শেয়ার করুন বন্ধুর সাথে
ভিডিও কলে ডাক্তারের পরামর্শ পেতে Play Store থেকে ডাউনলোড করুন Bissoy অ্যাপ
Unknown

Call

সার্থক মুমিনের সাতটি বৈশিষ্ট্যঃ


আল্লাহ তায়ালা সূরাহ আল-মুমিনূন-এ বলেছেন যে, মুমিনগণ সফল হয়ে গিয়েছে। তাই, প্রথমে জানা দরকার মুমিন কারা, এবং তারপর পবিত্র কুরআনের আলোকে সেই সফলকাম মুমিনদের বৈশিষ্ট্য।


প্রকৃতপক্ষে, যিনি ঈমান এনেছেন তিনিই মুমিন। আর ঈমান হচ্ছে অন্তরে বিশ্বাস করা, মুখে স্বীকার করা এবং কাজে বাস্তবায়ন করা, যা নেকীর কাজে বাড়ে এবং পাপ কাজে হ্রাস পায়। সুতরাং, মুমিন হলেন সেই ব্যক্তি যিনি অন্তরে বিশ্বাস করেন, মুখে স্বীকার করেন, কাজে বাস্তবায়ন করেন, সৎ কাজের মাধ্যমে ঈমানকে বৃদ্ধি করেন, এবং পাপ কাজ পরিত্যাগ করার মাধ্যমে ঈমানকে হেফাজত করেন।


এবার জানা যাক মুমিনদের বৈশিষ্ট্যসমূহ।


১) তারা নামাজে 'খুশু' অবলম্বনকারীঃ


'খুশু' হচ্ছে অন্তরের ভয়। আল্লাহকে হাজির জেনে, একান্ত বিনীতভাবে, শ্রদ্ধা-ভালবাসা-ভয়মিশ্রিত অন্তর নিয়ে আল্লাহ তায়ালার সামনে দাঁড়ানোই হচ্ছে নামাজে ‘খুশু’ অবলম্বন করা। আর, এভাবে যারা নামাজ আদায় করেন তারাই মুমিন; তারা সফল হবেনই, ইনশাআল্লাহ। কেননা, নামাজ মানুষকে অন্যায় ও অশ্লীলতা থেকে বিরত রাখে। যদি নিয়মিত নামাজ আদায় করার পরও অন্তরে আল্লাহর ভয় তৈরী না হয়, অন্যায় ও অশ্লীলতা পরিহার করা সম্ভব না হয়, তাহলে বুঝতে হবে যে সে নামাজ হচ্ছে প্রাণহীন নামাজ যার মাধ্যমে পরকালে মুক্তির সম্ভাবনা খুবই ক্ষীণ।


২) তারা অযথা, অনর্থক, অপ্রজোনীয়, অসার, অশ্লীল কথা থেকে দূরে থাকেনঃ


আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন যে, কোন ব্যক্তি যদি তার জিহ্বা এবং লজ্জাস্থানের হিফাজত করে, তিনি তার জন্য জান্নাতের জামিনদার হবেন। সুবহানআল্লাহ! আর, মানুষ সবচেয়ে বেশি জাহান্নামীও হবে এই জিহ্বা এবং লজ্জাস্থানের কারণেই। নাঊজুবিল্লাহ। আবার, তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমাদেরকে হয় ভাল কথা বলার অথবা চুপ থাকার নির্দেশ দিয়েছেন। তাই, প্রকৃত মুমিন হতে চাইলে আমাদের জবানকে আল্লাহ তায়ালার অপছন্দনীয় এবং অসন্তুষ্টি উদ্রেককারী কথা বলা থেকে বিরত রাখতেই হবে।


৩) তারা যাকাত আদায়কারীঃ


মুমিনগণ চুলচেঁড়া বিশ্লেষণ করে, পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে হিসেব করে দরিদ্রকে তাদের ন্যায্য পাওনা বুঝিয়ে দেন। এবং এটা বাধ্যতামূলক। নতুবা, কারো পক্ষেই মুমিন হওয়া কোনভাবেই সম্ভব নয়।


৪) তারা তাদের লজ্জাস্থানের হেফাজতকারীঃ


প্রকৃতভাবে লজ্জাস্থানের হেফাজত করতে চাইলে চোখ, কান, মুখ, হাত, পা, মস্তিষ্ক - প্রতিটি অঙ্গকে অবৈধ যৌনচর্চা থেকে মুক্ত রাখতেই হবে। এর কোন বিকল্প নেই।


৫) তারা আমানত রক্ষাকারীঃ


রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে একবার জিজ্ঞাসা করা হয়েছিল যে কিয়ামত কবে হবে। উত্তরে তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছিলেন, মানুষ যদি দেখতে পায় যে আমানতের খিয়ানত হচ্ছে, তবে বুঝতে হবে যে কিয়ামত সন্নিকটে। মুমিনগণ কখনোই আমানতের খেয়ানতকারী হবেন না, তা সে যে প্রকারের আমানতই হোক না কেন।


৬) তারা অঙ্গীকার পূরণকারীঃ


অঙ্গীকার ভঙ্গ করা মুনাফিকের আলামত। প্রকৃত মুমিনগণ তাদের ছোট-বড় সমস্ত অঙ্গীকার পূরণ করেন।


৭) তারা দৈনিক পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের হিফাজতকারীঃ


নামাজ তার হিফাজতকারীর জন্য পরকালে পুলসিরাতে আলো বিলাবে, দেবে জাহান্নাম থেকে মুক্তি, আর জান্নাতে প্রবেশের নিশ্চয়তা। আর, নামাজের হিফাজতকারী হচ্ছেন তারা যারা নিয়মিত পাঁচ ওয়াক্ত, সময়মত, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের প্রদর্শিত নিয়ম অনুযায়ী নামাজ আদায় করেন, এবং নামাজের ফরজ-ওয়াজিব-সুন্নাত সঠিকভাবে মেনে চলেন।


আল্লাহ তায়ালা আমাদের সবাইকে প্রকৃত মুমিনের সবক’টি বৈশিষ্ট্য এবং গুণাবলী অর্জন করার, এবং আমৃত্যু তার উপর আমল করার মাধ্যমে পরকালে জান্নাতুল ফেরদাউসের অধিবাসী হওয়ার তাউফিক দান করেন। আমীন।

ভিডিও কলে ডাক্তারের পরামর্শ পেতে Play Store থেকে ডাউনলোড করুন Bissoy অ্যাপ