ক্রনিক মাইলোজেনস লিউকেমিয়া (সিএমএল) কি?
ক্রনিক মাইলোজেনস লিউকেমিয়া (সিএমএল), অন্য ভাষায় ক্রনিক মায়েলয়েড লিউকেমিয়া হল রক্তকোষ এবং অস্থি মজ্জার ক্যান্সার। অস্থিমজ্জা হল হাড়ের নরম অংশ যেখানে রক্ত কোষের উৎপাদন হয়। ক্রনিক মাইলোজেনস লিউকেমিয়া হল এক ধরণের লিউকেমিয়া যেখানে শ্বেত রক্তকণিকার অনিয়ন্ত্রিত বৃদ্ধি দেখা যায়।

ক্রনিক মাইলোজেনস লিউকেমিয়া রোগের মূল লক্ষণ এবং উপসর্গগুলি কি কি?

  • ক্রনিক মাইলোজেনস লিউকেমিয়ার রোগীদের কোনো উপসর্গই দেখা যায় না যখন রোগটি দীর্ঘস্থায়ী পর্যায়ে পৌঁছে যায়।
  • পরের পর্যায় যাকে দ্রুততর পর্যায় বলা হয়, রাতে ঘাম হওয়া, অবসাদ, ওজন কমে যাওয়া এবং সর্বক্ষণ জ্বর থাকা হল সাধারণ উপসর্গ।
  • রোগীর যখন খুব গুরুতর লক্ষণ দেখা দেয় সেই পর্যায়কে ব্লাস্টিক বা বিস্ফোরক পর্যায় বলে, যা ব্যথা, সংক্রমণ এবং অনায়াস রক্তপাতের মাধ্যমে প্রকাশ পায়।
  • শ্বেত রক্তকণিকার সংখ্যায় আর গঠনে অস্বাভাবিকতা থাকার কারণে, প্লীহারও ক্ষতি হয়। রোগীর পেটের উপরের অংশে ব্যথা অনুভূত হতে পারে প্লীহা বড় হয়ে যাওয়ার কারণে।


ক্রনিক মাইলোজেনস লিউকেমিয়া রোগের মূল কারণগুলি কি কি?

  • দুর্ভাগ্যবশত, ক্রনিক মাইলোজেনস লিউকেমিয়ার নির্দিষ্ট কারণ এখনও জানা যায়নি।
  • প্রচলিত ঝুঁকির কারণ হল খুবই উচ্চ পরিমাণের বিকিরণের সম্মুখীন হওয়া।
  • এই ক্যান্সার মানুষের শরীরে ২২ সংখ্যক ক্রোমোজোমের ত্রুটির কারণে হয়, এটি খুবই সাধারণভাবে দেখা যায় সেই সব রোগীর মধ্যে যারা সিএমএল রোগাক্রান্ত। এই ক্রোমোজোমকে ফিলাডেলফিয়া ক্রোমোজোম নামেও চিহ্নিত করা হয়।
  • এই অবস্থা সাধারণত মাঝ-বয়সী ব্যক্তিদের মধ্যে দেখা যায়, এবং পুরুষরা মহিলাদের চেয়ে বেশি এতে আক্রান্ত হয়।


ক্রনিক মাইলোজেনস লিউকেমিয়া রোগ কিভাবে নির্ণয় করা হয় এবং এর চিকিৎসা কিভাবে করা হয়?

  • প্রাথমিক শারীরিক পরীক্ষা ডাক্তারকে একটা ধারণা দেবে রোগীর শরীরের মূল পরিমাপকগুলির বিষয়ে যেমন রক্তচাপ, হৃদস্পন্দন এবং নাড়ির গতি। লিম্প নোডে বা প্লীহায় কোন ফোলাভাব আছে কিনা তাও পরীক্ষা করা হয়।
  • রক্ত পরীক্ষা করে রক্তকোষের সংখ্যায় ও ধরণে অস্বাভাবিকতা আছে কি না তা জানা যায়।
  • ফিলাডেলফিয়া ক্রোমোজোম সনাক্ত করতে বিশেষ পরীক্ষা করা হয়, যেমন পলিমেরেজ চেন রিঅ্যাকশন টেস্ট।
  • রোগের প্রাবল্য জানার জন্য অস্থিমজ্জার বায়োপসি করা হয়।
  • সব কোষ নিষ্কাশিত করা কঠিন যাতে ত্রুটিপূর্ণ জিন আছে, কিন্তু চিকিৎসার লক্ষ্য হল এই সব কোষগুলোকে ধ্বংস করা।
  • কেমোথেরাপি ছাড়া, কিছু বিশেষ ওষুধ আছে যাকে টার্গেটেড ড্রাগস বলা হয় সিএমএল রোগীদের জন্য। যদি কোন রোগীর ক্ষেত্রে চিকিৎসায় কোন একটি ওষুধের প্রতি প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি হয়, তাহলে অন্য ওষুধ দেওয়া হয়।
  • অস্থিমজ্জার প্রতিস্থাপন রোগীর জন্য চিকিৎসায় সম্পূর্ণভাবে সেরে ওঠার একমাত্র আশা। দান করা কোষ অস্থিমজ্জায় নতুন স্বাস্থ্যকর কোষ উৎপাদনে সাহায্য করে।
  • আরও ভালো চিকিৎসার সুযোগের জন্য গবেষণা চললেও, বিশেষ করে প্রতিরোধী সিএমএলের চিকিৎসার ক্ষেত্রে, আরোগ্যের সম্ভাবনা খুব বেশী দূর এগোয় নি।

শেয়ার করুন বন্ধুর সাথে