William Somerset Maugham এর লেখা The Luncheon গদ্যের বাংলা অনুবাদ চাই। এবং জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় এর গত বছরের ইংরেজি বিভাগ এর চাই।
Share with your friends

Call

image

২১ স্টোন (Bangla translation of "THE LUNCHEON")

মান নিয়ে খুব সন্তুষ্ট না, মনের চুলকানি রয়েই গেল।তবুও…

কেউ বলে না দিলে তাকে চেনার সাধ্য আমার ছিল না। নাটক দেখতে গিয়ে দেখা হয়ে গেল। বিরতিতে গেলাম তার কাছে।শত ওয়াট ফিলিপ্স বাতির মত তার মুখ ঝলমল করে উঠল। কলকলিয়ে উঠল সে, “মনে আছে সেই কবে দেখা হয়েছিল! আহা সময় কিভাবে চলে যায়!মনে পড়ে আমাদের প্রথম দেখা হওয়ার কথা।তুমি আমাকে লাঞ্চে ডেকেছিলে।” হুম মনে আছে কি আমার? 

বছর কুড়ি আগের কথা। তখন প্যারিস ছিলাম। থাকতাম ল্যাটিন কোয়ার্টারে কবরস্থানের পাশে ছোট্ট খুপরি বাসায়। টেনেটুনে চালিয়ে দিতাম দিনগুলো।টুকটাক লিখতাম। সেই সময় অনুরাগী এক পাঠিকার চিঠি পেলাম। ধন্যবাদ জানাবো করতে করতেই আরেকটা চিঠি এসে গেল। চিঠি পড়ে তো আমার আক্কেলগুড়ুম। সে প্যারিস হয়ে কোথাও যাচ্ছে। মাঝে দেখা করতে চায়। পরের বৃহস্পতিবার সকালে লুক্সেমবার্গ থাকবে,আর দুপুরে প্যারিসে।ওই সময়টাতে ফয়োৎসে লাঞ্চ করতে পারলে মন্দ হয় না। ফয়োৎসের নাম শুনে বড়সড় ঢোক গিললাম। ওই রেস্টুরেন্টে ফ্রেঞ্চ সিনেটরদের যাতায়াত। আর আমার জেবের যে করুণ অবস্থা তাতে ওখানে যাওয়ার চিন্তা পকেট পেরিয়ে মাথা পর্যন্ত যাওয়ার সুযোগ পায় না। কিন্তু আমার তখন অল্প বয়স, বাসন্তি হাওয়া নাড়া দিয়ে যায় মনের মাঝে।  আমার পক্ষে তখন একটা মেয়েকে না বলা সম্ভব ছিল না।খুব কম লোকের পক্ষেই তা সম্ভব। তো আমি মনে মনে একটা বাজেট দাঁড় করিয়ে ফেললাম। এই মাসে হাতে আছে আর আশি ফ্রাঙ্ক। আর মোটামুটি একটা লাঞ্চ সারতে বড়জোর পনের ফ্রাঙ্ক লাগবে। দুই হপ্তা কফি বাদ দিলেই এই মাসটা মোটামুটি চালিয়ে দিতে পারবো।

বৃহস্পতিবার সাড়ে বারটায় দেখা হল। যেরকম আশা করেছিলাম সেরকম তন্বী না।  বেশবাস আর চেহারাতে জোর করে ষোড়শী ভাব আনার চেষ্টা। চল্লিশের ঘরে বয়স। প্রথম দেখাতেই বুকে আতকা ছুরি লাগার মত বয়স না। অদরকারী ঝকঝকে সাদা দাঁতের ফাঁক দিয়ে বেরিয়ে আসা কথার ফুলঝুরিতে আমার কানের পোকা বের হওয়ার দশা।সে যন্ত্রণাও আমি অবলীলায় পার করলুম। কারণ সে যে আমাকে নিয়েই কথা বলছিল। B)

মেনু আসতেই আমার লাফ দেয়ার যোগাড়।  যদিও তার আশ্বাসবাণী শোনা গেল, “লাঞ্চে আমি কিছুই খাই না” ।আমি না না করে উঠতেই সে বলতে লাগলো, “আমি একটার বেশি পদ কখনোই খাই না। আজকাল তো লোকজন খেতে বসে থামতেই পারে না। জানি না, এদের কাছে ছোটখাটো কোন মাছ আছে কিনা, এই ধরুন স্যামন”। স্যামনের সিজন তখন কেবল আসি আসি করছে, মেনুতেও ছিল না। ওয়েটারকে জিজ্ঞেস করতেই আমার সৌভাগ্যের কথা জানলাম, মাত্রই একটা তরতাজা স্যামন তাদের হেঁশেলে এসে পৌঁছেছে।বছরের প্রথম স্যামনটা আমার কুটুমের জন্যেই অর্ডার দিলাম। স্যামন হতে হতে কিছু চাই কিনা জিজ্ঞেস করতেই ঝটপট উত্তর, “আসলে আমি তো একটার বেশি পদ কখনও খাই না। অবশ্য ক্যাভিয়ারে আমার আপত্তি নেই।গেল রে!আমি জানি ক্যাভিয়ার আমার পক্ষে বেশি বেশিই হয়ে যায়। কিন্তু তখন কিভাবে বলি!অগত্যা দিলাম অর্ডার। আর নিজের জন্যে খুঁজে পেতে একটা সস্তা মাটন চপের অর্ডার দিলাম।“ওহ এই সময় মাটন খাওয়া বুদ্ধিমানের কাজ না।আমি জানি না আপনি কিভাবে এই হেভী লাঞ্চের পর কাজ করবেন ।আসলে আমি ভরপেট খাওয়াতে বিশ্বাস করি না”।

এবার ড্রিঙ্কসের পালা।তার কথা হল দুপুরবেলাতে তার পানাভ্যাস নেই ।ভালো কথা। আমিও ততোধিক উৎসাহ নিয়ে বললাম “আমারও নেই”। কিন্তু আমার কথা কানেই যায়নি এমন ভাব নিয়ে সে বলেই যেতে লাগলো, “কেবল হোয়াইট ওয়াইন ছাড়া। ফ্রেঞ্চ হোয়াইট ওয়াইনগুলো বেশ হাল্কা ধাঁচের, হজমের জন্যে বেশ ভালো”।খানিকটা নিরুৎসাহ, খানিকটা আতিথ্য মেশানো সুরে বললাম, “তা আপনার কী পছন্দ”? “আমার ডাক্তার আমাকে শ্যাম্পেন ছাড়া অন্য কিছু পান করতে নিষেধ করে দিয়েছেন”। আমার মুখ খানিকটা সাদা হয়ে গেল। “ওহ আর আমার ডাক্তার আমাকে শ্যাম্পেন পান করতে একদম নিষেধ করে দিয়েছেন”, বললাম। “তো আপনি কী নেবেন”? অম্লান বদনে উত্তর দিলাম “পানি”। 

ক্যাভিয়ার গেল তার পেটে, গেল স্যামন। আর মুখ দিয়ে শিল্প, স্থাপত্য নিয়ে নানান জ্ঞানগর্ভ বাণী বেরোতে লাগলো ।আমার কান দিয়ে সেসবের কিছুই ঢুকছে না।মাথায় খালি বোঁ বোঁ করে ঘুরছে বিল আসবে কত, বিল? ইতোমধ্যে মাটন চপ এসে পৌঁছলো। সাথে সাথে তার কড়া কথা। “আপনার তো সাঙ্ঘাতিক সমস্যা।আমাকে দেখে শেখেন না কেন? দুপুরে কেবল একটা জিনিস খান। দেখবেন বেশ ভাল বোধ করবেন”। আমি বেশ জোর দিয়েই বললুম, “দেখুন, দুপুরে এই একটা মেনুই খাব”। বলতে বলতে ওয়েটার ব্যাটা মেনু নিয়ে হাজির।  একটু নিরাসক্তি নিয়ে অনুরাগী অতিথি হাত নেড়ে বললেন, “আমি কখনই লাঞ্চে এক পদের বেশি খাই না। কথা বলতে বলতে যতটুকু খেতে পারি আর কী। আমার পক্ষে আসলে বেশি খাওয়া সম্ভব ও না। কিন্তু ওদের মেনুতে বড় বড় এস্পারাগাস থাকলে একটু চেঁখে দেখতাম আর কী। আর না হলে প্যারিস আসাই বৃথা”।কথা শুনে তো আমার ঢোঁক গেলা অসম্ভব হয়ে দাঁড়ালো।ওইগুলো কি রকম দামী জেনেও ওয়েটারকে জিজ্ঞেস করলাম, “ম্যাডাম জানতে চাচ্ছেন আপনাদের কাছে ওই বড় এস্পারাগাস গুলো আছে কিনা”। আমি প্রাণপণ ইচ্ছাশক্তি.

Talk Doctor Online in Bissoy App