হঠাত করে কোন চুড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিবেন না।আগে ভাবুন, দেখুন, তারপর সিদ্ধান্ত নিন। নিচে লেখাগুলো ভালকরে পড়ুন আর পারলে দোয়া আমল করুন।ইনশাল্লাহ সব সমাধান হবে।
নববধূ যখন সংসারে আসে তখন সে একেবারে অপরিচিতা অনভিজ্ঞা থাকে। সাংসারিক কাজে থতমত খাওয়া তার স্বাভাবিক। কোন কাজ ঠিকভাবে না পারাটাই প্রকৃতি। কারণ সকলে মায়ের বাড়ি থেকে পাকা গিন্নী হয়ে শবশুরালয় আসতে পারে না, তাছাড়া শিক্ষিতা হলে তো মোটেই না। নববধূকে স্নেহের সাথে কাজ শিক্ষা দেওয়া, সংসার বুঝিয়ে দেওয়া। কাঁধে জোঁয়াল দিলেই যে সব গরু গাড়ি টানবে--তা নয়। অতএব নববধূর প্রতি কোন প্রকার ভৎর্সনা, কটাক্ষ ও ব্যঙ্গোক্তি প্রয়োগ করা এবং এ নিয়ে তার সামনে তার মা-বাপকে গঞ্জনা দেওয়া মানবিক খাতিরেও উচিৎ ও বৈধ নয়।
বিভিন্ন উপন্যাস ও রূপকথার প্রেমকাহিনীতে যে কাল্পনিক প্রেম ও ভালোবাসার বর্ণনা পাওয়া যায় স্বামী-স্ত্রী বা শ্বশুর-শাশুড়ী পরস্পরের নিকট থেকে সেরূপ আশা করলে অবশ্যই মন আঘাত পাবে; যা মহাভুল। কারণ, কাল্পনিক প্রেম কেবল কল্পনা ও খেয়ালের জগতে মানুষের মানসপটেই বিচরণ করে। বাস্তবজগতে তার কোন অস্তিত্ব ও উদাহরণই নেই, আর থাকলেও তা বিরল।
বিবাহের পর নবদম্পতির জন্য দো‘আ
# বিবাহের পর নবদম্পতির জন্য দো‘আ :
بَارَكَ اللهُ لَكُمَا وَبَارَكَ عَلَيْكُمَا وَجَمَعَ بَيْنَكُمَا فِيْ خَيْرٍ-
বা-রাকাল্লা-হু লাকুমা ওয়া বা-রাকা ‘আলাইকুমা ওয়া জামা‘আ বায়নাকুমা ফী খায়রিন। (এই বিবাহে আল্লাহ তোমাদের জন্য বরকত দান করুন ও তোমাদের উপর বরকত দান করুন এবং তোমাদের উভয়কে কল্যাণের সাথে একত্রিত করুন)। [120] অথবা বলবে, اَللَّهُمَّ بَارِكْ لَهُمْ আল্লা-হুম্মা বা-রিক লাহুম (হে আল্লাহ! তুমি তাদেরকে বরকত দাও)। বিয়ের খবর শুনে বরকে বলবে, بَارَكَ اللهُ لَكَ বা-রাকাল্লা-হু লাকা (আল্লাহ তোমাকে বরকত দান করুন!)। [121]
উল্লেখ্য যে, ব্যক্তিগত ভাবে প্রত্যেকে নবদম্পতির উদ্দেশ্যে উক্ত দো‘আ পড়বেন। এ সময় দু’হাত তুলে সম্মিলিত ভাবে মুনাজাত করার প্রথাটি ভিত্তিহীন এবং এসময় বরের দু’রাক‘আত ছালাত আদায় করার প্রথাটিও প্রমাণহীন।
(খ) বিবাহের পর স্ত্রীর জন্য স্বামীর দো‘আ :
اَللَّهُمَّ إِنِّيْ أَسْأَلُكَ خَيْرَهَا وَخَيْرَ مَا جَبَلْتَهَا عَلَيْهِ وَأَعُوْذُ بِكَ مِنْ شَرِّهَا وَشَرِّ مَا جَبَلْتَهَا عَلَيْهِ-
উচ্চারণ : আল্লা-হুম্মা ইন্নী আসআলুকা খায়রাহা ওয়া খায়রা মা জাবালতাহা ‘আলাইহি, ওয়া আ‘ঊযুবিকা মিন শার্রিহা ওয়া শার্রি মা জাবালতাহা ‘আলাইহি।
অনুবাদ : ‘হে আল্লাহ! আমি তোমার নিকট তার মঙ্গল চাই এবং তার সেই কল্যাণময় স্বভাব প্রার্থনা করি, যার উপর তুমি তাকে সৃষ্টি করেছ। আর আমি তোমার নিকট আশ্রয় চাই তার অনিষ্ট হ’তে এবং সেই মন্দ স্বভাবের অনিষ্ট হ’তে, যা দিয়ে তুমি তাকে সৃষ্টি করেছ’। এই সময় স্ত্রীর কপালের চুল ধরে স্বামী উক্ত বরকতের দো‘আটি করবে। [122] এর মধ্যে স্বামী-স্ত্রী পরস্পরের প্রতি ক্ষমাশীল ও দয়াশীল হয়ে দাম্পত্য জীবন যাপন করার ইঙ্গিত রয়েছে।
[120] . ইবনু মাজাহ হা/১৯০৫; আহমাদ, তিরমিযী, আবুদাঊদ, মিশকাত হা/২৪৪৫, ‘দো‘আ সমূহ’ অধ্যায়-৯, ‘বিভিন্ন সময়ের দো‘আ সমূহ’ অনুচ্ছেদ-৭ । [121] . ইবনু মাজাহ হা/১৯০৬-০৭। [122] . আবুদাঊদ, ইবনু মাজাহ, মিশকাত হা/২৪৪৬, ‘দো‘আ সমূহ’ অধ্যায়-৯, অনুচ্ছেদ-৭; মিরক্বাত ৫/২১৬।