শেয়ার করুন বন্ধুর সাথে

চৈত্রের শেষে এবং বৈশাখ মাসে সূর্য বাংলাদেশ ও তার দক্ষিণে বঙ্গোপসাগর ও ভারত মহাসাগরের ওপর খাড়াভাবে কিরণ দেয়। ফলে এ অঞ্চলের বায়ু সকাল থেকে দুপুরের সাধারণত রোদের তাপে হালকা হয়ে ওপরের দিকে উঠে যায়। এভাবে বিকেলের দিকে এ অঞ্চলে নিম্নচাপের সৃষ্টি হয়। বৈশাখে আমাদের দেশের উত্তরে ও হিমালয়ের দিকে বায়ুর চাপ বেশি থাকে। তাই উচ্চচাপের উত্তরাঞ্চল থেকে বায়ু প্রবল বেগে দক্ষিণ দিকে নিম্নচাপ অঞ্চলের দিকে ধাবিত হয়। ফলে যে প্রবল ঝড়ের সৃষ্টি হয়, তাকে আমরা কালবৈশাখী ঝড় বলে থাকি। কালবৈশাখী ঝড় কিন্তু চট করে সৃষ্টি হয় না। কালবৈশাখীর স্থায়িত্বকাল স্বল্পতর, একটি কালবৈশাখী ঝড় তৈরি হয়ে পূর্ণতা লাভের পর ৩০ থেকে ৪৫ মিনিট পর্যন্ত এর তীব্রতা সর্বোচ্চ থাকে। তারপর তা আস্তে আস্তে হ্রাস পেতে থাকে। তবে কখনও কখনও এ ঝড় এক ঘন্টারও বেশিকাল স্থায়ী হয়। কালবৈশাখীর বায়ুর গড় গতিবেগ ঘন্টায় ৪০ থেকে ৬০ কিমি। কোন কোনো ক্ষেত্রে এ গতিবেগ ঘন্টায় ১০০ কিমি-এর বেশিও হতে পারে। কালবৈশাখীর সময় অঝোর ধারায় বৃষ্টিপাত হয়। বিদ্যুৎ চমকানো, বজ্রপাত, অতি দ্রুত হারে তাপমাত্রা হ্রাস আর শিলাপাত কালবৈশাখীর সাধারণ ঘটনা। কালবৈশাখীর সময় উত্তর-পশ্চিমাকাশ কাল করে আসে। ‘কাল’ শব্দের অর্থ ঋতু। আবার কালো বর্ণকেও বোঝানো হয়ে থাকে। কালবৈশাখীকে কখনও কখনও ‘কালোবৈশাখী’ নামেও আখ্যায়িত করা হয়ে থাকে যার অর্থ কালো বর্ণের বৈশাখী মেঘ। ঘন, কালো বর্ণের মেঘ ও ঝঞ্ঝা এবং এর ধ্বংসাত্মক প্রকৃতির জন্যই এ নামকরণ। কালবৈশাখীর জীবনচক্রকে তিনটি ধাপ বা পর্যায়ে বিভক্ত করা যায় যেগুলি ঊর্ধগামী অথবা নিম্নগামী বায়ুস্রোতের মাত্রা এবং গতিবিধি দ্বারা নির্ণীত হয়ে থাকে। কালবৈশাখীর পর্যায়গুলি হচ্ছে: ১) কিউমুলাস বা ঘনীপূঞ্জীভবন পর্যায় (cumulus stage), ২) পূর্ণতা পর্যায় (mature stage) এবং ৩) বিচ্ছুরণ পর্যায় (dissipating stage)। একটি কালবৈশাখী পূর্ণতা লাভের ৩০ থেকে ৪৫ মিনিট পর এর তীব্রতা হ্রাস পেতে থাকে এবং বিচ্ছুরণ পর্যায়ে প্রবেশ করে। অতি দ্রুত হারে তাপমাত্রা হ্রাস, মেঘে প্রচুর জলীয় বাষ্পের উপস্থিতি এবং বায়ুর পুঞ্জীভূত ঊর্ধ্বচলনের দরুণ কালবৈশাখীর সঙ্গে শিলাপাত একটি সাধারণ ঘটনা।

ভিডিও কলে ডাক্তারের পরামর্শ পেতে Play Store থেকে ডাউনলোড করুন Bissoy অ্যাপ