অ্যাথলেট ফুট কি?
অ্যাথলেট ফুট হলো একটি ছত্রাকজনিত সংক্রমণ, সাধারণত পায়ের আঙ্গুলের মধ্যিখানের ত্বক এতে আক্রান্ত হয়। এটির এরকম নাম কারন এটি সাধারনত অ্যাথলেট বা ক্রীড়াবিদদের বেশি হয়। এই ধরণের সংক্রমণের জন্যে দায়ী ছত্রাকটি হলো টিনিয়া, এইকারনে একে টিনিয়া পেডিসও বলা হয়ে থাকে।

অ্যাথলেট ফুটের প্রধান লক্ষন ও উপসর্গগুলি কি কি?

  • যে ব্যক্তি অ্যাথলেট ফুট রোগে ভুগছেন তাঁর পায়ের আঙ্গুলের মাঝখানে চুলকানি ও জ্বালার অনুভূতি হবে।
  • চামড়া লাল ও শুষ্ক, আঁশের মতো দেখায়।
  • কখনো কখনো পায়ের পাতায় ফোস্কা বা ঘা হয়ে যায়, সাথে সামান্য রক্তপাত হতে পারে।
  • নখ ঝুরঝুরে ও ভঙ্গুর হয়ে যায়।
  • সংক্রমণ হাতে বা শরীরের অন্য কোনো জায়গায় ছড়িয়ে যেতে পারে যদি আক্রান্ত জায়গাটা বারবার ছোঁয়া হয়।


অ্যাথলেট ফুটের প্রধান কারনগুলি কি কি?

  • অ্যাথলেট ফুটের জন্যে দায়ী ছত্রাকটি হলো মাইক্রোস্পোরাম । এটা একটা সংক্রামক রোগ এবং ছুঁলে বা সংক্রামিত মোজা বা কার্পেট ইত্যাদি থেকে এই রোগটি ছড়াতে পারে।
  • কদাচিৎ, ব্যাকটেরিয়া বা সোরিয়াসিস এই সংক্রমণের অনুরূপ আচরণ করতে পারে।
  • ভেজা, অপরিস্কার পা বা অবিন্যস্ত নখ থেকে একজন ব্যক্তির এই সংক্রমণ হতে পারে।
  • খালি পায়ে রাস্তায় হাঁটা ও অন্য কারোর মোজা পড়লে অ্যাথলেট ফুট হতে পারে। অফিস, জিম, এবং সুইমিং পুল প্রভৃতি যেসব স্থানগুলি অন্যদের সাথে যৌথভাবে ব্যবহার করা হয় সেখান থেকেও এই সংক্রমণ ছড়াতে পারে।
  • যেসব রোগীর মধুমেহ বা ডায়াবেটিস আছে অথবা ইমিউনোকম্প্রোমাইজ্ড বা বিপদগ্রস্ত রোগ প্রতিরোধক অবস্থা যেমন এইডসে আক্রান্ত তাদের এই সংক্রমণ হতে পারে।
  • অত্যন্ত ঘামও এই রোগের কারণ হতে পারে।


কিভাবে এটি নির্ণয় করা হয় এবং এর চিকিৎসা কি?
আক্রান্ত পায়ের পরীক্ষা করলে চিকিৎসক এই রোগ নির্ণয় করতে পারেন। যদি কখনও, এর কারণ বোঝা না যায়, তাহলে ত্বকের বায়োপসি করেও নিশ্চিত হওয়া যায়।

এই অবস্থার চিকিৎসার অন্তর্গত হলো:

  • অ্যান্টিফাঙ্গাল বা ছত্রাকরোধী ওষুধ, যেটি প্রেসক্রিপশন অনুযায়ী দোকান থেকে কিনতে পারা যাবে। এই ওষুধগুলি, রোগের প্রখরতা অনুযায়ী, ৪ সপ্তাহের জন্য দেওয়া হয়।
  • যদি ব্যাকটেরিয়ার কারনে এই রোগ হয়, তাহলে অ্যান্টি-ব্যাকটেরিয়াল ওষুধ দেওয়া হয়।
  • পা সবসময়ে পরিস্কার রাখা উচিৎ এবং রাস্তায় পা ঢেকে চলা উচিৎ। যদি ফাঙ্গাস বা ছত্রাককে সম্পূর্ন নির্মূল না করা যায় তবে পুনরায় এই রোগ হতে পারে।


নিজের যত্ন নেওয়া:

  • ভিজা বা অপরিষ্কার মোজা বা জু্তো না পরা।
  • বাড়ি ফিরে পা ধোয়া উচিৎ, বিশেষ করে রাস্তা থেকে এলে।
  • অন্যের তোয়ালে, রুমাল, মোজা ব্যবহার না করা।
  • পা সুরক্ষিত রাখার জন্যে ভালোভাবে ঢাকা জুতো ও চটি পড়া উচিৎ।

শেয়ার করুন বন্ধুর সাথে