হযরত মোহাম্মদ সঃ সব নবী রাসূল থেকে শ্রেষ্ঠ,কেননাঃ ১। অন্য নবীরা শুধু নির্দিষ্ট একটা সময়,এবং নির্দিষ্ট একটা জনপদের জন্য নিযুক্ত হয়ছিলেন,কিন্তু রাসুল সঃ সারা পৃথিবীর মানুষের জন্য কেয়ামতের আগ পর্যন্ত সকল মানুষের আদর্শ হিসেবে প্রেরিত হয়ছেন।আল্লাহ বলেন,"আমি আপনাকে সমগ্র জগতের প্রতি শুধু রহমতরূপেই প্রেরণ করেছি।’ (সুরা : আম্বিয়া, আয়াত : ১০৭) ২)রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর প্রতি ভালোবাসা পোষণ করা ঈমানের অংশ। আর ভালোবাসার প্রকাশ হবে তাঁর আনুগত্যের মাধ্যমে। ইরশাদ হয়েছে, ‘হে নবী! আপনি বলে দিন যে যদি তোমরা আল্লাহকে ভালোবাসো তাহলে আমার অনুকরণ করো, আল্লাহ তোমাদের ভালোবাসবেন।’ (সুরা : আলে ইমরান, আয়াত : ৩১) ৩)রাসুলুল্লাহ (সা.) ছিলেন আনুগত্যের জন্য সর্বোত্তম ব্যক্তি। আল্লাহ বলেন, ‘নিশ্চয় তোমাদের জন্য আল্লাহর রাসুলের জীবনেই রয়েছে সর্বোত্তম আদর্শ।’ (সুরা : আহজাব, আয়াত : ২১) অন্যত্র ইরশাদ হয়েছে, ‘নিশ্চয় আপনি উত্তম চরিত্রের ওপর অধিষ্ঠিত।’ (সুরা : কালাম, আয়াত : ৪) মহানবী (সা.)-এর আনুগত্যের মাধ্যমেই মানুষ অন্ধকার থেকে আলোর পথ লাভ করতে পারবে। আল্লাহ বলেন, ‘এটি একটি গ্রন্থ, যা আমি আপনার প্রতি নাজিল করেছি, যাতে আপনি মানুষকে অন্ধকার থেকে আলোর দিকে বের করে আনেন, পরাক্রান্ত ও প্রশংসার যোগ্য রবের নির্দেশে তাঁরই পথের দিকে।’ (সুরা : ইবরাহিম, আয়াত : ১)   ৪)সর্বপ্রথম জান্নাতে প্রবেশ করবেন রাসুলুল্লাহ (সা.) সমগ্র মানব ও জিন জাতির মধ্যে মুহাম্মদ (সা.) সর্বপ্রথম জান্নাতে প্রবেশ করবেন। আনাস (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেন, কিয়ামতের দিন আমি বেহেশতের দরজায় এসে দরজা খুলতে বলব। তখন বেহেশতের প্রহরী এসে বলবে, আপনি কে? আমি বলব, মুহাম্মদ। তখন বেহেশতের প্রহরী বলবে, আপনার বিষয়ে আমাকে আদেশ দেওয়া হয়েছে, যেন আপনার আগে আর কারো জন্য দরজা না খুলি।’ (মিশকাতুল মাসাবিহ,  হাদিস : ৫১১)   ৫)মুহাম্মদ (সা.)-এর অনন্য পাঁচ বৈশিষ্ট্য জাবের (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (সা.) ইরশাদ করেন, আমাকে এমন পাঁচটি বৈশিষ্ট্য প্রদান করা হয়েছে, যা এর আগে কোনো নবীকে দেওয়া হয়নি। ক. এক মাসের পথের দূরত্ব পর্যন্ত শত্রুপক্ষের অন্তরে আমার ভীতি সঞ্চারিত করে আমাকে সাহায্য করা হয়েছে। খ. সমগ্র ভূখণ্ডকে আমার জন্য মসজিদ এবং পবিত্রকারী অর্থাৎ নামাজ ও তায়াম্মুমের উপযুক্ত বানানো হয়েছে। গ. আমার জন্য গনিমতের মাল হালাল করা হয়েছে, যা এর আগে কোনো নবীর জন্য হালাল করা হয়নি। ঘ. আমাকে মহান সুপারিশের দায়িত্ব দিয়ে সম্মানিত করা হয়েছে। ঙ. পূর্বেকার সব নবী  নিজ জাতির কাছেই প্রেরিত হতেন আর আমি পৃথিবীর সব মানুষের কাছে প্রেরিত হয়েছি। (মিশকাতুল মাসাবিহ, হাদিস : ৫১২)   ৬)নবীদের নেতা মুহাম্মদ (সা.) মহানবী মুহাম্মদ (সা.)-এর একটি উপাধি সাইয়্যিদুল আম্বিয়া বা নবীদের সর্দার। আল্লাহ তাআলা তাঁকে সব নবী-রাসুলের ওপর নেতৃত্বের মর্যাদা দান করেন। আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.) থেকে বর্ণিত, একবার সাহাবায়ে কেরাম পরস্পর বসে নবীদের সম্পর্কে আলোচনা করছিলেন। এমন সময় রাসুল (সা.) ঘর থেকে বাইরে এলেন এবং তাঁদের এই আলোচনা শুনতে পেলেন। একজন বললেন, আল্লাহ ইবরাহিম (আ.)-কে তাঁর বন্ধু হিসেবে গ্রহণ করছেন। অন্যজন বললেন, মুসা (আ.)-এর সঙ্গে আল্লাহ কোনো মাধ্যম ছাড়াই সরাসরি কথা বলেন। আরেকজন বললেন, ঈসা (আ.) তো আল্লাহর ‘কালিমা’ অর্থাৎ তিনি বাহ্যিক কোনো উপকরণ ছাড়াই আল্লাহর নির্দেশ ‘হয়ে যাও’-এর মাধ্যমে সৃষ্টি হয়েছেন। শৈশবে দোলনা থেকেই তিনি মানুষের সঙ্গে কথা বলেছেন। তাঁকে আল্লাহ নিজের ‘রুহ’ বলে অভিহিত করেছেন। আরেকজন বললেন, আদম (আ.)-কে আল্লাহ বিশেষভাবে সম্মানিত করেছেন। অতঃপর রাসুল (সা.) তাঁদের সামনে উপস্থিত হলেন এবং বললেন, আমি তোমাদের কথা এবং নবীদের সম্মানের ব্যাপারে বিস্মিত হতে দেখেছি। তোমরা বলছিলে, ইবরাহিম (আ.) আল্লাহর বন্ধু। তিনি এ রকমই। মুসা (আ.) আল্লাহর সঙ্গে কথা বলেছেন। নিঃসন্দেহে তিনি এ রকমই। ঈসা (আ.) আল্লাহর বাণী ও তাঁর রুহ। নিশ্চয়ই তিনি তা-ই। আদম (আ.)-কে আল্লাহ সম্মানিত করেছেন। তিনিও বাস্তবে তা-ই ছিলেন। কিন্তু শুনে রাখো, আমি হলাম আল্লাহর হাবিব, অর্থাৎ প্রিয়তম। এটা আমার অহংকার নয়। কিয়ামতের দিন আমিই প্রশংসার ঝাণ্ডা উড্ডীন করব, যার নিচে থাকবেন আদম (আ.)-সহ অন্যরাও। কিয়ামতের দিন আমিই প্রথম সুপারিশকারী হব এবং আমার সুপারিশই সর্বপ্রথম কবুল হবে। এতে কোনো অহংকার নেই। আমিই প্রথম ব্যক্তি হিসেবে বেহেশতের দরজায় কড়া নাড়ব। অতঃপর আল্লাহ বেহেশতের দরজা খুলে আমাকে প্রবেশ করাবেন। সে সময় আমার সঙ্গে থাকবে দরিদ্র মুসলিমরা। এটাও আমি অহংকার করে বলছি না। পূর্বাপর সব মানুষের মধ্যে আল্লাহর কাছে আমিই সর্বাধিক সম্মানিত। এতেও অহংকার নেই। (মিশকাতুল মাসাবিহ, হাদিস : ৫২৩)   ৭)নবীদের মুখপাত্র মহানবী (সা.) কিয়ামতের দিন মহানবী (সা.) নবী-রাসুলদের মুখপাত্র হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন। উবাই ইবনে কাব (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, কিয়ামতের দিন আমি নবীদের  ইমাম ও খতিব (মুখপাত্র) হব, আমি সবার সুপারিশকারী হব। এ কথা আমি অহংকার ছাড়াই বলছি। (মিশকাত, হাদিস : ৫১৩)   ৮)দ্বিনের পূর্ণতার জন্য মহানবী (সা.)-এর আগমন পৃথিবীতে নবী-রাসুলদের আনীত ধর্ম ও শিক্ষার পূর্ণতা দান করেছিলেন মুহাম্মদ (সা.)। জাবির (রা.) থেকে বর্ণিত, নবী করিম (সা.) বলেন, আল্লাহ আমাকে সচ্চরিত্র এবং ভালো কাজগুলোর পূর্ণতা দেওয়ার জন্য পাঠিয়েছেন। (মিশকাত, হাদিস : ৫১৪)


এছাড়াও আরো অনেক বৈশিষ্ট্যের কারনে হযরত মোহাম্মদ সঃ সব নবী রাসূল থেকে শ্রেষ্ঠ। 


শেয়ার করুন বন্ধুর সাথে