শেয়ার করুন বন্ধুর সাথে

ভিনেগারের মূল উপাদান হলো ইথানয়িক এসিড/এসিটিক এসিড। এর রাসায়নিক সংকেত হলো CH₃COOH। এটি একটি দুর্বল জৈব এসিড, ফলে জলীয় দ্রবণে সামান্য পরিমাণে বিয়োজিত হয়। 100% বিশুদ্ধ ইথানয়িক এসিড 16.7°C তাপমাত্রায় তুষারের ন্যায় সাদা আকার ধারণ করে। তাই একে গ্লেসিয়াল এসিটিক এসিড বলা হয়। এটি তরল হিসেবে পাওয়া যায় এবং এটা পানিতে যেকোনো অনুপাতে দ্রবণীয়; কারণ এটি পানির অণুর সাথে কার্যকরী হাইড্রোজেন বন্ধন গঠন করতে পারে। এর স্ফুটনাঙ্ক 118°C। ভিনেগারে 4-10% ইথানয়িক এসিড থাকে। ভিনেগার একটি প্রাকৃতিক খাদ্য সংরক্ষক। খাদ্য সংরক্ষণে এর ব্যবহার বহুল প্রচলিত। কারণ– এটি মৃদু এসিড হওয়ায় খাবারের সাথে গ্রহণ করলে এসিডিটি বাড়ার কোনো সম্ভাবনা নেই বরং খাবার এবং দেহের pH এর সমতা বজায় রাখে। এটি অম্লীয় দ্রবণ হওয়ায় এর সাহায্যে সংরক্ষিত খাদ্য সামগ্রীর দ্রবণে pH এর মান কমিয়ে দেয় (5 হতে 4 এর নিচে)। ফলে অণুজীব বিশেষ করে ব্যাকটেরিয়া জন্মানোর ও বংশ বিস্তারের অনুকূল পরিবেশ পায় না। ভিনেগারে 5% ইথানয়িক এসিড থাকলে এর pH এর মান প্রায় 2.4 হয় যা ব্যাকটেরিয়া ধ্বংসের জন্য যথেষ্ট। তবে ভিনেগারের সাথে লবণ প্রয়োগ করলে খাদ্য সংরক্ষণ আরও কার্যকরী হয়। কারণ লবণ যোগ করলে খাদ্য সামগ্রী হতে অতিরিক্ত পানি বের হয়ে আসে। এতে করে ভিনেগারের ঘনমাত্রা কমে যাবার সম্ভাবনা থাকে না। যেহেতু এটি জলীয় দ্রবণে মিশে যায়, তাই খাদ্যের পানির সাথে সহজে মিশে সর্বত্র সুষম ঘনমাত্রা বজায় রেখে অণুজীবের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলে। এর স্ফুটনাঙ্ক পানি অপেক্ষা বেশি হওয়ায় (118°C) খাদ্য প্রক্রিয়াজাতকরণের সময় তাপ প্রয়োগে এর বাষ্পীয়ভূত হবার সুযোগ থাকে না। এটি সহজলভ্য ও পার্শ্ব প্রতিক্রিয়াহীন হওয়ায় যেকোনো মানুষ ভিনেগারের সাহায্যে খাদ্য সামগ্রী প্রক্রিয়াজাত ও সংরক্ষণ করে সারাবছর খেতে পারবে। যদি কোনো খাদ্য সামগ্রী সংরক্ষণে pH মান কমানোর প্রয়োজন হয় তাহলে দ্রবণে এসিডের পরিমাণ বাড়িয়ে দিয়ে সহজেই তা করা যায়। সাধারণত যে সব খাদ্য সামগ্রীর pH এর মান বেশি সেক্ষেত্রে ভিনেগারে এসিডের মান বাড়াতে হয়। ভিনেগারের সাহায্যে ফল, শাক-সবজি, মাছ, মাংস প্রক্রিয়াজাতকরণ ও সংরক্ষণ করা যায়। সুতরাং খাদ্যের সংরক্ষণে ভিনেগারের ভূমিকা অপরিসীম।

ভিডিও কলে ডাক্তারের পরামর্শ পেতে Play Store থেকে ডাউনলোড করুন Bissoy অ্যাপ