শেয়ার করুন বন্ধুর সাথে

বেপর্দা ও অবাধ্য স্ত্রীর প্রতি স্বামীর করণীয় . পর্দা আল্লাহ পাক ও তাঁর রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লামের নির্দেশিত বিধান। তাই এ বিধান পালন করা প্রত্যেক নর-নারীর উপর ফরয। আখিরাতের কল্যাণ অর্জনের সাথে সাথে স্বামী-স্ত্রীর মায়া-মহব্বতের স্থায়িত্বের লক্ষ্যে এবং দাম্পত্য জীবন সুখ ও শান্তিময় করে গড়ে তোলার জন্যই এ বিধান। কোন মহিলা যদি নির্বুদ্ধিতার কারণে নিজের জন্য যা উপকারী সেই পর্দার বিরোধিতা করে, পর্দা না করে এবং স্বামীর বলাতেও তার কথা না মানে, তাহলে সে একাধারে আল্লাহ ও তাঁর রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম এবং স্বামীর অবাধ্যচারিণী সাব্যস্ত হবে। এমতাবস্থায় স্বামী সাধ্যমত স্ত্রীকে বুঝাবে। এ ব্যাপারে দ্বীনী বই-পুস্তক পড়তে দিবে। স্ত্রীকে সতর্ক করার জন্য প্রয়োজন হলে একই ঘরে বিছানা আলাদা করে দিবে। এতেও যদি ফল না হয় তাহলে হালকা শাসন করা যেতে পারে। এতেও যদি স্ত্রী সু-পথে না আসে, তাহলে দু’পক্ষের দু’জন দ্বীনদার মুরব্বীর দ্বারা ফয়সালা করতে হবে। এতে ইনশাআল্লাহ ফায়দা হবে। কোন কারণে এতেও ফায়দা না হলে নিজের ও সন্তানের দ্বীন-দুনিয়ার অনিষ্ট থেকে বাঁচার স্বার্থে স্ত্রীর মাসিক থেকে পবিত্র থাকা অবস্থায় এবং তার সাথে স্বামী সুলভ আচরণ থেকে বিরত থাকা অবস্থায়, রাগমুক্ত হালতে, সম্পূর্ণ সুস্থ মস্তিষ্কে শরীয়ত মুতাবিক শুধু এক তালাক দিবে। বাইন ইত্যাদি বলবে না, যাতে করে স্ত্রী অনুতপ্ত হয়ে দ্বীনদারী গ্রহণ করলে, তাকে দ্বিতীয়বার গ্রহণ করার সকল রাস্তা খোলা থাকে। উল্লেখ্য, আমাদের দেশে তালাক দেয়ার পর ফাতাওয়া তলব করা হয়। এটা গলদ পদ্ধতি। সহীহ নিয়ম হল, প্রথমে তালাকের বৈধতার ব্যাপারে হাক্বানী মুফতীদের থেকে ফাতাওয়া নিয়ে সে অনুযায়ী আমল করা। উল্লেখ্য, রাগ অবস্থায় তালাক দেয়া হারাম, কিন্তু কেউ এ অবস্থায় তালাক দিলে তালাক পতিত হবে। তেমনিভাবে এক সাথে তিন তালাকই পড়ে যাবে। অনেকে মনে করে শুধু মৌখিক তালাক পড়ে না বরং লিখিত হলে পড়ে, এটা শরীয়তের ব্যাপারে অজ্ঞতার প্রমাণ। কারণ, মৌখিক তালাকও পতিত হয়। অবাধ্য স্ত্রীকে নিরুপায় হয়ে তালাক দেয়ার পর স্বামীর কর্তব্য হবে দ্বীনদার পর্দানশীন কোন মহিলাকে বিবাহ করার ব্যবস্থা করা। কারণ, একজন দ্বীনদার লোকের জন্য দ্বীনদার পর্দানশীন স্ত্রী হওয়া উচিত। বেপর্দা স্ত্রীকে নিয়ে ঘর-সংসার করায় মান-সম্মান নিয়ে জীবন-যাপন করা এবং তার থেকে নেক সন্তানের আশা করা অসম্ভব। (মা‘আরিফুল কুরআন, ২/৩৯৯) তাছাড়া স্ত্রীর পর্দার ব্যবস্থা করা স্বামীর কর্তব্যও বটে। স্বামী যদি এরকম বেপর্দা মহিলাকে নিয়ে ঘর-সংসার করতে থাকে তাহলে স্বামী অবশ্যই দায়ী হবে। হাদীসে পাকে ইরশাদ হয়েছে- সাবধান! তোমরা সকলেই দায়িত্বশীল। আর তোমরা সকলেই তোমাদের দায়িত্ব সম্পর্কে জিজ্ঞাসিত হবে। এই হাদীসের শেষাংশে রয়েছে, একজন পুরুষ তার পরিবারের উপর দায়িত্বশীল। সুতরাং তাকে সে বিষয়ে জিজ্ঞাসা করা হবে। (তিরমিযী শরীফ, ১/ ২৯৯) আল্লামা মোল্লা আলী ক্বারী রহ. লিখেন, পরিবারের সকলকে বেপর্দা-বেহায়াপনা ও যাবতীয় পাপাচার থেকে বাধা দেয়া স্বামীর দায়িত্ব, অন্যথায় স্বামীকে দাইয়ূস হিসাবে গণ্য করা হবে। (মিরকাত, ৭/ ১৯৭) আর দাইয়ূস সম্পর্কে হাদীসে ইরশাদ হয়েছে যে, দাইয়ূস বেহেশতে প্রবেশ করবে না। (মুসনাদে আহমদ) মুফতী মনসূরুল হক দা. বা. প্রধান মুফতী ও শাইখুল হাদীস, জামিয়া রহমানিয়া, মুহাম্মাদপুর,ঢাকা।

ভিডিও কলে ডাক্তারের পরামর্শ পেতে Play Store থেকে ডাউনলোড করুন Bissoy অ্যাপ