সম্পত্তি হস্তান্তর আইন ১৮৮২ (টিপিঅ্যাক্ট)–এর ১২২ ধারা অনুসারে সম্পত্তিদাতা কোনো ব্যক্তিকে তাৎক্ষণিকভাবে কোনো সম্পত্তি হস্তান্তর করলে এবং গ্রহীতা বা গ্রহীতার পক্ষে কোনো ব্যক্তি ওই সম্পত্তি গ্রহণ করলে তাকে দান বলা হয়। দান বৈধ, হেবার ক্ষেত্রে তিনটি শর্ত পূরণ করতে হয়, তা হলো— ১. দাতা কর্তৃক দানের ঘোষণা প্রদান। ২. গ্রহীতা তার পক্ষ হতে দান গ্রহণ করা বা স্বীকার করা। ৩. দাতা কর্তৃক গ্রহীতাকে দানকৃত সম্পত্তির দখল প্রদান। হেবা করার পদ্ধতি শুধু মুসলমানদের জন্য প্রযোজ্য। তবে দানের ক্ষেত্রেও দাতা ও গ্রহীতার সম্পূর্ণ সম্মতি থাকতে হয়। ২০০৫ সালের আগস্ট মাস থেকে হেবা করা সম্পত্তির দলিল রেজিস্ট্রি করা বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। যদি জীবিত থাকা অবস্থায় আপনার মা আপনার নামে এ সম্পত্তি হস্তান্তর করতে চান তাহলে তিনি হেবা দলিল সম্পাদন এবং রেজিস্ট্রি করে তা করতে পারেন। অন্য উত্তরাধিকারীরা এ বিষয়ে কোনো আপত্তি করতে পারবে না। দখল হস্তান্তরে আগেই শুধু হেবা দলিল বাতিল করা যায়। নিম্নলিখিত ক্ষেত্রগুলো বিদ্যমান থাকলে হেবা দলিল বাতিল করা যায় না। ক. হেবাকৃত সম্পত্তির দাতা-গ্রহীতা স্বামী বা স্ত্রী হলে। খ. গ্রহীতা মৃত্যুবরণ করলে। গ. দাতা-গ্রহীতার মধ্যে বিবাহ–অযোগ্য সম্পর্ক বিদ্যমান থাকলে। ঘ. হেবাকৃত সম্পত্তি গ্রহীতা কর্তৃক বিক্রি বা হস্তান্তরিত হয়ে গেলে। ঙ. হেবাকৃত সম্পত্তি বিলীন বা ধ্বংস হয়ে গেলে। চ. হেবাকৃত সম্পত্তির মূল্য বেড়ে গেলে। ছ. হেবাকৃত সম্পত্তির প্রকৃতি সম্পূর্ণ পরিবর্তন হয়ে গেলে। জ. হেবাটি ‘হেবা বিল এওয়াজ’ (বিনিময়ে দান) হয়ে থাকলে হেবা দলিল বাতিল করা যায় না। উল্লিখিত ক্ষেত্রগুলো বিদ্যমান না থাকলে আদালতের মাধ্যমে হেবা দলিল বাতিল করা যায়। কাজেই উল্লিখিত বিষয়গুলো বিবেচনা করলে আপনার মা যদি আপনাকে সব ধরনের শর্ত পূরণ করে সম্পত্তি হেবা করেন এবং আপনি যদি তাঁর কাছ থেকে দখল বুঝে নেন, সে ক্ষেত্রে আপনার ভাইবোনেরা তা বাতিল করতে পারবে না।