বিয়ে মানেই আনন্দ উচ্ছ্বাস, বিয়ে মানেই আনন্দের ফুলঝুরি। বিয়ে নিয়ে আমাদের প্রত্যেকের জীবনেই রয়েছে নানা রকম পরিকল্পনা নানান রকম চিন্তা ভাবনা। আমাদের দেশে বিয়ে অনেক গুরুত্বপূর্ণ একটা ঘটনা আর এটাকে স্মরণীয় করে রাখতে মানুষের চিন্তার শেষ নেই। বিয়ের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত রয়েছে নানান ধরনের প্রস্তুতির ব্যপার এর সাথে জড়িয়ে আছে খরচেরও অনেক বিষয়। বিয়ে মানেই একটা বিশাল কর্মযজ্ঞ। ধুমধাম করে বিয়ে না হলে সমাজে থাকেনা মানসম্মান। আর তাই তো সবকিছুর পূর্বে বিয়ের খরচের ব্যপারটা মাথায় রাখতে হয়। কিন্তু আজকাল সচেতন মানুষরা বিয়েতে কম খরচ করাটাই বেশি পছন্দ করেন কেননা বিয়ে মানেই তো খরচের শুরু, বিয়ে পরবর্তী জীবনটাও তো ভালোভাবে কাটাতে হবে। আজকে তেমনই একটি বিষয় নিয়ে আলোচনা করব আমরা। বিয়েতে কিভাবে কমিয়ে আনা যায় খরচ এবং এক্ষেত্রে কোন কোন বিষয় গুলো মাথায় রাখতে হবে তাই নিয়ে আমাদের আজকের আলোচনা। আসুন জেনে নেই কিভাবে অর্থের সাশ্রয় করে সম্পন্ন করা যায় বিয়েটা।

বিয়ের বাজেট

বাজেট মানে কি আমাদের সবার ই ধারণা আছে। শুধু বিয়ে নয় প্রত্যেকটা কাজেই খরচের বাজেট করে নেয়া জরুরী, যেহেতু বিয়ে একটি বিশাল খরচের ব্যপার তাই শুরুতেই বাজেট করে নেয়াটা জরুরী। কোন খাত থেকে কত টাকা আসছে, জমানো টাকা কিংবা রোজগারের টাকা তা হিসেব করে একটা ছক করে ফেলুন। এরপর বিয়ের বাজেটের অন্তত ১০% শুরুতেই আলাদা জায়গায় সরিয়ে রাখুন। তাতে সুবিধা অনেক। সব কিছু আয়োজনের সময়ে আসল খরচ অনুমানের থেকে বেড়ে গেলে, তা সামাল দিতে অসুবিধা হবে না। আর যদি কিছু টাকা শেষে বাঁচাতে পারেন, তাতে তো আপনার ই ভাল। একান্ত প্রয়োজন না হলে ধার করা থেকে বিরত থাকাই বুদ্ধিমানের কাজ।

খরচের খাত নোট করুন

এরপর যেটা করবেন সেটা হলো কোথায় কোথায় খরচ হতে পারে তা সময় নিয়ে নোট করে ফেলুন প্রয়োজনে অন্য কারো সাহায্য নিন। কোন কোন খাতে বেশি খরচ হতে পারে তার ও একটা তালিকা করে নিন যেমনঃ অনুষ্ঠান বাড়ি ভাড়া,লাইটিং, ডেকরেশন, ফুল, খাওয়াদাওয়া, গয়না, সাজ, গাড়ি ভাড়া, বিয়ের কার্ড, ছবি, ভিডিও, মধুচন্দ্রিমা। এগুলো ছাড়াও অন্যান্য যেসব ছোট ছোট খরচের খাত আছে ওগুলোও নোট করে নিন এতে খরচ আন্দাজ করতে সুবিধা ই হবে আপনার।

অতিথি আপ্যায়নে কাটছাঁট

এরপর আসে অতিথি আপ্যায়ন। এই খাতে সবচেয়ে বেশি খরচ হয়ে থাকে৪ সাধারণত, তাই অতিথিদের তালিকা করার সময় অবাঞ্ছিত অতিথি কিংবা বহুদিন যোগাযোগ না থাকা অতিথিদের বাদ দিয়ে দেওয়াই শ্রেয়। এতে খরচের পরিমাণ টা অনেকটা কমবে।

ভেন্যু এবং আমন্ত্রণ

কোথায় বিয়ের আয়োজন করবেন সেটা বাড়ির বড়দের সাথে আলোচনা করে সাশ্রয়ী কোনো জায়গা নির্বাচন করুন। কেননা এটা অযথাই বাড়তি খরচ তাছাড়া আপনার বাড়ি কিংবা ছাদ যদি যথেষ্ট বড় এবং নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পারেন তাহলে অন্য কোথাও গিয়ে সময়, শ্রম কিংবা টাকা নষ্ট না করাই শ্রেয়। আর আমন্ত্রণের ক্ষেত্রে কার্ডের চাইতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম যেমন ফেসবুক, হোয়াটসএপ, ইমেইল অথবা অন্যান্য মাধ্যমে আমন্ত্রণ পৌঁছে দিয়ে ও বাঁচিয়ে নিতে পারেন অনেক খরচ তার সাথে সময়।

কেনাকাটায় হোন সতর্ক

বিয়ের বাজেটের বেশির ভাগ টাকা ই খরচ হয় কেনাকাটার পেছনে আর এই দিকটা সতর্কতার সাথে সামলাতে পারলে অনেক টাকাই সাশ্রয় হতে পারে। প্রায় সব শপিংমলেই সব সময় কিছু না কিছু ডিসকাউন্ট থাকে, কেনাকাটার ক্ষেত্রে এই সুযোগ কাজে লাগাতে পারেন। তাছাড়া এক জায়গা থেকে বেশি কেনাকাটা করলে সেখানেও পেতে পারেন মোট খরচের উপর একটা ডিসকাউন্ট। অতিরিক্ত কেনাকাটা পরিহার করুন, কারণ বিয়ে মিটে গেলেও কেনাকাটা করার সুযোগ থাকে।

ভিডিও এবং ফটোগ্রাফি

সকল বিয়েতেই মোটা একটা অংশ খরচ করতে হয় ভিডিও অথবা ফটোগ্রাফির পেছনে এক্ষেত্রে পরিচিত অথবা কারো জানাশোনা থাকলে তাদের সাহায্য নিয়ে ও করতে পারেন সাশ্রয়। ইন্টারনেট থেকে খুঁজে নিয়ে নিজেও ছবি তোলার এঙ্গেলগুলো বুঝে নিন। দেখবেন ভালো ফটো আইডিয়া পেয়ে যাবেন। আর পূর্বে নির্ধারণ করা খরচের তালিকা থেকেও অনেক কম খরচ হবে।

পরিশেষে বিয়েতে সাশ্রয় করে নিজের জীবনকে আরো সুন্দর করে গুছিয়ে তোলার জন্য আনুষঙ্গিক ব্যায়ের দিকে নজর দিলে সুখী দাম্পত্য জীবনে বাধা অনেকটা কমে যাবে। আর তাইতো জেনে বুঝে সিদ্ধান্ত নিলে আখেরে লাভবান আপনিই হবেন।

আরো বিস্তারিত জানতে ভিজিট করুন Butterfly তে।


শেয়ার করুন বন্ধুর সাথে