শেয়ার করুন বন্ধুর সাথে
Call

রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন: সর্বশেষ যে ব্যক্তি জান্নাতে প্রবেশ করবে, সে একজন পুরুষ। কখনো সে হাটবে, কখনো উপুড় হয়ে চলবে, কখনো আগুন তাকে ঝলসে দিবে। যখন এ পথ অতিক্রম করে সামনে চলে যাবে, তখন সে তার দিকে ফিরে বলবে: বরকতময় সে আল্লাহ, যিনি আমাকে তোমার থেকে মুক্তি দিয়েছে। আল্লাহ আমাকে এমন জিনিস দান করেছেন, যা আগে-পরের কাউকে তিনি দান করেননি। অতঃপর তার জন্য একটি বৃক্ষ উম্মুক্ত করা হবে।


সে বলবে, হে আল্লাহ! এ বৃক্ষের কাছে নিয়ে যাও, যাতে এর ছায়াতলে আশ্রয় নিতে পারি, এর পানি পান করতে পারি। আল্লাহ বলবেন :হে বনি আদম, আমি যদি তোমাকে এটা প্রদান করি, তুমি নিশ্চয় আরেকটি প্রার্থনা করবে। সে বলবে: না, হে আমার রব। সে এর জন্য ওয়াদাও করবে।


আল্লাহ বার বার তার অপরাগতা গ্রহণ করবেন। কারণ, সে এমন জিনিস দেখবে যার উপর তার ধৈর্যধারণ সম্ভব হবে না। অতঃপর আল্লাহ তার কাছে নিয়ে যাবেন, সে তার ছায়ায় আশ্রয় নিবে, তার পানি পান করবে। অতঃপর আগের চেয়ে উত্তম আরেকটি বৃক্ষ তার জন্য উম্মুক্ত করা হবে।


তখন সে বলবে: হে আমার রব! এ বৃক্ষের কাছে নিয়ে যাও, এর ছায়াতলে আশ্রয় নিব, এর পানি পান করব। এ ছাড়া আর কিছু প্রার্থনা করব না। তখন আল্লাহ তাকে মনে করিয়ে দিবেন: হে বনি আদম, তুমি কি আমার সাথে ওয়াদা করনি যে, আর কিছু প্রার্থনা করবে না? এর কাছে যেতে দিলে তুমি আরো অন্য কিছু প্রার্থনা করবে। অতঃপর সে প্রার্থনা না করার ওয়াদা করবে। আল্লাহ তার অপরাগতা কবুল করবেন, কারণ সে এমন জিনিস দেখবে, যার ওপর তার ধৈর্যধারণ সম্ভব হবে না। অতঃপর তাকে সে গাছের নিকটবর্তী করা হবে। সে তার ছায়াতলে আশ্রয় নিবে, তার পানি পান করবে।


অতঃপর জান্নাতের দরজার নিকট আরেকটি বৃক্ষ উম্মুক্ত করা করা হবে, যা আগের দু’বৃক্ষ থেকেও উত্তম। সে বলবে : হে আল্লাহ! এ বৃক্ষের নিকটবর্তী কর, আমি তার ছায়াতলে আশ্রয় নিব, তার পানি পান করব, আর কিছু প্রার্থনা করব না। তিনি বলবেন : হে বনি আদম, তুমি আর কিছু প্রার্থনা না করার ওয়াদা করনি? সে বলবে, হ্যাঁ, তবে, এটাই শেষ, আর কিছু চাইব না।


আল্লাহ তার অপরাগতা কবুল করবেন। কারণ, সে এমন জিনিস দেখবে, যার ওপর ধৈর্যধারণ করা তার পক্ষে সম্ভব হবে না। আল্লাহ তার নিকটবর্তী করবেন। যখন তার নিকটবর্তী হবে, তখন সে জান্নাতবাসীদের আওয়াজ শুনতে পাবে। সে বলবে : হে আমার রব! আমাকে এতে প্রবেশ করাও। আল্লাহ বলবেন: হে বনি আদম, তোমার চাওয়া আর শেষ হবে না। তোমাকে দুনিয়া এবং এর সাথে দুনিয়ার সমতুল্য আরো প্রদান করব, এতে কি তুমি সন্তুষ্ট হবে? সে বলবে : হে আল্লাহ, তুমি দুজাহানের রব, তা সত্বেও তুমি আমার সাথে উপহাস করছ?


রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এ ঘটনা বলতে বলতে হেসে দিলেন। সাহাবারা তাকে বলল: হে আল্লাহর রাসূল! কেন হাসছেন? তিনি বললেন : আল্লাহর হাসি থেকে আমার হাসি চলে এসেছে। যখন সে বলবে : আপনি দু’জাহানের মালিক হওয়া সত্বেও আমার সাথে উপহাস করছেন?


তখন আল্লাহ বলবেন : আমি তোমার সাথে উপহাস করছি না, তবে কি, আমি যা-চাই তা-ই করতে পারি । আরো প্রার্থনা করার জন্য আল্লাহ তাকে বললেন : এটা চাও, ওটা চাও। যখন তার সব চাওয়া শেষ হয়ে যাবে। তখন আল্লাহ বলবেন : এ সব তোমাকে দেয়া হল এবং এর সাথে আরো দশগুন।


রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন : অতঃপর সে তার ঘরে প্রবেশ করবে এবং সাথে সাথে তার স্ত্রী হিসেবে দু’জন হুরও প্রবেশ করবে। তারা তাকে বলবে : সমস্ত প্রসংশা সে আল্লাহর, যিনি আপনাকে আমাদের জন্য জীবিত করেছেন এবং আমাদেরকে আপনার জন্য জীবিত করেছেন।


রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন : সে বলবে, আমাকে যা দেয়া হয়েছে, তার মত কাউকে দেয়া হয়নি। সূত্রঃ সহীহ মুসলিম ১৮৭


রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘আল্লাহ তাআলা ঐ ব্যক্তির চেহারা উজ্জ্বল করে দিন, যে আমার কোনো হাদীস শুনেছে। অতঃপর অন্যের কাছে পৌঁছে দিয়েছে।’[-সুনানে আবু দাউদ ২/৫১৫]


সকল মুসলিমের দায়িত্ব হাদিসটি নিজ উয়ালে শেয়ার করে অন্যকে পড়ার সুযোগ করে দেওয়া, আল্লাহ আপনাকে উত্তম প্রতিদান দিন। আমিন…।

ভিডিও কলে ডাক্তারের পরামর্শ পেতে Play Store থেকে ডাউনলোড করুন Bissoy অ্যাপ

 মৃত্যুর আগে কেউ মহান আল্লাহর প্রতি ঈমান আনলে এ বান্দাকে তিনি জান্নাতে প্রবেশ করাবেন। বিচার-ফয়সালা হিসাব-নিকাশের পর যদি কারো শাস্তিও হয়; তারপরও ঈমানদার ব্যক্তি জান্নাতে যাবেন। হাদিসের বিশুদ্ধ বর্ণনা থেকে তা প্রমাণিত। এমনকি সবার শেষে কে জান্নাতে প্রবেশ করবে; এ সম্পর্কেও হাদিসে পাকের বর্ণনায় ওঠে এসেছে। কে হবে সেই ব্যক্তি? হযরত আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেছেন, আল্লাহ তাআলা বিচারকাজ শেষ করার পর ‘লা ইলাহা ইল্লাহু’র সাক্ষ্যদাতাদেরকে জাহান্নাম থেকে বের করার ইচ্ছা করবেন এবং ফেরেশতাদেরকে আদেশ করবেন তাদের বের করে আনতে। সেজদার চিহ্ন দেখে দেখে ফেরেশতারা তাদেরকে চিনতে পারবে। আর আল্লাহ তাআলা বনি আদমের সেজদার স্থানগুলোকে জাহান্নামের জন্য হারাম করে দিয়েছেন। সুতরাং ফেরেশতারা তাদেরকে এমতাবস্থায় বের করবে যে, তখন তাদের দেহ থাকবে কয়লার মতো। তারপর তাদের দেহে পানি ঢেলে দেয়া হবে। যাকে বলা হয় ‘মাউল হায়াত’ বা ‘সঞ্জীবনী পানি’। সাগরের ঢেউয়ে ভেসে আসা আবর্জনায় যেরূপ উদ্ভিদ জন্মায়, পরে এগুলো যেরূপ সজিব হয় তারাও সেরূপ সজিব হয়ে যাবে। এসময় জাহান্নামের দিকে মুখ করে এক ব্যক্তি দাঁড়িয়ে থাকবে আর বলবে- হে প্রভু! জাহান্নামের লু হাওয়া আমাকে ঝলসে দিয়েছে, এর জ্বলন্ত আঙ্গার আমাকে জ্বালিয়ে দিয়েছে। সুতরাং তুমি আমার চেহারাটাকে জাহান্নামের দিক থেকে ঘুরিয়ে দাও। এভাবে সে আল্লাহকে ডাকতে থাকবে। তখন আল্লাহ তাআলা বলবেন, আমি যদি তোমাকে এটা দিয়ে দিই তবে তুমি অন্যটির প্রার্থনা করবে? লোকটি বলবে, ‘না’, তোমার ইজ্জতের কসম আল্লাহ! আর অন্য কিছু চাইবো না। সুতরাং তার চেহারাটা জাহান্নামের দিক থেকে ঘুরিয়ে দেওয়া হবে। এরপর সে বলবে, হে প্রভু! তুমি আমাকে জান্নাতের দরজার কাছাকাছি করে দাও। আল্লাহ বলবেন, তুমি কি বলনি যে, তুমি আমার কাছে আর কিছু চাইবে না? আফসোস তোমার জন্য আদম সন্তান! তুমি কতইনা গাদ্দার! সে এরূপই প্রার্থনা করতে থাকবে। তখন আল্লাহ বলবেন, সম্ভবত আমি যদি তোমাকে এটা দিয়ে দিই, তবে তুমি অন্য আরেকটি আমার কাছে দাবি করবে। লোকটি বলবে, ‘না’, তোমার ইজ্জতের কসম আল্লাহ! অন্য কিছু আর চাইবো না। তখন সে আল্লাহ তাআলার সঙ্গে এ মর্মে ওয়াদা করবে যে, সে আর কিছুই চাইবে না। তখন আল্লাহ তাআলা তাকে জান্নাতের দরজার কাছাকাছি করবেন। সে যখন জান্নাতের মধ্যস্থিত নেয়ামতগুলো দেখতে পাবে; তখন আল্লাহ যতক্ষণ চাইবেন ততক্ষন সে চুপ করে থাকবে। এরপরই সে বলতে থাকবে, হে প্রভূ! তুমি আমাকে জান্নাতে প্রবেশ করাও। তখন আল্লাহ বলবেন, তুমি কি বলনি যে, তুমি আর কিছু চাইবে না? আফসোস, তোমার জন্য হে আদমসন্তান! তুমি কতইনা গাদ্দার। লোকটি বলবে, হে প্রভূ! তুমি আমাকে তোমার সৃষ্টি জীবের মাঝে সবচেয়ে হতভাগ্য করো না। এভাবে সে প্রার্থনা করতে থাকবে। পরিশেষে আল্লাহ তাআলা হেসে ফেলবেন- আর আল্লাহ তাআলা যখন হেসে ফেলবেন তখন তাকে জান্নাত প্রবেশের অনুমতি দিয়ে দেবেন। এরপর যখন সে জান্নাতে প্রবেশ করবে, তখন তাকে বলা হবে, তোমার যা ইচ্ছে হয় আমার কাছে চাও। সে (বিভিন্ন) আবেদন করবে; এমনকি (এক সময়) তার আকাঙ্ক্ষা শেষ হয়ে যাবে। তখন আল্লাহ বলবেন- এগুলো তোমার এবং এর সমপরিমাণও তোমার। হজরত আবু হুরায়রা বলেন, ঐ লোকটি হচ্ছে সর্ব শেষে জান্নাতে প্রবেশকারী লোক। (বুখারি) এ কারণেই মানুষের উচিত, মহান রবের রহমত থেকে নিরাশ না হওয়া। আল্লাহ তাআলা আশাবাদীদের এভাবেই রহমত দান করবেন। জান্নাত দান করবেন। আল্লাহর রহমতের প্রতি একনিষ্ঠ বিশ্বাস থাকলে তিনি দুনিয়া ও পরকালে অসংখ্য নেয়মতে জীবন পরিপূর্ণ করে দেবেন। সুতরাং সব বনি আদমের উচিত, আল্লাহর রহমতের প্রতি অগাধ আস্থা এবং বিশ্বাস রাখা। আল্লাহর হুকুম-আহকাম যথাযথভাবে পালন করা। কোরআন-সুন্নাহর আলোকে জীবন গড়ার সর্বাত্মক প্রচেষ্টা করে যাওয়া। Scorching Sun

ভিডিও কলে ডাক্তারের পরামর্শ পেতে Play Store থেকে ডাউনলোড করুন Bissoy অ্যাপ
Harun446

Call

protect of Islam এই ইউটিউব চ্যানেল টি যেয়ে ভিডিও টি দেখতে পারেন

ভিডিও কলে ডাক্তারের পরামর্শ পেতে Play Store থেকে ডাউনলোড করুন Bissoy অ্যাপ