মেয়েদের যেহেতু প্রথম যৌনমিলনে ব্লাড যায় এবং ব্যাথা পায় কিন্তু ছেলেরা কখনো সেক্স করছে নাকি তা বুজার কী কোনো উপায় আছে?



শেয়ার করুন বন্ধুর সাথে
Call
পুরুষতান্ত্রিক সমাজে বসবাস করতে করতে মেয়েদের মধ্যেও একটা অভিযোজন লক্ষ্য করা গিয়েছে। সে ভার্জিন না ভার্জিন নয় এবং তা নিয়ে তার পুরুষ বন্ধুটি কী বলতে পারে বা সম্পর্ক আদৌ টিকবে কিনা এই প্রশ্নে বহু জীবন নষ্ট হয়েছে, হচ্ছে। আজ রইল সেই নিষিদ্ধ প্রশ্নের যাবতীয় উত্তর।


প্রথম সহবাসে রক্তপাত! এটাই কী নারীর সতীত্ব প্রমাণের মূল একক? কী মনে হয়? বিভিন্ন সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে যে 63% মানুষ ই এই বিষয়টিকে মূল একক বলে মনে করেন। বাকি 37% মানুষের মধ্যে 20% বিষয়টি কী তাই ই জানেন না এবং বাকি 17% বিষয়টিকে পাত্তা দিতে চান না।

এবার আসা যাক ব্যবহারিক জীবনের সমীক্ষায়। সেখানে জানা যাচ্ছে, প্রতি নারীর প্রথম মিলনেই রক্তপাত হয় না। রক্তপাত হয় না মানে তিনি যে ভার্জিন নয় সে বিষয়ে কিন্তু নিশ্চিত কোন প্রমাণ মেলে নি। কিন্তু বিশেষ করে ভারত, পাকিস্তান, আফগানিস্তান সহ আফ্রিকার অনেক দেশ (নাইজেরিয়া এবং আরও অনেক জাতি স্বত্বা) গুলোতে এই মিথ টা ব্যাপক প্রচলিত যে, আপনি যে কোন নারীর সতীত্ব আছে কিনা সেটা প্রমাণ করতে পারবেন, যদি তার প্রথম মিলনে রক্তপাত হয়।

এই প্রচলিত ধারনার মিথ্যে এবং বিশেষ কিছু শ্রেণীর মানুষের ভোগ লালসা চরিতার্থ করার একটা অসাধু উপায়। কেনই বা কিছু নারীর প্রথম মিলনে রক্তপাত হয়, আর কেনই বা কিছু নারীর আদৌ হয় না, সেটা বুঝতে গেলে আমাদের এটা সবার নারীর প্রজনন অঙ্গর একটি অংশ হাইমেন, যাকে আমরা বাংলায় সতীচ্ছদ পর্দা বলে জানি, সেটার গঠন সম্পর্কে বিস্তারে বুঝতে হবে।

সতীচ্ছদ পর্দা বা হাইমেন

হাইমেন বা সতীচ্ছদ একটি পাতলা পর্দা, যেটা যোনিমুখের সামনে অবস্থান করে কিন্তু মজার বিষয় এই যে, এই পর্দা কিন্তু সমস্থ সময় পুরো যোনিমুখকে ঢেকে রাখে না। এমন কী এই প্রসঙ্গে জেনে রাখা ভাল যে সব নারীরই সতীচ্ছদ থাকে না।

এমন কী হাইমেন বা সতীচ্ছদ পর্দা নারীর শরীর ভেদে ভিন্ন। ঠিক যেমন সকল নারীদের উচ্চতা এবং ওজন, দৈহিক গঠনভেদে ভিন্ন ভিন্ন হয়ে থাকে, তেমনি নারীর হাইমেনের গড়ন ও আকৃতিও বিভিন্ন রকম হয়। কারো হাইমেন অনেক পুরু, কারো বা খুব পাতলা, কারো বা প্রাকৃতিক ভাবেই কোন হাইমেন নেই। কোন কোন নারীর স্বাভাবিকের চেয়ে বড় হাইমেন, কারো বা হাইমেন এতই ছোট যে সেটি যোনিমুখের অতি সামান্য অংশ কে ঢেকে রাখতে সক্ষম (যে কারনে সেই ক্ষুদ্র হাইমেন প্রথম মিলনে আদৌ কোন প্রতিবন্ধকতার সৃষ্টি করেনা)।

বিশেষজ্ঞদের মতে দৈহিক বৃদ্ধির সাথে সাথে হাইমেন নিজে থেকেই অপসারিত হয় বা ছিঁড়ে যায়। বিশেষ করে যে সব মেয়েরা অল্প বয়স থেকেই ব্যায়াম, বাইসাইকেল চালানো, এমন কি ঘোড়ায় চড়তে পারঙ্গম তাদের হাইমেন আপনা থেকেই ছিঁড়ে যেতে বা উধাও হয়ে যেতে পারে, এমন কি নাচানাচি করলে কিংবা ঋতুচক্র চলাকালীন ট্যাম্পুন ব্যবহার করলেও অপসারিত হতে পারে।

অধিকংশ ক্ষেত্রে দেখা যায়, যেসব নারীর প্রথম সহবাসে রক্তপাত হয়েছে, তাদের সাথে জোর বা জবরদস্তির সাথে যৌনকার্য সংঘটিত হয়েছিল। যদি কোন নারী যথেষ্ট পরিমানে উত্তেজিত না থাকে বা শিথিল না থাকে বা যৌনমিলনের জন্য শারীরিক ও মানসিক ভাবে তৈরী না থাকে, সে ক্ষেত্রে পুরুষ সঙ্গী যদি তার ওপর জোরপূর্বক সহবাস ঘটায়, সেই পুরুষটি মূলত সেই নারীর শরীরের অভ্যন্তরে ক্ষতের সৃষ্টি করে যা থেকে রক্তপাত হয়।

আর এটাই অদ্ভুতভাবে অধিকাংশ লোকেরই মনে এই ধারণা তৈরি করে দেয় যে, নারীর প্রথম মিলনে রক্তপাত হওয়াই স্বাভাবিক, অথচ কেউ এটা বোঝে না যে, রক্তপাত হচ্ছে নারীর উপর জোরপূর্বক যৌনমিলনকৃত আঘাতেরই ফলাফল।

পরিশেষে এটাই বলার যে আমাদের প্রকৃত শিক্ষা প্রয়োজন এই যে প্রথম মিলনে রক্তপাত নাও হতে পারে; কারন সব নারী পুরু সতীচ্ছদ পর্দা বা হাইমেনের অধিকারী নন, অনেকেরই জন্মগত ভাবেই কোন সতীচ্ছদ পর্দা নেই এবং এই ধারণা বা শিক্ষাটি আসলে অনেক নারীর জীবন কেই রক্ষা করবে। সেই সাথে এটাও মনে রাখবেন কারো সাথে বল পূর্বক যৌন মিলন করা ধর্ষণের সমার্থক, তা আপনার বিবাহিত স্ত্রীই হোন না কেন। 
ভিডিও কলে ডাক্তারের পরামর্শ পেতে Play Store থেকে ডাউনলোড করুন Bissoy অ্যাপ