কোলেস্টেটিক লিভার ডিজিজ বা কোলেস্টাসিস কি?
কোলেস্টাটিক লিভার ডিজিজ কোলেস্টাসিস নামেও পরিচিত। এটি এমন এক ধরণের শারীরিক অবস্থা যেখানে লিভার থেকে পিত্ত ক্ষরণ হওয়া কমে যায়, নয়তো বন্ধ হয়ে যায়। এটা তীব্র অথবা দীর্ঘস্থায়ী হতে পারে এবং সব বয়সের ব্যক্তিই এই অসুখে আক্রান্ত হতে পারেন। এর শ্রেণিবিভাগ করা হয় - এক্সট্রাহেপাটিক কোলেস্টাসিস, যা লিভারের বাইরে হয় এবং ইন্ট্রাহেপাটিক কোলেস্টাসিস, যা লিভারের মধ্যে হয়।
কোলেস্টাসিসের প্রধান লক্ষণ ও উপসর্গগুলি কি কি?
কোলেস্টাসিসের উপসর্গগুলি হেপাটাইটিসের মতোই, যেটা এই রোগের একটা কারণ। অনেকসময় এরকম হতে পারে যে কোলেস্টাসিস রোগের শারীরিক লক্ষণ দেখা দেয়না, কিন্তু তা রোগীর দেহে বিদ্যমান থাকতে পারে। কোলেস্টাসিসের উপসর্গগুলি নিচে বলা হল:
- বমি ভাব
- গাঢ় রংয়ের প্রস্রাব
- সাদা বা কাদা রংয়ের মল
- চুলকানো
- পেটের উপরিভাগে ব্যথা
- হলদেটে চোখ ও চামড়া
- ক্ষুধামান্দ্য
- কিছু খাবারের হজম করতে অসুবিধা।
কোলেস্টাসিসের প্রধান কারণগুলি কি কি?
বয়সের উপর নির্ভর করে কোলেস্টাসিসের কারণ:
- শিশু ও বাচ্চাদের মধ্যে কোলেস্টাসিসের কারণ-
- জিঙ্ক স্টোরেজ ডিজঅর্ডারের মতো জিনগত কারণ
- সিরহন জিনের মিউটেশন
- বাইলার’স সিনড্রোম।
প্রাপ্তবয়স্কদের কোলেস্টাসিস হওয়ার কারন-
- তীব্র হেপাটাইটিস
- সিস্টিক ফাইব্রোসিস
- জন্ম নিয়ন্ত্রণ বড়ি
- অ্যান্টিবায়োটিক বা কোনো ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া
- ভেষজ চিকিৎসা
- দোকান থেকে বলে কেনা ওষুধ।
অবস্থানের উপর নির্ভর করে কোলেস্টাসিসের কারণ:
- ইন্ট্রাহেপাটিক কোলেস্ট্যাসিসের কারণ-
- গর্ভাবস্থা
- যক্ষা
- মদ্যপানের দরুন লিভারের রোগ
- লিম্ফোমা
- লিভারে ব্যাক্টেরিয়া ঘটিত ফোঁড়া
- বাইলিয়ারি সিরোসিস
- রক্তের মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া সংক্রমন।
এক্স্ট্রাহেপাটিক কোলেস্টাসিসের কারণ-
- সিস্টস
- পিত্ত নালীতে টিউমার
- পিত্ত নালীতে পাথর
- অগ্নাশয়ের প্রদাহ
- অগ্নাশয়ে টিউমার।
কিভাবে কোলেস্টাসিস নির্ণয় করা হয় ও এর চিকিৎসা কি?
যদি চিকিৎসক কোলেস্টাসিসের সন্দেহ করেন, তাহলে নিম্নলিখিত পরীক্ষাগুলি করতে বলেন:
- লিভার কার্যপরীক্ষা: এতে পিত্ত এবং সিরামের আল্কালাইন ফসফেটের মাত্রা বৃদ্ধি পেলে জানা যায়।
- লিভারের ইমেজিং পরীক্ষা নিচে বর্ণনা করা হলো:
- পেটের এমআরআই
- পেটের আল্ট্রাসাউন্ড ইমেজিং
- পেটের সিটি স্ক্যান
- এন্ডোস্কোপিক রেট্রোগ্রেড কোল্যাঞ্জিওপ্যানক্রিয়াটোগ্রাফি।
কোলেস্টাটিক লিভার ডিজিজের চিকিৎসা নির্ভর করে সনাক্তকরণের এবং শারীরিক অবস্থার অন্তর্নিহিত কারণে ওপর। কোলেস্টাসিসের চিকিৎসা নিচে বলা হলো:
- উপসর্গ অনুযায়ী চিকিৎসা: প্রুরাইটাস (চুলকানো বা আঁচড়ানোর ইচ্ছা) সবচেয়ে সাধারন উপসর্গ, যেটার জন্য পরে অনিদ্রা হতে পারে এবং এইভাবেই নিয়ন্ত্রন দরকার হয়। প্রুরাইটাসের চিকিৎসার জন্য সাধারণত আনিওন এক্সচেঞ্জ রেজিনের মতো কোলেস্টারামাইন নিতে বলা হয়। প্রুরাইটাসের চিকিৎসার জন্য অ্যান্টিবায়োটিকের ব্যবহার দ্বিতীয় পদ্ধতি।
- নির্দিষ্ট চিকিৎসা: শারীরিক অবস্থার কারণের ওপর বিভিন্ন রকমের অ্যান্টিবায়োটিক এবং কর্টিকস্টেরয়েড থেরাপি করা হতে পারে।