চাকা আবিষ্কারের অনতিকাল পরেই মানুষ গাড়ী আবিষ্কার করে। ঘোড়ায় টানা গাড়ী মানব সভ্যতার সাথে এমন ভাবে জড়িয়ে গেছে যে মানুষ গাড়ী বলতে গেলে অবচেতন মনে ঘোড়ার কথা বলে। ইঞ্জিন আবিষ্কারের পর ঘোড়া গুলো শান্তি পেলো। নয়া গতিতে গাড়ী ঘোড়া রাস্তায় ছুটতে লাগলো। প্রথম দিকে ষাঁড় বা ঘোড়ায় টানা গাড়ীতে মোটর লাগিয়ে অটোমোবাইল তৈরী করা হত। খুব সম্ভবত পৃথিবীর প্রথম অটোমোবাইল হচ্ছে `দ্যা ফার্ডিয়ার। স্টীম চালিত তিন চাকার এই গাড়ীটি ঘন্টায় ২.৩ মাইল গতিতে চলতে সক্ষম ছিলো। ফরাসি যুদ্ধ মন্ত্রীর জন্য ১৭৭১ সালে এই গাড়ীটি নির্মাণ করেন নিকোলাস জোসেফ কুগনট। এই গাড়ী চালানো ছিলো বেশ ঝামেলার এবং গতি ছিলো প্রচন্ড ধীর, তার তুলনায় স্বাচ্ছন্দে ঘোড়ার গাড়ী চালিয়ে অল্প সময়ে সেই দুরত্ব পৌঁছানো যেত। সেজন্য এই ধরণের গাড়ী আর তৈরী করা হয় নাই। বছর দুয়েক কেটে গেলো গাড়ী আবিষ্কারের নানাবিধ প্রচেষ্টায়। ১৮৭৩ সালে একজন ফরাসী ১২ জন মানুষ বসতে সক্ষম এরকম একটি বাষ্প ইঞ্জিন চালিত গাড়ী উদ্ভাবন করেন। কিন্তু ঘোড়ার গাড়ীর তুলনায় এই গাড়ী স্লো ছিলো। ১৮৮৯ সালে জার্মানীতে গোত্তলিয়েব ডেইমল্যার এবং উইলহেম মেব্যাচ ১.৫ অশ্বক্ষমতার দুই সিনিন্ডার যুক্ত গ্যাসোলিন ইঞ্জিন চালিত একটি যান তৈরী করেন। এই গাড়ীটির গতিবেগ ছিলো ঘন্টায় ১০ মাইল। একই বছরে অন্য আরেকজন জার্মান নাগরিক কার্ল বেঞ্জ গ্যাসোলিন ইঞ্জিন চালিত গাড়ী আবিষ্কার করেন। উনবিংশ শতাব্দী পর্যন্ত গ্যাসলিন চালিত অটোমোবাইল বা মোটরগাড়ী মানুষের কাছে বিস্ময়ের বস্তু ছিলো। ইউরোপ ও আমেরিকায় সামান্য পরিমানে কিছু মোটরগাড়ী তৈরী হত। ১৯০১ সালে কার্ভড ড্যাশ ওল্ডমোবাইল প্রথম ভালো মানের মোটর গাড়ী তৈরী করে। আমেরিকান এই প্রতিষ্ঠানের মালিক ছিলেন র্যা নসম ই. ওল্ডস। আধুনিক মোটর গাড়ীর উৎপাদন, বিস্তৃতি এবং ব্যবহারে মিশিগানের ডেট্রয়েট শহরের হেনরি ফোর্ড এর অবদান অনস্বীকার্য। তিনি গ্যাসোলিন চালিত গাড়ী তৈরী করেন ১৮৯৬ সালে। ১৯০৮ সালে ফোর্ড তার টি মডেলের গাড়ী বাজারে আনেন। ফোর্ড মডেলের গাড়ীর নাম আমরা অনেকেই শুনেছি।

ভিডিও কলে ডাক্তারের পরামর্শ পেতে Play Store থেকে ডাউনলোড করুন Bissoy অ্যাপ