জেনে নিন কিভাবে চুল পরা রোধ করবেন ..
চুল পরিষ্কার রাখা
চুল পড়ার অন্যতম কারণ হতে
পারে আপনার নিয়মিত চুল
পরিষ্কার না করার বাজে
অভ্যাস। চুল পড়া রোধে
নিয়মিত চুলের যত্ন নিন।
নিয়মিত চুল না ধুলে মাথার
ত্বকে ময়লা জমে খুশকির জন্ম
হয় যা কিনা চুল পড়ার অন্যতম
কারণ। আর খেয়াল রাখুন চুল
ধোয়ার জন্য আপনার ব্যবহার
করা শ্যাম্পু যেন অবশ্যই
হালকা হয়।
পর্যাপ্ত পরিমাণ প্রোটিন গ্রহণ করা
আমাদের চুলের গঠনের অন্যতম
উপাদান হল কেরাটিন, যা
কিনা অ্যামিনো অ্যাসিড
দিয়ে তৈরি এক ধরণের
প্রোটিন। নতুন চুল গজানোর
জন্যে অবশ্যই আপনার শরীরকে
পর্যাপ্ত অ্যামিনো এসিড
সরবরাহ করতে হবে। মাছ,
মাংস, পনির, দুধ, ডিম –
আপনার খাদ্য তালিকায়
প্রতিদিনই এগুলোর অন্তত
একটি রাখার চেষ্টা করুন।
সয়াবিন, মটরশুঁটি, কলা,
বাদাম ইত্যাদি থেকেও
পেতে পারেন এ উপাদান।
মনে রাখবেন ভেতর থেকে
পুষ্টি না সরবরাহ করতে
পারলে বাইরের কোন কিছুই
আপনাকে চুল পড়া থেকে
রক্ষা করতে পারবেনা।
ভিটামিন
ভিটামিন কেবল মাত্র
আমাদের দেহের সুস্থতার
জন্যই জরুরী নয় বরং আমাদের
চুলের জন্য ও এটা ভীষণ জরুরী।
ভিটামিন- এ মাথার ত্বক
থেকে উপকারি সিরাম
সরবরাহ করে আর ভিটামিন এ
মাথার ত্বকে রক্ত সঞ্চালন
বাড়িয়ে নতুন চুল গজাতে
সাহায্য করে। তাই চুল পড়া
রোধ করতে চাইলে আগে
সবার আগে নিশ্চিত করুন
আপনার শরীর যাতে পর্যাপ্ত
ভিটামিন পায়।
জিঙ্ক ও আয়রন গ্রহণ
জিঙ্ক আর আয়রন আমাদের
মাথার ত্বকে অক্সিজেন
সরবরাহ করতে সবচেয়ে
বেশী ভূমিকা রাখে। আর
মাথার চুল পড়ে যাওয়ার জন্য
দায়ী কারণ গুলোর একটি
হলম মাথার ত্বকে
অক্সিজেনের সল্পতা। তাই চুল
পড়া বন্ধ করতে জিঙ্ক আর আয়রন
বেশী বেশী গ্রহণ করুন।
যেমন মটরশুঁটি, বাদাম,
কলিজা, মাংস, দুধে আপনার
প্রয়োজনীয় জিংক আর আয়রন
বিদ্যমান। আপনি আপনার
খাবার তালিকায় এই
খাবারগুলো রাখতে ভুলবেন
না।
পানি
চুল পড়ার জন্য দায়ী কারণ
হিসেবে প্রতীয়মান হতে
পারে আপনার শরীরের
পানি ঘাটতি বা কম পানি
পান করার প্রবণতা। চুল পড়া
রোধ করতে চাইলে সবার
আগে শরীরকে পর্যাপ্ত পানি
সরবরাহ করুন। আপনার এই
ছোট্ট চেষ্টা টুকুই চুল পড়া
কমিয়ে তুলবে।
তেল ম্যাসাজ
চুল পড়া কমাতে আপনার জন্য
আরও একটি কার্যকরী টিপস
হলো চুলে তেল ম্যাসাজ
করা। দিনে কিছুটা সময়
নিয়ে আপনার মাথায়
এসেন্সিয়াল অয়েল যেমন
বাদাম তেল, অলিভ অয়েল বা
নারিকেল হালকা ম্যাসাজ
করুন। এতে মাথার ত্বক সুস্থ
থাকবে ও চুল পড়ার পরিমাণ
কমে আসবে।
ভেজা চুল না আঁচড়ানো
যাদের চুল পড়ার পরিমাণ
বেশী তাদের জন্য একটাই
পরামর্শ তা হল ভেজা চুল
আঁচড়াবেন না। ভেজা
অবস্থায় চুল ভীষণ দুর্বল থাকে
আর অল্প একটু টান পড়লেই চুল
গোঁড়া থেকে উঠে আসে।
তাই চুল আগে ভালভাবে
শুকিয়ে তারপর আঁচড়ান। আর
চেষ্টা করুন বড় দাঁতের
চিরুনি ব্যবহার করা।
পেঁয়াজ, আদা ও রসুনের রস
চুল পড়া প্রাকৃতিক উপায়ে
বন্ধ করতে চাইলে পেঁয়াজ,
আদা ও রসুন এই তিন
উপাদানের যে কোন একটি
বেছে নিন চুলের যত্ন করার
জন্য। আপনি চাইলে শুধুমাত্র
পেঁয়াজের রস নিয়ম করে
চুলে লাগিয়েই উপকার
পেতে পারেন।
গ্রিন টি
চুল পড়ার বিরুদ্ধে আপনার খুব
কাজের অস্ত্র হিসেবে
আপনার সাহায্য করতে পারে
গ্রিন টি। গ্রিনটির দুইটি
টি- ব্যাগ এক কাপ পরিমাণ
পানিতে ফুটিয়ে ফুটন্ত
পানি ঠাণ্ডা করুন। এরপর এই
ঠাণ্ডা হয়ে যাওয়া
পানিটুকু আপনার চুলের
গোড়াসহ সারা চুলে
লাগিয়ে ১ ঘণ্টা অপেক্ষা
করুন এবং পড়ে ধুয়ে ফেলুন।
ভালো ফলাফল পেতে
সপ্তাহে একবার এই পদ্ধতি
অবলম্বন করুন।
মেথি
চুল পড়া বন্ধ করতে মেথি
আপনার উপকারে আসতে
পারে। ১ টেবিল চামচ
মেথি সারারাত পানিতে
ভিজিয়ে রেখে সকালে
উঠে বেঁটে তা মাথায়
লাগান। হালকা ম্যাসাজ
করে আধাঘণ্টা পর চুল ধুয়ে
ফেলুন। দেখবেন চুল পড়ার
পরিমাণ কমে আসছে।
নিমপাতা
চুল পড়া বন্ধ করতে
নিমপাতার জুড়ি নেই।
তাজা নিমপাতা নিয়ে
বেঁটে তাতে সামান্য
অ্যাপেল সিডার ভিনেগার
মিশিয়ে মাথায় লাগান।
কিছুক্ষণ পর হালকা কোন
শ্যাম্পু দিয়ে চুল ধুয়তে
ফেলুন। সপ্তাহে এক থেকে
দুইবার এই পদ্ধতি অনুসরণ করলে
চুল পড়া কমে আসবে।
কালোজিরা
মাথায় নতুন চুল গজাতে
কালোজিরার তুলনা হয়না।
এখন বাজারে হরহামেশাই
কালোজিরার তেল কিনতে
পাওয়া যায়। আপনি চাইলে
মাথায় কালোজিরার তেল
ব্যবহার করতে পারেন আবার
ইচ্ছে করলে কালোজিরা
খেতে পারেন।
যদি চান মাথায় অকালে
টাক না পরুক তাহলে আজই
ধূমপান ও অ্যালকোহলকে না
বলুন।
ধূমপান ও অ্যালকোহল
গ্রহণের ফলে রক্ত দূষিত হয় ও
মাথার ত্বকে সঠিক
পরিমাণে রক্ত সরবরাহ না
হওয়ায় মাথার চুল পড়ে
যেতে দেখা যায়। তাই
সবার আগে ধূমপান আর
অ্যালকোহল গ্রহণ থেকে
বিরত থাকুন।
ছেলেদের মাথার চুল পড়ে
যাওয়ার জন্য দায়ী
কারণগুলোর মধ্যে অন্যতম হল
অতিরিক্ত চিন্তা করা ও
মানসিক অবসাদে ভোগা।
যতোটা পারুন নিজেকে
হাসিখুশি রাখতে চেষ্টা
করুন। আর খেয়াল রাখুন আপনার
মাথার ত্বকে যেন কখনই ঘাম
অতিরিক্ত সময় জমে থেকে
শুকিয়ে না যায়। মাথার
ত্বকে অতিরিক্ত ঘামভাবও চুল
পড়ার জন্য দায়ী।