বাংলাদেশে অনেক পাখি আছে কিন্তু এমন একটি নোংরা দোয়েল পাখিকেই কেন জাতীয় পাখির সন্মান দেয়া হয়েছে ।
শেয়ার করুন বন্ধুর সাথে
Call

আমরা সবাই শুধু এতটুকুই জানি যেদোয়েল আমাদের দেশের জাতীয় পাখি। এর বেশি কিছু জানি না! কিন্তু কী কারণে এবং কোন বিবেচনায় দোয়েল জাতীয় পাখির মুকুট পড়ল তা আম‍াদের অনেকেরই অজ্ঞাত। বস্তুতপক্ষে বিষয়টি আমাদের জানা প্রয়োজন।
জাতীয় পাখি হওয়ার জন্য দোয়েলের দাবি কতখানি শক্তিশালীএই ভাবনা থেকেই একদিন মুখোমুখি হই বরেণ্য পাখি বিশেষজ্ঞ ও বাংলাদেশ বার্ড ক্লাবের প্রতিষ্ঠাতা ইনাম আল হকের সঙ্গে।
তিনি বলেনআমি বেশ কিছুদিন আগে এমন একটি লেখা লিখেছিলাম। তার অংশবিশেষ বলছি আপনাকে। প্রথম কথাজাতীয় কিছু করা মানে অর্থাৎ পশুপাখিবৃক্ষফল ইত্যাদি সিম্বলিক (প্রতীক) ব্যাপার মাত্র। এটাকে সৌখিনও বলা হয়। সৌখিনতার চাইতে আর কোনো গুরুত্বপূর্ণ দিক নেই।
এখানে শুধু দুটো জিনিস সাধারণত ভালো করে দেখা হয়। প্রথমটি হলো- ওই দেশে ওই জিনিসটা বেশি সংখ্যক রয়েছে কি-নাপ্রচুর সংখ্যক থাকার অর্থই হলো ওই দেশকে সে  রিপ্রেজেন্ট (উপস্থাপন) করছে। যেমন ধরা যাক ইলিশ মাছের কথা। যে কোনো মাছের নাম জানে না সেও ইলিশ মাছের নাম জানে। এই মাছটি এতো ব্যাপকভাবে পরিচিত যে আমরা সবাই এর নাম জানি। ওই পাখিটিরও এমনই ব্যাপক পরিচিত এবং জনপ্রিয় থাকতে হবে। লোকের মুখে মুখে হতে হবে। তবেই সেটি জাতীয় বলে অখ্যায়িত হওয়ার চূড়ান্ত যোগ্যতা রাখে।      
দ্বিতীয়তঅন্য কোনো দেশ এটিকে তাদের জাতীয় করে ফেলেছে কি-নাসেটি দেখা। যদি দোয়েল ভারতের জাতীয় পাখি হতোতবে বাংলাদেশ কখনোই তাকে জাতীয় পাখি হিসেবে তালিকাভুক্ত করত না। অধিক পরিচিতি এবং অন্য কোনো দেশ এটিকে জাতীয় হিসেবে আগেই তালিকাভুক্ত করেছে কি-না এই দুটো জিনিস মূলত কোনো কিছুকে জাতীয় হিসেবে আখ্যায়িত করার প্রধান মানদণ্ড।

ইনাম আল হক আরো বলেনএটা যখন করা হয়েছিল তখন পাখির লোকেদেরই জিজ্ঞেস করা হয়েছিল। তখন যারা প্রাণিবিজ্ঞানী বা গবেষক ছিলেন তাদের মতামত ছিল দোয়েল। একটি খুবই যুক্তিযুক্ত হয়েছে বলে আমি মনে করি। দোয়েলও ইলিশ মাছের মতই আমাদের দেশে ব্যাপক পরিচিত। তবে আমাদের দেশের সর্বত্র কাকের ব্যাপক উপস্থিতি থাকলেও কাক–কে কেউ জাতীয় পাখি করবে না। কারণ স্বভাবগত বিষয়ের জন্যই সে আমাদের প্রিয় পাখিদের তালিকায় পড়ে না। 

তিনি আরও বলেনশালিকদোয়েলবক এই ৩/৪টি পাখি এরাই সম্ভবত জাতীয় পাখির মর্যাদার লড়াইয়ে তখন প্রতিদ্বন্দ্বিতার টেবিলে ছিল। তার মধ্যে দোয়েলকেই মনোনীত করা হয়েছে এ জন্য যেএই পাখিটি আমাদের দেশের সর্বত্র পাওয়া যায়। শহর থেকে শুরু করে পাহাড়-বন কিংবা গ্রামের নির্জন পুকুরের পাড়েও তার দেখা মেলে। আমাদের দেশের খুব কম পাখির অবস্থান এমন। যে পাখি শহরে থাকে সে আর বনে থাকতে পারে না। বাসস্থানবিচরণভূমি ও আহারগত কারণে। কিন্তু সর্বত্রই রয়েছে দোয়েল।
এ পাখি গবেষক আরও বলেনগহিন বনেও আপনি দোয়েল পাবেন। দোয়েল ছাড়া আর কোনো পাখিকে সারাদেশের আনাচে কানাচে এভাবে দেখা যায় না। সুন্দরবন থেকে শুরু করে প্রতিটি ছোট-বড় বনে তারা বিচরণ করছে। আবার ঢাকার মতো প্রচণ্ড কোলাহলপূর্ণ ব্যস্ত শহরেও দোয়েল দিব্বি টিকে আছে। চারিদিকে দোলানকোঠোকোনো গাছপালা নেই। যেহেতু যে সব স্থানে টিকে থাকতে পারে এবং বাংলাদেশের সর্বত্র আছে তাই তাকেই নির্বাচন করা হয়েছে....
তথ্যঃbappibutex.blogspot হতে!

ভিডিও কলে ডাক্তারের পরামর্শ পেতে Play Store থেকে ডাউনলোড করুন Bissoy অ্যাপ