শেয়ার করুন বন্ধুর সাথে
hasanrpi

Call
বলা হয়, একটি ছবিতে যা প্রকাশ করা হয়, তা হাজার লাইন লিখেও বলা যায় না। কিছু ছবি মানুষকে হাসায়, কিছু বিষণ্ণ করে, কিছু হয়তো আতঙ্কগ্রস্ত করে। এমন ১০টি মর্মস্পর্শী ছবি নিয়ে আজকের পোস্ট। চলুন দেখে নেয়া যাক:

১. প্রথমটি বাংলাদেশের আলোচিত রানা প্লাজার। যে ছবি বিশ্বের বহু গনমাধ্যমে ছাপা হয়েছিল।

image

২০১৩ সালের ২৪ এপ্রিলে সাভারের রানা প্লাজা ধ্বসের ঘটনায় মুহূর্তেই মানুষের মাঝে ছড়িয়ে পড়ে শোক এবং উৎকণ্ঠা। ধ্বংসস্তূপ থেকে আহত-নিহত মানুষে বের করে আনার পুরো প্রক্রিয়াটা চলেছে দিনের পর দিন আর তার মাঝে দিয়ে আমরা সবাই একটু একটু করে উপলব্ধি করেছি নিদারুণ সেই বিভীষিকা। ব্যাপারটি এতই গুরুতর যে দেশের গণ্ডি পেরিয়ে বিশ্বের মানুষের কাছে এর সংবাদ চলে যায়, সেই সাথে এই ধ্বংসস্তূপ থেকে তোলা বিভিন্ন ছবি। যেমন, তাসলিমা আখতারের তোলা প্রচ্ছদের এই ছবিটি। দুইজন মানুষের পরস্পরকে জড়িয়ে ধরে বেঁচে থাকার যে ভীষণ আকুতি উঠে এসেছে এই ছবিতে, শত বলেও তা ব্যাখ্যা করা যাবে না। কি করে মৃত্যু হলো তাদের? তারা কি একজন আরেকজনকে বাঁচিয়ে রাখার চেষ্টা করছিলেন? কেমন ছিলো তাদের জীবন, তাদের স্বপ্ন? না জানি কী ভীষণ ভালোবাসায় মৃত্যুর পূর্ব মুহূর্তে পরস্পরকে আঁকড়ে ধরেছিলেন তারা!

পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে এখনো আলোচিত হয়ে যাচ্ছে মর্মস্পর্শী এই নিদারুণ করুন ছবিটি।

২.ভূপালের গ্যাস ট্রাজেডিঃ
image



১৯৮৪ সালে ভারতের মধ্যপ্রদেশের ভূপালে একটি কীটনাশক তৈরির কারখানায় বিস্ফোরণ ঘটলে বিষাক্ত মিথাইল আইসোসায়ানাইড গ্যাসে আক্রান্ত হয়ে ৫ লাখ ৫৮ হাজার ১২৫ জন মানুষ আহত হন, নিহত হন প্রায় ১৫ হাজারের মত মানুষ। ফটোসাংবাদিক পাবলো বার্থোলোমিউ দ্রুত ঘটনাস্থলে ছুটে যান। এ ছবিটি তারই তোলা যা দুর্ঘটনায় নিহত শিশুটিকে মাটিতে সমাহিত করার আগ মূহুর্তে তোলা হয়।

৩.সুদানের ভয়াবহ দুর্ভিক্ষ ১৯১৩ :

image

বিশ্ববিখ্যাত ও একইসাথে প্রবল সমালোচিত এ ছবিটি ১৯৯৩ সালে ‘নিউ ইয়র্ক টাইমস’ পত্রিকায় প্রকাশিত হয়। আর এর মাধ্যমেই আলোতে আসেন আলোকচিত্রশিল্পী কেভিন কার্টার। সুদানের দুর্ভিক্ষের সময় তোলা এ ছবিটি ১৯৯৪ সালে জিতে নেয় পুলিৎজার পুরস্কার। এতে দেখা যায়, দুর্ভিক্ষে খেতে না পেয়ে জীর্ণ-শীর্ণ একটি শিশু মাটিতে মূমুর্ষ অবস্থায় পড়ে আছে, আর খুব কাছেই একটি শকুন বসে আছে। যেন কখন শিশুটি মারা যাবে ও এটা শিশুটিকে খেয়ে ফেলতে পারবে তারই অপেক্ষা। ছবিটি ভয়াবহ বিতর্ক তৈরি করে। কথা উঠে যে, ছবি তুলে শিশুটিকে বাঁচানোর কোনো চেষ্টা কেভিন করেছিলেন কি না? কেভিনের নিজেরও মনে হতে শুরু করে যে, তিনি হয়তো চাইলে শিশুটিকে বাঁচাতে পারতেন। তীব্র মানসিক যন্ত্রণা থেকে ১৯৯৪ সালে তিনি আত্মহত্যা করেন। যদিও শিশুটি সেসময় মারা যায় নি, আরো বেশ কিছুদিন বেঁচে ছিল। নিয়ং কং নামের ছবির ছেলেটি মারা যায় ২০০৭ সালে।

৪. থাইল্যান্ডের বিশ্ববিদ্যালয়ে গণহত্যাঃ

image

থাইল্যান্ডের নির্বাসিত স্বৈরশাসক ফিল্ড মার্শাল থামম কিটিকাচর্নের দেশে ফিরে আসার কথা শুনে বিক্ষোভে উত্তাল হয়ে উঠে পুরো থাইল্যান্ড। থামাসাত বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্ররাও এর ব্যতিক্রম ছিল না। এ বিশ্ববিদ্যালয়ে বিক্ষোভরত ছাত্রদের উপর গণহত্যা চালানো হয় ১৯৭৬ সালের ৬ অক্টোবর। বহু ছাত্রকে গুলি করে, পিটিয়ে বা আগুনে পুড়িয়ে মারা হয়। সেরকমই একটি ঘটনার ছবি তুলেছেন নীল ইউলেভিচ, যেটা ১৯৭৭ সালে পুলিৎজার প্রাইজ পায়।

৫. যখন সব চেষ্টা ব্যর্থ হয়ে যায়ঃ

image

১৯৮৫ সালে কলম্বিয়াতে আরমেরো নামে ছোট গ্রামের পাশেই নেভাদো দেল রুইজ নামে আগ্নেয়গিরিতে অগ্ন্যুৎপাত ঘটে। পুরো গ্রামের উপর এর প্রতিক্রিয়া ছিল ভয়াবহ। এতে ব্যপক ভূমিধ্বসের সৃষ্টি হয়। অমায়রা স্যানচেজ নামে ১৩ বছরের এই মেয়েটি একটি বিধ্বস্ত ভবনের নিচে আটকা পড়ে। উদ্ধারকর্মীদের সব চেষ্টাকে ব্যর্থ করে দিয়ে টানা ৬০ ঘণ্টা আটকে থাকার পর সে মারা যায়।

৬. ইজরাইলের বর্বরতার সাক্ষ্য:

image

২০১৪ সালে ফিলিস্তিনের গাজায় ইজরাইলি হামলায় শিশুটি মাটি ছাপা পড়ে। পৃথিবীজুড়ে অসংখ্য মিডিয়ায় ছবিটি ছাপা হয়। বিশ্বজুড়ে ইজরাইলি বর্বরতার তিব্র প্রতিবাদ সৃষ্টি হয়।

৭. মানুষ মানুষের জন্যঃ

image

উগান্ডাতে ১৯৮০ সালে চলছিল প্রচণ্ড দুর্ভিক্ষ। অনাহারের শিকার এক শিশুর হাত পরম মমতায় ধরে রেখেছেন দাতব্য সংস্থার একজন কর্মী। মর্মস্পর্শী এ ছবিটি তুলেছেন মাইক ওয়েলস।

৮. ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টার থেকে পড়ন্ত মানুষঃ

image

২০০১ সালের ১১ সেপ্টেম্বর সন্ত্রাসী হামলায় বিধ্বস্ত হয় যুক্তরাষ্ট্রের টুইন টাওয়ার। পুরো ভবনে আগুন ধরে গেলে অনেকেই নিচে ঝাঁপ দেন জীবন বাঁচানোর আশায়। সেরকমই এক হতভাগ্য ব্যক্তির ছবি তুলেন এপি’র আলোকচিত্রশিল্পী রিচার্ড ড্রিউ। বলাই বাহুল্য যে মানুষটি বাঁচাতে পারেন নি নিজের জীবন।

৯. ক্যান্সারে আক্রান্ত ছোট্ট মেয়েটিঃ

image

এ ছবিটি একটি ছোট মেয়ের, যে কিনা ক্যান্সারে আক্রান্ত ছিল। কেমোথেরাপির কারণে তার মাথার চুল সব পড়ে যায়। আয়নাতে কি মেয়েটি তার মনের ইচ্ছাটুকুই ফুটিয়ে তোলার চেষ্টা করছিল? মেয়েটি এখনো বেঁচে আছে কিনা আমাদের জানা নেই।

১০. ইজরাইলি বর্বরতার আরেকটি ছবি:

image

আর মাত্র কয়েকদিন পরেই মা হতে চলেছেন ,এ খুশিতে আত্মহারা ছিল ফিলিস্তিনি মেয়েটি । কিন্তু অভিশপ্ত হায়েনার দল গুলি করে ঝাঝড়া করে দেয় মেয়েটিকে । পেটের সন্তান বেচে আছে -এ আশায় দ্রুত সিজার করে বাচ্চাটাকে বের করা হয় । কিন্তু -বের হওয়া ফুটফুটে বাচ্চাকে দেখে কেউ কান্না ধরে রাখতে পারেননি । বাচ্চাটির বুক পেট ঝাঝরা হয়ে আছে গুলিতে ।
ভিডিও কলে ডাক্তারের পরামর্শ পেতে Play Store থেকে ডাউনলোড করুন Bissoy অ্যাপ