শেয়ার করুন বন্ধুর সাথে
Call

বিসমিল্লাহির রহমানির রহীম । _________ উচ্চ বিদ্যালয়ের ২০১৮ সালের এসএসসি পরীক্ষার্থীদের জন্য আয়োজিত বিদায়ী অনুষ্ঠানে উপস্থিত অত্র বিদ্যালয়ের সম্মানিত সভাপতি, আমার শ্রদ্ধেয় সকল শিক্ষকমন্ডলী, আগত অভিভাবকবৃন্দ ও আমার সামনে উপবিষ্ট সকল ছাত্রছাত্রীদের কে আমার পক্ষ থেকে সালাম, আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহ। এবং অন্য জাতিদের জানাই আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন। বিদায় জিনিসটা খুব কষ্টের। অত্যন্ত দুঃখ ভারাক্রান্ত মন নিয়ে বলতে হচ্ছে, আজ আমাদের বিদায় অনুষ্ঠান। যদিও আমি মনে করি এটা একটা বিদায়ের আনুষ্ঠানিকতা মাত্র। কারণ মন থেকে চিরতরে বিদায় নেওয়া কখনও সম্ভব হবে না। আমরা এই বিদ্যালয়ে দীর্ঘ পাঁচ বছর পড়েছি। এবং বিদ্যালয়ের শিক্ষকবৃন্দ আমাদেরকে বিভিন্ন বিষয় অত্যন্ত দক্ষতার সাথে পড়িয়েছেন তা আমরা কখনোই ভুলবো না। এজন্য আমরা আপনাদের কাছে চিরকৃতজ্ঞ। ইচ্ছে না থাকা সত্ত্বেও আমাদেরকে বিদ্যালয় থেকে বিদায় নিতে হচ্ছে। আজ শিক্ষাজীবনের একটি অধ্যায় সমাপ্ত করে পরের আরেকটি অধ্যায়ে পা রাখার উদ্দেশ্যে আমরা বিদায় নিচ্ছি। আপনারা আমাদের জন্য দোয়া করবেন যেন ভবিষ্যতে শিক্ষাজীবনে আরো উন্নতি করে দেশ ও জাতি গঠনে ভূমিকা রাখতে পারি। এছাড়া এখানে আপনাদের অনেক শাসন-বাড়নের মধ্য দিয়ে যেতে হয়েছে যা সাময়িক বিরক্তিকর মনে হলেও এখন এই শেষ মুহূর্তে বুঝতে পারছি এটা আমাদের জন্য কতটা দরকারি ছিলো। তাই আমাদের কোনো আচরণে যদি কোনো শিক্ষক কষ্ট পেয়ে থাকেন বা কোনো ভুল করে থাকি তাহলে আমাদেরকে সন্তান মনে করে ক্ষমা করবেন। আমাদের অনুগামী ছাত্রছাত্রী ভাই ও বোনেরা, তোমাদের সাথে আমরা দীর্ঘ পাঁচ বছর ছিলাম। এই দীর্ঘ সময়টা যেনো একটি পরিবারের ভাই বোনের মতই কেটেছে। অনেক সময় আমরা তোমাদের শাসন করেছি এবং স্নেহও করেছি। শাসনটাকে বড় ভাইয়ের শাসন মনে করিও। আমাদের জন্য দোয়া করিও যাতে আমরা ভালো ফলাফল করতে পারি। আমরা যেন এই বিদ্যালয়ের সুনাম বয়ে আনতে পারি। পিতামাতা ও এলাকাবাসীর মুখ উজ্জ্বল করতে পারি। সুপ্রিয় ভাই-বোনেরা, তোমাদের প্রতিও সুভকামনা রইল যাতে তোমরা নিজেদের আদর্শবান ছাত্র হিসেবে গড়ে তুলতে পারো। পিতামাতা সন্তানকে একটি পারিবারিক মূল্যবোধ ও আচরণ বিধির মধ্যে দৃঢ়ভাবে প্রতিষ্ঠিত করে দেন। পারিবারিক বৃক্ষের শাখা প্রশাখা সেই পারিবারিক মূল্যবোধ থেকেই জীবন লক্ষ্যে পৌঁছে । আমরা এখনও ছোট। তাই আমাদের জীবনের লক্ষ্য স্থির করতে দ্বিধাদ্বন্দ্বতায় ভুগি। পিতামাতার উচ্চ আকাঙ্ক্ষাই সন্তানকে লক্ষ্যে পৌঁছাতে সাহায্য করে। কিন্তু আমাদের দেশের গ্রাম্য এলাকায় পিতামাতার ইচ্ছা ও সচেতনতার অভাবে অনেক ছাত্রই অকালে ঝরে যায়। মাঝপথে লেখাপড়া নষ্ট হয়ে যায়। এজন্যই আমাদের দেশে শিক্ষার হার খুবই কম। তাই অভিভাবক সচেতনতা অত্যন্ত জরুরী। দার্শনিক সক্রেটিস বলেছিলেন, "ভাইসব তোমরা সম্পদ আহরণের জন্য এত কঠোর পরিশ্রম করে প্রতিটি পাথর উল্টিয়ে আঁচড়ে দেখছো কিন্তু যাদের জন্য তোমাদের সমস্ত জীবনের কঠোর শ্রমের ফল রেখে যাবে সেই সন্তানদের যথার্থভাবে মানুষ করার জন্য কতটুকু সময় ব্যয় করছ?" সন্তানদের যথার্থভাবে মানুষ করার জন্য দ্বিগুণ সময় ব্যয় করা উচিত। শিক্ষাই জাতির মেরুদণ্ড। যে জাতি যত শিক্ষিত সে জাতি তত বেশি উন্নত। তাই আমাদের দেশের উন্নয়নের জন্য শিক্ষার উন্নয়ন ঘটাতে হবে। বিদায়ী অনুষ্ঠানে আগত সকল পিতামাতার দৃষ্টি আকর্ষণ করছি, আপনাদের সদিচ্ছা, আকাঙ্ক্ষা, ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি ও মূল্যবোধই পারে আমাদের ভবিষ্যত লক্ষ্য পুরন করতে। আমাদের জন্য দোয়া করবেন যাতে আমরা আপনাদের মুখ উজ্জ্বল করতে পারি। বিদায়ী মুহূর্তে আর বেশি কিছু বলতে চাচ্ছি না। উপস্থিত সকলের দীর্ঘায়ু কামনা ও সকল ছাত্র ছাত্রীদের উজ্জ্বল ভবিষ্যত কামনা করে আমি আমার বক্তব্য এখানেই শেষ করছি। ধন্যবাদ সবাইকে৷ • বিশেষ দ্রষ্টব্যঃ উক্ত বক্তব্যটি “বিস্ময় অ্যান্সারস” থেকে সংগৃহীত৷ বক্তব্যটি বিদায়ী শিক্ষার্থীর জন্য প্রযোজ্য৷

ভিডিও কলে ডাক্তারের পরামর্শ পেতে Play Store থেকে ডাউনলোড করুন Bissoy অ্যাপ