শেয়ার করুন বন্ধুর সাথে
shohanrand1

Call

মানুষ আজ সাধনা গবেষণা ও জ্ঞান বিজ্ঞানের অগ্রগতির মাধ্যমে মহাকাশ জয় করেছে, প্রযুক্তির চরম উন্নতি সাধন করেছে। নভচারীগণ চাঁদে পৌছেছেন, মানুষ যা কল্পনা করেছিল তা বাস্তবায়ন করছে, যেগুলো স্বপ্ন মনে করে ছিল সেগুলো বর্তমানে স্বচক্ষে অবলোকন করছে। আবার কৃত্রিম উপগ্রহ স্থাপনের মাধ্যমে পৃথিবীর নতুন নতুন তথ্য মানুষের নিকট ধরা পড়ছে। অজানা অচেনা অনেক রহস্য উদঘাটন করছে। তবু মানুষ বসে নেই। আরও জানার অদম্য আগ্রহ নিয়ে মানুষ এগিয়ে যাচ্ছে। 055.033 يَا مَعْشَرَ الْجِنِّ وَالإنْسِ إِنِ اسْتَطَعْتُمْ أَنْ تَنْفُذُوا مِنْ أَقْطَارِ السَّمَاوَاتِ وَالأرْضِ فَانْفُذُوا لا تَنْفُذُونَ إِلا بِسُلْطَانٍ ‘হে জিন ও মানবকুল, নভোমন্ডল ও ভূমন্ডলের প্রান্ত অতিক্রম করা যদি তোমাদের সাধ্যে কুলোয় তবে অতিক্রম কর। তবে (আল্লাহ তাআলার পক্ষ থেকে) ক্ষমতা ব্যতিরেকে তোমরা তা করতে পারবে না। (রহমান, ৫৫ : ৩৩) এ আয়াতে স্পষ্ট ইঙ্গিত রয়েছে যে, আকাশ ও পৃথিবীর প্রান্ত অতিক্রম করতে হলে বিরাট শক্তি ও সামর্থ দরকার। সাথে সাথে এ কথাও বুঝান হয়েছে যে, জ্বিন ও মানব জাতি উভয়ই শক্তি অর্জনের মাধ্যমে মহাকাশ জয়ে সফলতা অর্জন করতে সক্ষম হবে। সেহেতু বাক্যটি শর্তযুক্ত নয় বরং খবর দেয়া হয়েছে। আর জ্বিন ও মানব কে সমপর্যায়ে রেখে বর্ণনা করেছে। এমন এক সময় আসবে যা সেই সময় মানব জাতির কল্পনায়ও আসেনি যে মানব জ্বিন জাতির ন্যায় পৃথিবী থেকে সৌরজগতে পদার্পণ করবে। কেননা কুরআন সেই মহান আল­াহর নিকট থেকে অবতীর্ণ। যিনি সার্বিকভাবে সব কিছুই অবগত আছেন যে, মানুষ জাতিও একদিন এমন কাজ করতে সক্ষম হবে। যেমন জ্বিন জাতিরা করতে সক্ষম হয়েছে। এই আয়াতের প্রকৃত অনুবাদ বুঝার জন্যে কিছু ব্যাখ্যার প্রয়োজন। বাংলা ভাষায় ‘যদি’ (ইংরেজিতে রভ) শব্দটি এমন একটি শর্ত নির্দেশ করে যা, হয়তো সম্ভব কিংবা অসম্ভব ---। আরবি ভাষায় ‘যদি’ বুঝানোর জন্যে একাধিক শব্দ ব্যবহৃত হয়। যখন ‘লাও’ ( ) শব্দ ব্যবহৃত হয়, তা এমন একটি শর্ত নির্দেশ করে যা অসম্ভব। আর যখন ‘ইন’ (نإ) শব্দ ব্যবহৃত হয়, তা এমন একটি শর্ত নির্দেশ করে, যা সম্ভব। উপরিউক্ত আয়াতে কুরআন মাজিদ (نإ) ‘ইন’ শব্দ ব্যবহার করেছে। ‘লাও’ ( ) শব্দ ব্যবহার করে নি। অতএব কুরআন মাজিদ ইঙ্গিত করছে, এক্ষেত্রে সম্ভাব্যতা বিদ্যমান রয়েছে যে, মানুষ একদিন নভোমন্ডল ও ভূমন্ডলের স্তরসমূহ ভেদ করতে পারবে। আরও লক্ষণীয় যে, নিম্ন লিখিত আয়াতেও মহাশূন্য ভেদ করার কথা উল্লেখ করে। কিন্তু তাতে ‘লাও’ ( ) ব্যবহৃত হয়েছে- 015.014 وَلَوْ فَتَحْنَا عَلَيْهِمْ بَابًا مِنَ السَّمَاءِ فَظَلُّوا فِيهِ يَعْرُجُونَ 015.015 لَقَالُوا إِنَّمَا سُكِّرَتْ أَبْصَارُنَا بَلْ نَحْنُ قَوْمٌ مَسْحُورُونَ ‘আর যদি আমি ওদের সামনে আকাশের কোনো দরজাও খুলে দিই, আর তারা তাতে দিনভর আরোহনও করতে থাকে, তবুও তারা একথাই বলবে, আমাদের দৃষ্টির বিভ্রাট ঘটানো হয়েছে, না- বরং আমরা যাদুগ্রস্ত হয়ে পড়েছি।’ (হিজর, ১৫ : ১৪-১৫) এই আয়াতটিতে মক্কার কাফিরদের কথা উল্লেখ করা হয়েছে এবং বলা হয়েছে, এমনকি যদি তারা নভোমন্ডল ভেদ করতেও সক্ষম হয়, তারা মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর বাণীকে বিশ্বাস করবে না। এই আয়াতে যে শব্দ ব্যবহার করা হয়েছে তা হচ্ছে ‘লাও’ ( ) যা এমন সম্ভাবনার কথা বলে, যা বাস্তবায়িত হওয়ার নয়। ইতিহাস দেখিয়েছে, মক্কার কাফিররা মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর অসংখ্য মুজিজা প্রত্যক্ষ করেছে। তথাপি তারা তিনি যে বার্তা নিয়ে এসেছিলেন তাতে বিশ্বাস স্থাপন করে নি। ইতোপূর্বে উদ্ধৃত আয়াত সম্পর্কে আরো একটি বিষয় লক্ষ্য করার আছে। তাতে আরবি শব্দ ‘তানফুয’ (او ) ব্যবহৃত হয়েছে, যার য়িামূল হলু ‘নাফাজা’ ( ﻥ) যার পরে আরবি শব্দ ‘মিন’ ( ) এসেছে। আরবি অভিধান অনুসারে এই বাকরীতির অর্থ হল, ‘সোজা অতি ম করা এবং একটি বস্ত্তর একদিকে প্রবেশ করে অন্যদিক দিয়ে বেরিয়ে আসা। অতএব এটি নির্দেশ করে একটি গভীর অনুগমন এবং একটি বস্ত্তর অপরপ্রান্ত দিয়ে নির্গমন। এটি হুবহু তা-ই, যে অভিজ্ঞতা বর্তমানে মহাশূন্য বিজয়ের ক্ষেত্রে মানুষ লাভ করেছে। পৃথিবীর মধ্যাকর্ষণ শক্তি একটি বস্ত্ত ছেড়ে দেয় এবং তা মহাশূন্যে তার বাহিরে নির্গমন করে। এভাবে কুরআন মাজিদ মহাশূন্য বিজয়ের বিস্ময়কর ঘটনা বর্ণনার ক্ষেত্রে সর্বাধিক উপযুক্ত শব্দ ব্যবহার করেছে। অধিকন্তু এমন একটি গুরুত্বপর্ণ বৈজ্ঞানিকতথ্য, সর্বাধিক উপযুক্তূ শব্দে, চৌদ্দশ বছরেরও পূর্বের এমন একজন নিরক্ষর মানুষের নিছক কল্পনা বলে আরোপিত হতে পারে না, যিনি তার পুরো জীবন কাটিয়েছেন একটি মরুময় এলাকায়। লেখকঃ Sharear Azam http://www.techtunes.com.bd/sci-tech/tune-id/182549

ভিডিও কলে ডাক্তারের পরামর্শ পেতে Play Store থেকে ডাউনলোড করুন Bissoy অ্যাপ