প্রচলিত ঝাড়-ফুঁকের পদ্ধতি ও রুকইয়াহ শারইয়াহ-এর পদ্ধতির মধ্যে প্রকৃত পার্থক্য কি?


শেয়ার করুন বন্ধুর সাথে

প্রচলিত ঝাড়-ফুঁকের পদ্ধতি ও রুকইয়াহ শারইয়াহ-এর মধ্যে পার্থক্যঃ

(ক) প্রচলিত কিছু পদ্ধতিতে জ্বিনের সাহায্য নেওয়া হয়। এ পদ্ধতিতে জ্বিনকে খুশি করে তাকে দিয়ে কাজ করাতে হয়। আর জ্বিনকে খুশি করতে অনেক ক্ষেত্রেই কুফর, শিরক বা হারাম (ইসলামে নিষিদ্ধ) কাজে লিপ্ত হতে হয়। তাছাড়া জ্বিনের সাহায্যে দেওয়া চিকিৎসা গ্রহণ করার কারণে অনেক সুস্থ মানুষ জ্বিনে আক্রান্ত হওয়ার বহু নজির রয়েছে।

অনেকে বলেন, তিনি ভালো জ্বিনের সাহায্য নিচ্ছেন। অথচ বাস্তবতা হলো শয়তান মানুষকে ধোকা দেওয়ার জন্য নিজেকে দ্বীনদার, পরহেজগার বলে পরিচয় দেয়। আর মানুষের পক্ষে এগুলোর সত্যতা যাচাই করা সম্ভব নয়। যারা এজাতীয় কথাবার্তা বিশ্বাস করেন তারাই কেবল দাবি করেন যে তিনি ভালো জ্বিনের সাহায্য নেন।

পক্ষান্তরে, রুকইয়াহ শারইয়াহ-তে পূর্ণরূপে একমাত্র, শুধুমাত্র, কেবলমাত্র আল্লাহ তায়ালার উপরেই তাওয়াক্কুল ও ভরসা রেখে কুরআনের আয়াত, দোয়া ও জিকির ইত্যাদি ব্যবহার করা হয়, কোনো জ্বিনের সাহায্য নেওয়া হয় না।

(খ) প্রচলিত পদ্ধতির মধ্যে রয়েছে অনেক ব্যাখ্যা না জানা পদ্ধতি, অর্থ না জানা বাক্য বা সংকেত ইত্যাদির ব্যবহার। যেগুলি যাদু হওয়ার সম্ভাবনাই প্রবল। শয়তান জ্বিনেরা মানুষকে বিভিন্ন ভাবে যাদুবিদ্যা শেখায়, এতে মানুষের জন্য ক্ষতি ব্যতীত কোনো কল্যাণ/ উপকার নেই (সূরা বাকারাহ’র ১০২ নং আয়াত দ্রষ্টব্য)।

অনেক সময় যাদু প্রয়োগের ফলে রোগী নতুন করে বিভিন্ন প্রকার মারাত্মক ও জটিল সমস্যায় আক্রান্ত হন। এমন অনেক নজির আমাদের সামনে রয়েছে, যেখানে রোগী এক উদ্দেশ্যে যাদুকর/তান্ত্রিকের কাছে গিয়েছে, অথচ এর কারণে সে অন্যান্য আরো নানা জটিল ও কঠিন সমস্যায় আক্রান্ত হয়ে পড়েছেন। সর্বোপরি যাদুবিদ্যা কুফর হওয়ার কারণে এর আশ্রয় গ্রহণ করায় পরকালীন শাস্তি তো আছেই।

পক্ষান্তরে, রুকইয়াহ-তে কেবল স্পষ্ট কুরআনের আয়াত, দোয়া, জিকির ইত্যাদি ব্যবহৃত হয়। ফলে কোন ধরণের অস্পষ্টতা, সংশয় বা যাদুবিদ্যা প্রয়োগের কোনো সম্ভাবনা নেই।

(গ) আক্রমণকারী বা ক্ষতিকারক জ্বিন যদি তদবির কারকের জ্বিন অপেক্ষা শক্তিশালী হয়, সে ক্ষেত্রে তার পক্ষে কিছুই করার থাকে না। পক্ষান্তরে, রুকইয়াহ শারইয়াহ-এর মাধ্যমে আল্লাহর ইচ্ছায় যে কোন জ্বিন-শয়তানের মোকাবেলা করা সম্ভব। আলহামদুলিল্লাহ।

(ঘ) অনেক সময় যাদু কাটতে বা নষ্ট করতে উক্ত যাদুর বিপরীতে জেনে-বুঝে নতুন করে যাদু করা হয় (নাউযুবিল্লাহ)। এতে করে রোগী ক্রমান্বয়ে আরো জটিল ও মারাত্মক সমস্যায় আক্রান্ত হতে থাকেন। পক্ষান্তরে, রুকইয়াহ-তে স্পষ্ট কুরআনের আয়াত, দোয়া, জিকির ইত্যাদি ব্যতীত কোন প্রকার অস্পষ্ট পদ্ধতি বা যাদুবিদ্যার ব্যবহার নেই।

ভিডিও কলে ডাক্তারের পরামর্শ পেতে Play Store থেকে ডাউনলোড করুন Bissoy অ্যাপ