শেয়ার করুন বন্ধুর সাথে

মুসলিমরা হাদীস নয় বরং সুন্নাহ্ অনুসরণ করবে। সব হাদীস সুন্নাহ্ নয়, কিন্তু সব সুন্নাহ হাদীস। হাদীস বলতে, ফকীহ গণের পরিভাষায় নবী করীম (সঃ) আল্লাহ্র রাসূল হিসাবে যা কিছু বলেছেন, যা কিছু করেছেন এবং যা কিছু বলার বা করার অনুমুতি দিয়েছেন অথবা সমর্থন জানিয়েছেন তাঁকে হাদীস বলা হয়। কিন্তু মুহাদ্দিসগণ এর সঙ্গে রাসূলুল্লাহ (সঃ) সম্পর্কিত বর্ণনা ও তাঁর গুণাবলী সম্পর্কিত বিবরণকেও হাদীসের অন্তর্ভুক্ত করেন। অন্যদিকে সুন্নাহ শব্দটি শুধু অনুসরণ বৈধ কর্যাবলীকে বা হাদীসকে বলা হয়। উল্লেখ্য নবী করীম (সঃ) - এর সব হাদীস অনুসরণযোগ্য নয়। হাদীস বিশারদগণের অভিমত অনুযায়ী - রাসূলুল্লাহ্ (সাঃ) - এর নবুওয়াতী জীবন দুপ্রকার। যথা - ০১. জায়িযুল ইত্তিবা (অনুসরণ বৈধ) এবং ০২. হারামুল ইত্তিবা (অনুসরণ অবৈধ) অনুসরণ বৈধ প্রকারটি মুস্তাহাব, সুন্নাহ, ওয়াজিব বা ফরয - এই চতুষ্টয়ের যে কোনো এক পর্যায়ের হয়ে থাকে। এ জন্য মুস্তাহাব, সুন্নাহ, ওয়াজিব বা ফরয হওয়ার আগে ঐ বিষয়টি অবশ্যই বৈধতার স্তরে হতে হবে। কারণ, কোনো কাজ অবৈধ হয়ে সুন্নাহ, মুস্তাহাব ইত্যাদি হতেই পারে না। অন্যদিকে অনুসরণ অবৈধ দ্বারা রাসূলুল্লাহ্ (সাঃ) - এর খুসূসিয়াত তথা স্বাতন্ত্রসমূহকে বুঝানো হয়ে থাকে। যেমনঃ একসাথে নয়জন স্ত্রী রাখা, উঠের পিঠে চড়ে তাওয়াফ করা, ইফতার না করে রাতদিন লাগাতার রোযা রাখা এবং যে সমস্ত বিষয়াদি অনুসরাণ করতে নবী কারীম (সাঃ) নিষেধ করেছেন। উল্লেখ্য, এ জাতীয় বৈশিষ্ট্যাবলীর অনুসরণ করা উম্মতের জন্য বৈধ নয়। হাদীস শব্দটি উক্ত উভয় প্রকার কার্যাবলী নির্দেশ করে । কারণ, হাদীসের সংজ্ঞাতে আক্বওয়ালুন নবী ওয়া আফ্য়ালুহু ( নবী কারীম (সাঃ) - এর কথামালা এবং কার্যাবলী) শব্দসমূহ উল্লেখ আছে। যার অর্থ ব্যাপক এবং এতে অনুসরণযোগ্য - অনুসরণ অবৈধ সবই অন্তর্ভুক্ত। কিন্তু সুন্নাহ শব্দটি শুধু অনুসরণ বৈধ কর্যাবলীকে বলা হয়। সুতরাং নবী কারীম (সাঃ) - এর স্বকীয়তাসমূহ, যেমন - একসাথে নয়জন সহধর্মিণী রাখা ইত্যাদি যদিও রাসূল (সাঃ) - এর কর্মাবলী হয়ে হাদীস সাব্যস্ত হবে; কিন্তু উম্মতের জন্য আমলের উপযোগী সুন্নাহ্ নয়। কারণ সুন্নাহ্ শুধু সেটিই, যেটি আমলের উপযোগী। সুতরাং সব হাদীস সুন্নাহ্ নয়, কিন্তু সব সুন্নাহ হাদীস। যেহেতু প্রতিটি হাদীস আমলের উপযোগী নয়, আর সন্নাহ্ আমলের আমলের উপযোগীতাকে বলা হয়, তাই রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন আমি তোমাদের মধ্যে দুটি জিনিস রেখে যাচ্ছি, যতক্ষণ পর্যন্ত তোমরা সে দুটি আঁকড়ে ধরে থাকবে, পথভ্রষ্ট হবে না- আল্লাহর কিতাব ও তাঁর রাসূলের সুন্নাহ। (মিশকাত, হাদীস: ১৮৬)। এখানে তাঁর রাসূলের হাদীস বলা হয়নি। নবী কারীম (সাঃ) আরো বলেছেন, তোমরা আমার সুন্নাহ্কে এবং সৎপথ প্রাপ্ত খুলাফায়ে রাশেদীনের সুন্নাহকে আঁকড়ে ধরো (সুনান আবু দাউদ, কিতাব আস-সুন্নাহ, অধ্যায় ৪২, হাদিস ৪৬০৭ ) এ কারণে আহ্লুল হক - কে আহ্লুস সুন্নাহ বলা হয়, আহ্লুল হাদীস বলা হয় না। কেননা, প্রতিটি হাদীস আমলের উপযোগী (অনুসরণযোগ্য) নয়। অথচ তথকথিত গায়রে মুকাল্লিদরা নিজেদের জামায়াতের নাম রেখেছে আহ্লুল হাদীস। সুতরাং তাদের এই নাম রাখাই সঠিক হয়নি। (মুকাদ্দমায়ে তানযীমুল আশ্তাত, পৃ. ০৫-০৬)

ভিডিও কলে ডাক্তারের পরামর্শ পেতে Play Store থেকে ডাউনলোড করুন Bissoy অ্যাপ