চুলের আর্দ্র ভাব কাটাতে কিছু বাড়তি সতর্কতা তাই বর্ষা থেকেই নিতে শুরু করতে হবে। চুলের ধরন সবার এক নয়। এক এক রকম চুলের যত্নের উপায় তাই আলাদা প্রকৃতির হয়। তৈলাক্ত চুলের জন্য যে উপায়ে আস্থা রাখা যায়, শুষ্ক চুলের বেলায় সে উপায়ে ভরসা রাখা যায় না।
বর্ষায় হট অয়েল ট্রিটমেন্ট চুলের যত্নের সবচেয়ে কার্যকর উপায়। কিন্তু চুলের ধরন অনুযায়ী এই যত্ন বদলে যায়। জানেন কি, আপনার চুলে কোন ধরনের হট অয়েল ট্রিটমেন্ট জরুরি? সহজ এই যত্ন বাড়িতেই করতে পারবেন প্রতি দিন। বিশেষ করে চুলে রং করা থাকলে এই হট অয়েল মাসাজ চুলের স্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত কার্যকর। তবে সে ক্ষেত্রে চুল ধোওয়ার জন্য চুলের রং ধরে রাখবে এমন শ্যাম্পু ও কন্ডিশনার ব্যবহার করতে হবে।
শুষ্ক চুল: শুষ্ক চুলে সপ্তাহে তিন দিন নারকেল তেল ও ক্যাস্টর অয়েল মিশিয়ে গরম করে নিন। ওই মিশ্রণ চুলে ও মাথার ত্বকে আলতো মাসাজ করে লাগিয়ে নিন। এর পর শাওয়ার ক্যাপ পরে শুয়ে পড়ুন। সারা রাত ধরে তেল বসতে দিন মাথার ত্বকে। সকালে শ্যাম্পু করে কন্ডিশনিং করে নিন চুল।
স্বাভাবিক চুল: চুল খুব শুষ্ক বা তেলা কোনওটাই না হয়ে মাঝারি ধরনের হলে আলাদা করে সাপ্তাহিক নিয়মে অয়েল ট্রিটমেন্টের প্রয়োজন পড়ে না। তবে চুলকে ঝলমলে আর সুস্থ রাখতে মাসে দু’ বার হট অয়েল ট্রিটমেন্ট করাতে পারেন। সে ক্ষেত্রেও নারকেল তেল ও ক্যাস্টর অয়েলে ভরসা রাখুন।
তৈলাক্ত চুল: তেলতেলে চুলে আবার তেল মাখার কথা শুনে অবাক লাগতে পারে। তবে মাসে এক বার আমন্ড তেল ও ক্যাস্টর অয়েল মিশিয়ে গরম করে এই ধরনের চুলে মাসাজ করলে চুলের আখেরে লাভ হয়। তবে সে ক্ষেত্রে সারা রাত ধরে চুলকে তেলে মুড়ে না রেখে আধ ঘণ্টা ভিজিয়ে রাখলেই যথেষ্ট। (সম্পূর্ণ তথ্যটি নেওয়া হয়েছে এবি নিউজ২৪ডট কম দৈনিক পত্রিকা, অনলাইন সংস্করণ, লাইফ স্টাইল ডেস্ক হতে)
চুলের যত্নে নানা রকম তেলের ভিন্ন ভিন্ন উপকারিতা রয়েছে৷ যত্নে এই তেল সবচেয়ে পরিচিত ও বহুল ব্যবহৃত৷ নিষ্প্রাণ চুলে সজীবতা ফিরিয়ে আনতে এর কোনো জুড়ি নেই৷ এটি চুলের রুক্ষতা ও আগা ফেটে যাওয়া রোধ করে৷ চাইলে ঘরে বসেই আপনি খাঁটি নারকেল তেল বানিয়ে ফেলতে পারেন৷ ঝুনা নারকেলের শাঁস ভালোমতো বেটে ২০ থেকে ২৫ মিনিট চুলায় জ্বাল দিয়ে নিন৷ এ থেকেই তেল বেরিয়ে আসবে৷ এই তেল ঠান্ডা করে চুলের গোড়াসহ পুরো চুলে লাগিয়ে নিন৷ এটি একবার বানিয়ে বোতলে সংরক্ষণ করে রাখলে অনেক দিন ব্যবহার করতে পারবেন৷
সরিষার তেলরোদে পুড়ে চুল লালচে হয়ে গেলে, চুলের ঘনত্ব কমে গেলে এই তেল লাগালে উপকার পাবেন৷
তিল ও নিমের তেলচুলের গোড়ায় নিয়মিত তিল অথবা নিমের তেল ব্যবহার করলে খুশকির সমস্যা থেকে রেহাই পাবেন৷
লবঙ্গর তেলঅনেক সময় মাথার ত্বকে ঘামাচির মতো ছোট ছোট দানা দেখা দেয়৷ বিশেষ করে গরমের দিনে যাঁরা বেশি ঘামেন এবং সব সময় কাপড় দিয়ে যাঁদের চুল ঢাকা থাকে, তাঁরা এ ধরনের সমস্যায় ভুগতে পারেন৷ চুলের গোড়ায় লবঙ্গের তেল নিয়মিত মালিশ করলে এই সমস্যা দূর হয়ে যাবে৷
আমলার তেলএই তেল চুলকে কালো করে এবং অকালে চুল পেকে যাওয়ার সমস্যা থেকে রক্ষা করে৷
তিসির তেলএটি চুলকে কালো ও মসৃণ করতে সাহায্য করে৷
রোজমেরি তেলএই তেল মাথার ত্বকের জন্য বেশ উপকারী৷
ইভনিং প্রিমরোজ তেলএক টেবিল চামচ জলপাই তেলের সঙ্গে চার ফোঁটা ইভনিং প্রিমরোজ তেল মিশিয়ে চুলে মালিশ করলে চুল পড়া কমে৷ এটি চুলের দ্রুত বৃদ্ধিতেও সাহায্য করে৷
জোজোবার তেলজোজোবার তেলের সঙ্গে ক্যাস্টর তেল মিশিয়ে নিয়মিত চুলে ব্যবহার করলে তা নতুন চুল গজাতে সাহায্য করে৷এ ছাড়া এক টেবিল চামচ জোজোবার তেলের সঙ্গে চার ফোঁটা চা-গাছের তেল, চার ফোঁটা গোলাপের তেল এবং চার ফোঁটা ইউক্যালিপটাসের তেল মিশিয়ে চুলে লাগালে চুল পড়া কমে এবং চুল মজবুত হয়৷
জেনে নিনচুলের যত্নে আরও কিছু সুগন্ধি তেল ব্যবহৃত হয়৷ যেমন: ল্যাভেন্ডার তেল, চন্দন কাঠের তেল ও বেলি ফুলের তেল৷ বড় ওষুধের দোকান ও সুপারশপগুলোয় নানা রকম তেল কিনতে পাবেন৷ এ ছাড়া অ্যারোমাথেরাপি করানো হয়—এমন বিউটি পারলাগুলোতেও সুগন্ধি তেল পাওয়া যেতে পারে৷ এই তেল চুলকে সুন্দর ও ঝলমলে তো করবেই, তার সঙ্গে দূর করবে ক্লান্তি এবং মনে নিয়ে আসবে প্রশান্তি৷বেলি ফুলের তেল ঘরেই তৈরি করতে পারবেন৷ এক কেজি বেলি ফুল সারা রাত পানিয়ে ভিজিয়ে রাখার পর সকালে সেই পানির ওপর যে তেল ভেসে উঠবে, তা চামচ দিয়ে তুলে চুলে মালিশ করে নেওয়া যাবে৷চুলের গোড়ায় তুলার সাহায্যে তেল মালিশ করতে পারেন৷ এরপর সারা চুলে তেল মেখে ৩০ মিনিট রাখলেই যথেষ্ট৷ সব তেলই গরম করে লাগাতে হবে তা নয়; বরং অনেক সময় তেল গরম করলে তার পুষ্টিগুণ কিছুটা কমে যেতে পারে৷ তবে তেল লাগানোর পর চুল শ্যাম্পু করার আগে মোটা তোয়ালে গরম পানিতে ভিজিয়ে তা নিংড়ে মাথায় পাঁচ থেকে সাত মিনিট পেঁচিয়ে রাখতে পারেন৷ এতে লোমকূপগুলো খুলে ভেতরের ময়লা বেরিয়ে আসবে এবং তেলের পুষ্টিগুণ সহজেই ভেতরে ঢুকতে পারবে