যে সকল ইমামদের নামে মাযহাবের নামকরণ হয়েছে তাদের জন্মের আগে মাযহাব ছিল না, তাঁদের যামানায় মাযহাবের উদ্ভব হয় নাই। মাযহাব হয়েছে তাঁদের মৃত্যুর বহুদিন পরে। ইমাম আবু হানিফার জন্ম ৮০ হিজরীতে, মৃত্যু ১৫০ হিজরীতে; ইমাম মালেকের জন্ম ৯০ হিজরীতে, মৃত্যু ১৭৯ হিজরীতে; ইমাম শাফেয়ীর জন্ম ১৫০ হিজরীতে, মৃত্যু ২০৪ হিজরীতে; আর ইমাম আহমাদ বিন হাম্বলের জন্ম ১৬৪ হিজরীতে, মৃত্যু ২৪১ হিজরীতে। যেদিন ইমাম আবু হানিফার মৃত্যু হল সেই দিন ইমাম শাফেয়ীর জন্ম হয়েছে। এই দুই জনের পরস্পরের সঙ্গে কারো দেখা সাক্ষাত হয় নাই। মাযহাবের উদ্ভব হয়েছে ৪০০ হিজরীতে। ইমাম আবু হানিফার মৃত্যুর ২৫০ বছর পরে। এই চার ইমামের জন্মের পূর্বেও ইসলাম ছিল, মুসলিম ছিল। তখন যদি কারোর মত ও পথের প্রয়োজন না হয়ে থাকে তাহলে ৪০০ বছর পরে প্রয়োজন হবার বা ফরয হবার কোন যুক্তি থাকে না। তখনও মুসলিমদের কাছে কুরআন ও হাদীস ছিল, এখনও আছে, কাজেই কুরআন ও হাদীসই যথেষ্ট। সুতরাং নির্ভুল কুরআন হাদীসই মুসলিমদের মেনে চলতে হবে। চার মাযহাবের কোন একটিও মেনে চলার জন্য আল্লাহ ও রাসূলের (স) নির্দেশ নাই। আমাদের সমাজে প্রচার রয়েছে চার মাযহাবে চার ফরয। কিছু একটি ফরয হলে তা সমস্ত মুসলিম জাতির জন্যই ফরয হওয়ার কথা। কিন্তু বাস্তবে দেখা যাচ্ছে মাযহাব অনুসরণের কারণে মুসলিম জাতি বিভক্ত হয়ে পড়েছে। অর্থাৎ যিনি হানাফী মাযহাবের অনুসরণ করেন, তিনি হাম্বলী, মালেকী ও শাফেয়ী মাযহাবের অনুসরণ করেন না। এমনিভাবে অন্য মাযহাবীরাও একে অন্যের মাযহাব মানেন না। তাদের কথা হল চার ফরয তথা চার মাযহাবের যে কোন একটি মানলেই হল। চার মাযহাব ফরয করতে কোন নবীর আগমন ঘটেনি বরং অজ্ঞ ব্যক্তিরাই মাযহাব ফরয দাবী করেছে। যাদের নামে মাযহাব মানা হচ্ছে তাঁরা কি আদৌ এ মাযহাব তৈরী করেছেন? প্রকৃত ঘটনা হল এই যে, ইমামগণ প্রচলিত মাযহাব তৈরী করেন নি বা কাউকে তৈরী করতেও বলেননি এবং তাদের উপর চার মাযহাব ফরযও হয়নি। বরং চারশত হিজরীর পর, অতিভক্তির পরিণতির কারণে এই চার মাযহাবের উদ্ভব হয়।  যদি ধরেও নেয়া হয় যে ইমামগণ চার মাযহাব তৈরী করেছেন, কিন্তু তা ফরয হল কি ভাবে? তাঁরাতো নবী ছিলেন না। তাদের নিকট ওহীও আসত না। এগুলি তাঁদের নামে মিথ্যা অপবাদ ব্যতীত আর কিছুই না। তাঁদের সময় এবং তাঁদের পূর্বে একটি মাযহাবই ছিল। তাঁরা ঐ একটি মাযহাবকেই মানতেন এবং অন্যকে মানতে বলতেন। ঐ একটি মাযহাবই ফরয যা নবী মুহাম্মদ (স) এর উপর অবতীর্ণ করা হয়েছে। আশা করি বুজতে পেরেছেন।

ভিডিও কলে ডাক্তারের পরামর্শ পেতে Play Store থেকে ডাউনলোড করুন Bissoy অ্যাপ