রহণ এবং মোট সংখ্যা ৭১টার মধ্যে। প্রতিটি সারোসচক্র প্রায় ৭৫টি গ্রহণে সমাপ্ত হয়। পূর্ণগ্রাস সূর্যগ্রহণে হঠাৎ দিনের বেলা রাতের অন্ধকার নেমে আসে এবং চারপাশের প্রাকৃতিক পরিবেশে হঠাৎ একটা পরিবর্তন আসে। পাখিরা সন্ধ্যার আভাস পেয়ে ফিরে যেতে থাকে বনে, বাতাস স্থির হয়ে যায়, হঠাৎ তাপমাত্রা কমতে থাকে।

 

চন্দ্র গ্রহণ 

আবার পৃথিবী যখন  চন্দ্র ও সূর্য-এর মধ্যে চলে আসে, তখন পৃথিবীর আড়ালে চাঁদ ঢাকা পড়ে এবং চন্দ্রগ্রহণ হয়। সূর্য একটি তারা বলে তার আলো পৃথিবীতে বাধা পায় এবং চাঁদ পৃথিবীর ছায়ায় ঢাকা পড়ে যায়। পৃথিবী চাঁদের চেয়ে বড় হওয়ায়, পৃথিবীর ছায়া চন্দ্রপৃষ্ঠকে পুরোপুরি ঢেকে ফেলে। এই কারণে চন্দ্রগ্রহণ পৃথিবীর কোনো কোনো অংশে পূর্ণগ্রাস হিসাবে দেখা যায়।

তথ্য সংগৃহীত..

ভিডিও কলে ডাক্তারের পরামর্শ পেতে Play Store থেকে ডাউনলোড করুন Bissoy অ্যাপ