শেয়ার করুন বন্ধুর সাথে
Call

শাফাআত একটি বিরাট নিয়ামত ।মহানবি (সঃ) এর শাফাআত ছাড়া কিয়ামতের দিন সফলতা লাভ করা সম্ভব না।

ভিডিও কলে ডাক্তারের পরামর্শ পেতে Play Store থেকে ডাউনলোড করুন Bissoy অ্যাপ
Call

শাফায়াত শব্দটির আভিধানিক অর্থ মিলিয়ে নেয়া, নিজের সাথে একত্রিত করে নেয়া। শরীয়তের পরিভাষায় কল্যাণ লাভ অথবা অকল্যাণ প্রতিহত করার আশায় অপরের জন্য মধ্যস'তা করাকে শাফায়াত বলে। শাফায়াত দু’প্রকার। যথাঃ- প্রথমতঃ শরীয়ত সম্মত শাফায়াত। কুরআন ও সুন্নাহয় এ প্রকার শাফায়াতের বর্ণনা এসেছে। তাওহীদপন্থীগণ এ ধরণের শাফায়াতের হকদার হবে। আবু হুরায়রা (রাঃ) নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)কে জিজ্ঞাসা করলেন, ﻣَﻦْ ﺃَﺳْﻌَﺪُ ﺍﻟﻨَّﺎﺱِ ﺑِﺸَﻔَﺎﻋَﺘِﻚَ ﻳَﻮْﻡَ ﺍﻟْﻘِﻴَﺎﻣَﺔِ ﻗَﺎﻝَ ﺭَﺳُﻮﻝُ ﺍﻟﻠَّﻪِ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠَّﻪ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ ﻟَﻘَﺪْ ﻇَﻨَﻨْﺖُ ﻳَﺎ ﺃَﺑَﺎ ﻫُﺮَﻳْﺮَﺓَ ﺃَﻥْ ﻟَﺎ ﻳَﺴْﺄَﻟُﻨِﻲ ﻋَﻦْ ﻫَﺬَﺍ ﺍﻟْﺤَﺪِﻳﺚِ ﺃَﺣَﺪٌ ﺃَﻭَّﻝُ ﻣِﻨْﻚَ ﻟِﻤَﺎ ﺭَﺃَﻳْﺖُ ﻣِﻦْ ﺣِﺮْﺻِﻚَ ﻋَﻠَﻰ ﺍﻟْﺤَﺪِﻳﺚِ ﺃَﺳْﻌَﺪُ ﺍﻟﻨَّﺎﺱِ ﺑِﺸَﻔَﺎﻋَﺘِﻲ ﻳَﻮْﻡَ ﺍﻟْﻘِﻴَﺎﻣَﺔِ ﻣَﻦْ ﻗَﺎﻝَ ﻟَﺎ ﺇِﻟَﻪَ ﺇِﻟَّﺎ ﺍﻟﻠَّﻪُ ﺧَﺎﻟِﺼًﺎ ﻣِﻦْ ﻗَﻠْﺒِﻪِ ﺃَﻭْ ﻧَﻔْﺴِﻪِ অর্থঃ “কিয়ামতের দিন কোন্ ব্যক্তি আপনার শাফায়াতের বেশী হকদার হবে? নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, হে আবু হুরায়রা! তোমার হাদীছ শেখার আগ্রহ দেখে আমার ধারণা ছিল যে, তোমার পূর্বে এ বিষয় সম্পর্কে কেউ জিজ্ঞাসা করবে না। যে ব্যক্তি অন-র থেকে ইখলাসের সাথে লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহ পাঠ করবে, কিয়ামতের দিন সে ব্যক্তি আমার শাফায়াতের সবচেয়ে বেশী হকদার হবে ( বুখারী, অধ্যায়ঃ কিতাবুল ইলম।) ( এ প্রকার শাফায়াতের জন্য ৩টি শর্ত রয়েছে। ১- শাফায়াতকারীর উপর আল্লাহর সন্তুষ্টি থাকা। ২- যার জন্য সুপারিশ করা হবে, তার উপরও আল্লাহর সন্তুষ্টি থাকা। ৩- শাফায়াতকারীর জন্য আল্লাহর পক্ষ থেকে শাফায়াত করার অনুমতি থাকা। আল্লাহ তাআ’লা এই শর্তগুলো কুরআন মজীদে উল্লেখ করেছেন। আল্লাহ বলেন, ﻭَﻛَﻢْ ﻣِﻦْ ﻣَﻠَﻚٍ ﻓِﻲ ﺍﻟﺴَّﻤَﺎﻭَﺍﺕِ ﻟَﺎ ﺗُﻐْﻨِﻲ ﺷَﻔَﺎﻋَﺘُﻬُﻢْ ﺷَﻴْﺌًﺎ ﺇِﻟَّﺎ ﻣِﻦْ ﺑَﻌْﺪِ ﺃَﻥْ ﻳَﺄْﺫَﻥَ ﺍﻟﻠَّﻪُ ﻟِﻤَﻦْ ﻳَﺸَﺎﺀُ ﻭَﻳَﺮْﺿَﻰ অর্থঃ “আকাশে অনেক ফেরেশতা রয়েছেন, যাদের কোন সুপারিশ ফলপ্রসু হয়না। কিন' আল্লাহ যার জন্য ইচ্ছা ও যাকে পছন্দ করেন এবং যাকে শাফায়াত করার অনুমতি দেন তার কথা ভিন্ন।” (সূরা নাজ্ মঃ ২৬) আল্লাহ বলেন, ﻣَﻦْ ﺫَﺍ ﺍﻟَّﺬِﻱ ﻳَﺸْﻔَﻊُ ﻋِﻨْﺪَﻩُ ﺇِﻟَّﺎ ﺑِﺈِﺫْﻧِﻪِ অর্থঃ “কে এমন আছে যে, সুপারিশ করবে তাঁর কাছে তাঁর অনুমতি ছাড়া?” (সূরা বাকারাঃ ২৫৫) আল্লাহ বলেন, ﻳَﻮْﻣَﺌِﺬٍ ﻟَﺎ ﺗَﻨﻔَﻊُ ﺍﻟﺸَّﻔَﺎﻋَﺔُ ﺇِﻟَّﺎ ﻣَﻦْ ﺃَﺫِﻥَ ﻟَﻪُ ﺍﻟﺮَّﺣْﻤَﺎﻥُ ﻭَﺭَﺿِﻲَ ﻟَﻪُ ﻗَﻮْﻟًﺎ অর্থঃ “দয়াময় আল্লাহ যাকে অনুমতি দেবেন এবং যার কথায় সন'ষ্ট হবেন সে ছাড়া কারও সুপারিশ সেদিন কোন উপকারে আসবে না।” (সূরা ত্বো-হাঃ ১০৯) আল্লাহ তাআ’লা বলেন, ﻭَﻟَﺎ ﻳَﺸْﻔَﻌُﻮﻥَ ﺇِﻟَّﺎ ﻟِﻤَﻦْ ﺍﺭْﺗَﻀَﻰ অর্থঃ “তারা শুধু তাদের জন্যে সুপারিশ করবেন, যাদের প্রতি আল্লাহ সন'ষ্ট।” (সূরা আন্বীয়াঃ ২৮) সুতরাং শাফায়াত পাওয়ার জন্য উপরোক্ত তিনটি শর্ত থাকা আবশ্যক। এই শাফায়ত আবার দু’প্রকারঃ ১) সাধারণ শাফায়াতঃ সাধারণ শাফায়াতের অর্থ হল, সৎ বান্দাদের মধ্যে থেকে যাকে ইচ্ছা এবং যার জন্য ইচ্ছা আল্লাহ শাফায়াত করার অনুমতি দিবেন। এই ধরণের শাফায়াত আল্লাহর অনুমতি পেয়ে আমাদের নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম), অন্যান্য নবী-রাসূল, সত্যবাদীগণ, শহীদগণ এবং নেককারগণ করবেন। তাঁরা পাপী মুমিনদেরেকে জাহান্নামের আগুন থেকে বের করে আনার ব্যাপারে সুপারিশ করবেন। ২) বিশেষ ও নির্দিষ্ট সুপারিশঃ এই ধরণের শাফায়াত নবী মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)এর জন্য নির্দিষ্ট। এই শাফায়াতের মধ্যে সবচেয়ে বড় হল হাশরের মাঠের শাফায়াত। হাশরের মাঠে মানুষ যখন বিপদে পড়ে যাবে এবং অসহনীয় আযাবে গ্রেপ্তার হবে, তখন তারা একজন সুপারিশকারী খুঁজে ফিরবে। যাতে করে তারা এই ভীষণ সংকট থেকে রেহাই পেতে পারে। প্রথমে তারা আদম (আঃ)এর কাছে গমণ করবে। অতঃপর পর্যায়ক্রমে নূহ, ইবরাহীম, মূসা, ঈসা (আঃ)এর কাছে যাবে। তাঁরা কেউ সুপারিশ করতে সাহস করবেন না। অবশেষে তারা নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)এর কাছে আসবে। তিনি মানুষকে এই বিপদজনক অবস্থা হতে মুক্ত করার জন্য আল্লাহর কাছে সুপারিশ করবেন। আল্লাহ তাঁর দু’আ এবং শাফায়াত কবূল করবেন। এটিই হল সুমহান মর্যাদা, যা আল্লাহ তাকে দান করেছেন। আল্লাহ বলেন, ﻭَﻣِﻦْ ﺍﻟﻠَّﻴْﻞِ ﻓَﺘَﻬَﺠَّﺪْ ﺑِﻪِ ﻧَﺎﻓِﻠَﺔً ﻟَﻚَ ﻋَﺴَﻰ ﺃَﻥْ ﻳَﺒْﻌَﺜَﻚَ ﺭَﺑُّﻚَ ﻣَﻘَﺎﻣًﺎ ﻣَﺤْﻤُﻮﺩًﺍ অর্থঃ “রাত্রির কিছু অংশ জাগ্রত থেকে আল্লাহর এবাদতে মশগুল থাকুন। এটা আপনার জন্য অতিরিক্ত (নফল ইবাদত)। আপনার পালনকর্তা অচিরেই আপনাকে সুমহান মর্যাদায় অধিষ্ঠিত করবেন।” (সূরা বানী ইসরাঈলঃ ৭৯)।

ভিডিও কলে ডাক্তারের পরামর্শ পেতে Play Store থেকে ডাউনলোড করুন Bissoy অ্যাপ