শেয়ার করুন বন্ধুর সাথে
Call

যাকাতের জন্য যে কেউ হাত বাড়ালেই তাকে যাকাত দেয়া উচিত নয়। কেননা সম্পদশালী হওয়া স্বত্বেও অনেক মানুষ পয়সার লোভে হাত বাড়ায়। এসমস্ত লোক কিয়ামত দিবসে এমন অবস্থায় আসবে যে তার মুখমণ্ডলে এক টুকরা গোস্তও থাকবে না (নাউযুবিল্লাহ) সমস্থ মানুষের সাক্ষাতে কিয়ামত দিবসে তার মুখ মণ্ডলের শুধুমাত্র হাড়-হাড্ডি ছাড়া আর কিছুই দেখা যাবে না। নবী (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন: مَنْ سَأَلَ النَّاسَ أَمْوَالَهُمْ تَكَثُّرًا فَإِنَّمَا يَسْأَلُ جَمْرًا فَلْيَسْتَقِلَّ أَوْ لِيَسْتَكْثِرْ “যে ব্যক্তি সম্পদ বৃদ্ধির উদ্দেশ্যে মানুষের কাছে হাত পাতে সে যেন জাহান্নামের আগুন চাইল। অতএব বেশী চাইলে চাক বা কম চাইলে চাক।[7]“ এ সুযোগে আমি সর্তক করছি সেই লোকদেরকে যারা ভিক্ষা বৃত্তি চর্চা করে। সর্তক করছি সেই লোকদেরকে যারা যাকাতের হকদার না হওয়া স্বত্বেও যাকাত গ্রহণ করে। সাবধান! যাকাতের হকদার না হয়েও আপনি যদি যাকাত গ্রহণ করেন, তবে আপনি হারাম খেলেন। (নাউযুবিল্লাহ) আল্লাহকে ভয় করুন। অথচ নবী (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন, وَمَنْ يَسْتَغْنِ يُغْنِهِ اللَّهُ وَمَنْ يَسْتَعْفِفْ يُعِفَّهُ اللَّهُ “যে ব্যক্তি অভাব মুক্ত থাকতে চায় আল্লাহ তাকে অভাব মুক্ত করেন। যে ব্যক্তি পবিত্র থাকতে চায় আল্লাহ তাকে পবিত্র করে দেন।”[8] তবে কোন লোক যদি আপনার কাছে হাত পাতে, আর তার বাহ্যিক অবস্থা দেখে আপনি মনে করেন সে যাকাতের হকদার, তবে তাকে যাকাত দিলে আদায় হয়ে যাবে এবং আপনি দায় মুক্ত হবেন। পরবর্তীতে যদি জানা যায় যে, সে যাকাতের হকদার ছিল না তবে পুনরায় যাকাত দিতে হবে না। দলীল: عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ رَضِي اللَّه عَنْه أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّه عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ قَالَ رَجُلٌ لَأَتَصَدَّقَنَّ الليلة بِصَدَقَةٍ فَخَرَجَ بِصَدَقَتِهِ فَوَضَعَهَا فِي يَدِ سَارِقٍ فَأَصْبَحُوا يَتَحَدَّثُونَ تُصُدِّقَ عَلَى سَارِقٍ فَقَالَ اللَّهُمَّ لَكَ الْحَمْدُ لَأَتَصَدَّقَنَّ بِصَدَقَةٍ فَخَرَجَ بِصَدَقَتِهِ فَوَضَعَهَا فِي يَدَيْ زَانِيَةٍ فَأَصْبَحُوا يَتَحَدَّثُونَ تُصُدِّقَ اللَّيْلَةَ عَلَى زَانِيَةٍ فَقَالَ اللَّهُمَّ لَكَ الْحَمْدُ عَلَى زَانِيَةٍ لَأَتَصَدَّقَنَّ بِصَدَقَةٍ فَخَرَجَ بِصَدَقَتِهِ فَوَضَعَهَا فِي يَدَيْ غَنِيٍّ فَأَصْبَحُوا يَتَحَدَّثُونَ تُصُدِّقَ عَلَى غَنِيٍّ فَقَالَ اللَّهُمَّ لَكَ الْحَمْدُ عَلَى سَارِقٍ وَعَلَى زَانِيَةٍ وَعَلَى غَنِيٍّ فَأُتِيَ فَقِيلَ لَهُ أَمَّا صَدَقَتُكَ عَلَى سَارِقٍ فَلَعَلَّهُ أَنْ يَسْتَعِفَّ عَنْ سَرِقَتِهِ وَأَمَّا الزَّانِيَةُ فَلَعَلَّهَا أَنْ تَسْتَعِفَّ عَنْ زِنَاهَا وَأَمَّا الْغَنِيُّ فَلَعَلَّهُ يَعْتَبِرُ فَيُنْفِقُ مِمَّا أَعْطَاهُ اللَّهُ আবু হুরায়রা রা হতে বর্ণিত। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন, একদা (বনী ইসরাঈলের) জনৈক ব্যক্তি বলল, অবশ্যই আমি অবশ্যই আর রাতে কিছু দান করব। এ উদ্দেশ্যে সে স্বীয় দান নিয়ে বের হল, এবং (গোপনীয়তার কারণে নিজের অজান্তে) এক চোরের হাতে তা রেখে দিল। সকালে মানুষে বলাবলি করতে লাগল, কি আশ্চর্য! আজ রাতে এক চোরকে দান করা হয়েছে! সে বলল, হে আল্লাহ চোরের হাতে আমার দান যাওয়ার কারণে সকল প্রশংসা তোমার জন্য। অবশ্যই (আবার) দান করব। অতঃপর সে তার দান নিয়ে বের হল এবং এক ব্যভিচারিনীর হাতে রেখে দিল। সকালে মানুষ বলাবলি করতে লাগল, কি আশ্চর্য! গত রাতে একজন ব্যভিচারিনীকে দান করা হয়েছে। সে বলল, হে আল্লাহ ব্যভিচারিনীকে দান করার কারণে সমস্ত প্রশংসা তোমারই প্রাপ্য। অবশ্যই (আবার) সাদকা করব। সে তার দান নিয়ে বের হল অতঃপর এক ধনী লোকের হাতে দিয়ে দিল। সকালে মানুষ বলতে লাগল, আশ্চর্য ব্যাপার! আজ রাতে একজন ধনী মানুষকে দান করা হয়েছে। সে বললঃ হে আল্লাহ যাবতীয় প্রশংসা তোমারই প্রাপ্য। চোর ব্যভিচারিনী এবং ধনী লোককে দান করার কারণে। তার নিকট আসা হল (কোন ঐশী দূত হতে পারে) অতঃপর তাকে বলা হল, তোমার দান চোরের হাতে যাওয়ার কারণে- হতে পারে সে চুরি থেকে বিরত থাকবে। আর ব্যভিচারিনী, হতে পারে সে এ দানের কারণে ব্যভিচার থেকে বিরত হবে। আর ধনী ব্যক্তি এ থেকে শিক্ষা গ্রহণ করে হতে পারে সেও তার সম্পদ থেকে দান করবে।[9] দেখুন সৎ নিয়তের কিরূপ প্রভাব হয়। অতএব যে ব্যক্তি আপনার কাছে হাত পেতেছে আপনি তাকে ফকীর বা অভাবী মনে করে দান করেছেন কিন্তু পরে জানা গেল সে অভাবী নয় সম্পদশালী তবে আপনার যাকাত হয়ে যাবে। পুনরায় আদায় করতে হবে না। যাকাত বণ্টনের কাজে নিযুক্ত ব্যক্তি যাকাতের হকদার নয়

ভিডিও কলে ডাক্তারের পরামর্শ পেতে Play Store থেকে ডাউনলোড করুন Bissoy অ্যাপ