Call

#9 সালাত ( নামাজ ) ইসলামের পাঁচটি স্তম্ভের অন্যতম একটি । সালাত বান্দাকে আল্লাহর সবচেয়ে নিকটে নিয়ে যেতে সাহায্য করে । হাদীসে বলা হয়েছে বান্দা যখন সিজদায় যায় তখন সে আল্লাহর সবচেয়ে প্রিয় হয় । কোরআনে প্রায় ৮২ বার আল্লাহ নামাজ আদায় করার কথা বলেছেন । হাদীসে প্রিয় নবী (সঃ) অনেক তাগিদ দিয়ছেন এই সালাতের ব্যাপারে । সালাত হল এমন এক ইবাদত যা মুসলিম ও অমুসলিম এর মাঝে পার্থক্য করে দেয় । নামাজ মানুষকে সকল প্রকার পাপ কর্ম থেকে দূরে রাখে ।


এই নামাজেই কেবল মাত্র মানুষের অন্তরকে শান্তি দিতে পারে । কিন্তু নামাজ আদায় করতে গিয়ে আমাদের মনোযোগ থাকেনা নামজে । কল্পনার জগতে মানুষ বড়ই বেপরোয়া । তাই ইচ্ছা করেও ধরে রাখতে পারে না মনোযোগ নামাজে ।

তাই কেন নামাজে মন থাকে না তা আমার কিছু বাস্তব সম্মত কারণ তুলে ধরছি

সালতে এত সব কল্পনা কেন
অনেক কঠিন বিষয়ের সমাধান খুব সহজে চলে আসে নামাজে দ্বাড়ালে । অনেক জটিল হিসাব খুব সহজে মিলে যায়। এসবের কারণ হতে পারে নিচের যে কোন একটি বা একাধিক,

১। সালত কে নিছক ধর্মীয় অনুষ্ঠান মনে করাঃ কেনল মাত্র কিছু মুখস্ত সুরা, দোয়া, মন্ত্রের মত পাঠ করা । তারপর রুকু করা সিজদাহ করা ,এভাবে নামাজ শেষ করা । পুরো বিষয়টি কেমন যেন একটা যান্ত্রিকতা ও অনুষ্ঠানিকতা । সালতের সাথে অন্তরের একটা যে যোগসাজস আছে তা অনেকেরই উপলব্ধি হয় না ।

২। সালতকে যথাযথ মুল্যানয় না করাঃ দৈনদ্দিন আর পাঁচ টা কাজের মত মনে করা এই পবিত্র সালাতকে । অথচ দুনিয়া আখেরাতে কামিয়াবির একমাত্র উপাই।

৩। পাপ কাজে ডুবে থাকাঃ নিয়মিত সালাত আদায় করা সত্তেও অনেক মুসল্লি আছেন যারা প্রকাশ্য ও নিয়মিত পাপে ডুবে থাকেন । মানুষের স্বভাবত বিশিষ্ট যে সে সব সময় যা করে তা তার সবসময় মনে থাকে । তাইতো নামাজে সিনেমার কোন অংশ মনে আশাটা অসম্ভব নয় । অনেকে আবার নাটক ,সিনেমার , মাঝে মাঝে বিরতি বা এড দেয়ার সময় খুব তারাতারি করে নামাজ সেরে ফেলেন।

৪। অর্থ না বোঝাঃ সালাত যেহেতু পুরোটাই আরবি ভাষায় তাই এর অর্থ আমরা সহজেই বুঝি না । আর এই অর্থ না বোঝার ফলে আমাদের মুখস্ত সুরা গুলো মুখে বলতে থাকি কিন্তু অলস অন্তর অন্য চিন্তায় ব্যাস্ত থাকে । আর যদি বোঝা যেত তাহলে অন্তর সেটা নিয়ে ভাবতো।

৫।আখিরাতের তুলনায় দুনিয়ার বেশী মুল্যায়ন করাঃ আজকাল সবাই সাথে সাথে ফিড ব্যাক পাওয়ার চিন্তা বেশী করে । তাইতো নামাজের অয়াক্তে অন্য বিষয় নিয়ে ব্যাস্ত থাকে নামাজ কে ভুলে। আর বিশেষ করে উপার্জনের ব্যাপারে ইসলামের তোয়াক্কা না করা।

৬।জায়নামাজ ও মসজিদে নকশা-কারুকার্য করাঃ বিশেষত নামজের জায়গায় এসব কারুকার্য থাকলে মনোযোগ টা সেই দিকে চলে যায় । যার ফলে নামাজের একাগ্রতা নষ্ট হয় ।

৭। সালতের হুকুম আহকাম ঠিক ভাবে অনুসরন না করা । রাসুল(সঃ) যে ভাবে নামাজের নিয়ম দেখিয়েছেন তা সঠিক ভাবে না মানা।

৮।শয়তানের প্রভাবঃ যেহেতু সালাত সবচেয়ে বড় ইবাদত তাই এতে শয়তানের প্রভাবও বেশী । শয়তান তার সর্বচ্চ শক্তি দিয়ে বান্দার সালাত নষ্টের কাজে নেমে পরে । কিছু শয়তানের এ ব্যাপারে কাজ ভাগ করে দেয়া থাকে। নামাজ নষ্ট কারী শয়তানের নাম ‘খানযাব’। সালাতে ইদিক ওদিক তাকানো এটাও শয়তানের প্রভাবের ফল।

৯। নিয়মিত কোরআন হাদীস পাঠ না করা । কোরআন হাদিস নিয়মিত পাঠ আমাদের অন্তরকে রাখে পবিত্র।

ভিডিও কলে ডাক্তারের পরামর্শ পেতে Play Store থেকে ডাউনলোড করুন Bissoy অ্যাপ
Nabilahaque

Call

১) তাকবীরে তাহরিমা অর্থাৎ আল্লাহু আকবার বলে হাত বাঁধার আগে চিন্তা করা আমি কার সামনে দাঁড়াচ্ছি। যার সামনে দাঁড়াচ্ছি তিনি কতো বড়, কতো মহান। দুনিয়ার একজন সামান্য প্রেসিডেন্টের সামনে যদি আমি দাঁড়াই তখন যেভাবে মনোযোগ ও ভক্তি সহকারে স্থির হয়ে দাঁড়াতাম, তাহলে সমগ্র সৃষ্টিজগতের মালিকের সামনে দাঁড়ালে আমার আচরণ কীরূপ হওয়া দরকার?

২) তাজওয়ীদ সহকারে ধীরে ধীরে কুরআন তিলাওয়াত করা ও রুকু সিজদাহর তাসবীহ ভক্তিসহকারে আদায় করা।

৩) অর্থের প্রতি খেয়াল রেখে সবকিছু করা। অর্থের প্রতি খেয়াল না থাকলে আমি কার সামনে দাঁড়িয়ে কী বলছি এবং কেন বলছি তা কখনই বুঝে আসবে না। অন্তত সালাতে যে সূরাগুলো পড়া হয় এবং রুকু,সিজদাহ ও বসা অবস্থায় তাসবীহ ও দুয়াগুলোর অর্থ শব্দের প্রতি খেয়াল রেখে পড়া।

৪) হাদিসে এসেছে, বান্দা যখন সিজদাহ অবস্থায় থাকে তখন সে মহান আল্লাহর খুব নিকটবর্তী হয়ে যায়। তাই সিজদাহ অবস্থায় আমাদের মনে এই ধ্যান আসা উচিত যে আমার দেহের সবচেয়ে সম্মানের অঙ্গ মাথাকে আমার মালিকের সামনে লুটিয়ে দিলাম শুধুমাত্র তারই অনুগ্রহ পাবার আশায়।

৫) নড়াচড়া করা, দাড়িতে হাত বুলানো, গা চুলকানো, মশা তাড়ানো, টুপি ঠিক করা, জামা টেনে টুনে ঠিক করা ইত্যাদি অযথা কাজ পরিহার করার চেষ্টা করা।

৬) এই ধ্যান করা যে আমার মনের অবস্থা একমাত্র আল্লাহই জানেন। রিয়া তথা লোকদেখানোর চিন্তা মাথায় আসার সাথে সাথেই ঝেড়ে ফেলা, শুধুমাত্র আল্লাহর জন্যই সালাতকে সুন্দর করার চেষ্টা করা। আর কাল হাশরের ময়দানে এই সালাতের প্রতিদানের আশা করা, সাথে সাথে নিজের গুনাহ ও দুর্বলতার কারণে সালাত অগ্রাহ্য হওয়ার আশঙ্কাও রাখা।

৭) মনে মনে চিন্তা করা যে আমি পুলসিরাতের উপর দাঁড়িয়ে আছি, আমার ডানে জান্নাত, বামে জাহান্নাম, মাথার উপর গুনাহের বোঝা, পেছনে মালাকুল মাউত জান কবজের জন্য দাঁড়িয়ে আছেন। মনে করা যে এটিই আমার জীবনের শেষ সালাত, এরপর হইত আমার আর সালাত আদায়ের সুযোগ হবে না।

আল্লাহ সুবহানাহু আমাদেরকে খুশু খুযুর সাথে সালাত আদায় করার তাওফিক দান করুন।

ভিডিও কলে ডাক্তারের পরামর্শ পেতে Play Store থেকে ডাউনলোড করুন Bissoy অ্যাপ