শেয়ার করুন বন্ধুর সাথে

পাঠাগারের শাব্দিক প্রতিশব্দ হচ্ছে পুস্তকাগার, গ্রন্থাগার বা লাইব্রেরি। মানুষের অনন্ত জিজ্ঞাসা, অন্তহীন জ্ঞান ধরে রাখে বই। আর বই সংগৃহীত থাকে পাঠাগারে। পাঠাগার হলো—সাহিত্য, ইতিহাস, ভূগোল, ধর্ম, দর্শন, বিজ্ঞান ইত্যাদির এক বিশাল সংগ্রহশালা। পাঠাগারের বইয়ের ভাণ্ডারে সঞ্চিত হয়ে আছে মানব সভ্যতার শত শত বছরের হৃদয়স্পন্দন। এটি মানুষের অতীত, বর্তমান ও ভবিষ্যতের মধ্যে সেতুবন্ধন রচনা করে থাকে। মুদ্রণ যন্ত্র আবিষ্কারের অনেক কাল আগে থেকেই পাঠাগারের প্রচলন ছিল। তখন মানুষ জ্ঞান সঞ্চিত করে রাখত পাথর, পোড়ামাটি, পাথরের গা, প্যাপিরাস, ভূর্জপত্র বা চামড়ায়। খ্রিস্টের জন্মের পাঁচ হাজার বছর আগে মিসরে, প্রাচীন গ্রিসেও পাঠাগারের অস্থিত্ব ছিল। ভারতে প্রাচীনকালে পণ্ডিতদের ব্যক্তিগত পাঠাগার ছিল। আধুনিককালে বিজ্ঞানের সহায়তায় উন্নত পাঠাগার প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। বিশ্ববিখ্যাত পাঠাগারের মধ্যে ব্রিটিশ মিউজিয়াম, মস্কোর লেনিন লাইব্রেরি, ওয়াশিংটনের লাইব্রেরি অব কংগ্রেস, কলকাতার ন্যাশনাল লাইব্রেরি উল্লেখযোগ্য। আমাদের দেশে ঢাকায় ‘কেন্দ্রীয় পাবলিক লাইব্রেরি’ উল্লেখযোগ্য। এ লাইব্রেরি প্রতিষ্ঠিত হয় ১৯৫৩ সালে। এ ছাড়া ঢাকায় বাংলা একাডেমি গ্রন্থাগার, জাতীয় গ্রন্থকেন্দ্র, এশিয়াটিক সোসাইটি লাইব্রেরি, ব্রিটিশ কাউন্সিল লাইব্রেরি, খুলনার উমেশচন্দ্র স্মৃতি গ্রন্থাগার উল্লেখযোগ্য। ঢাকার বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্র বাংলাদেশে ভ্রাম্যমাণ পাঠাগারের প্রচলন করে আলোকিত মানুষ গড়ার কাজে নিরলস চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। বিশ্বে নানা রকম পাঠাগার রয়েছে। তার মধ্যে ব্যক্তিগত, পারিবারিক, সাধারণ ও জাতীয় পাঠাগার উল্লেখযোগ্য। সাধারণ পাঠাগার সর্বসাধারণের জন্য উন্মুক্ত বলে এর পরিসর অনেক ব্যাপক ও বিস্তৃত। স্কুল-কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র-শিক্ষকের প্রয়োজনে যে পাঠাগার গড়ে ওঠে, সেগুলো প্রাতিষ্ঠানিক পাঠাগার। বিশ্বের প্রতিটি দেশেই রাষ্টীয়ভাবেও পাঠাগার স্থাপন করা হয়ে থাকে। এগুলোই জাতীয় পাঠাগার। এই পাঠাগারগুলো মানুষের ক্লান্ত বুভুক্ষু মনে আনন্দের সঞ্চার করে। তার জ্ঞান প্রসারে রুচিবোধ জাগিয়ে তোলে। পাঠাগারের মাধ্যমেই একটি জাতি উন্নত, শিক্ষিত ও সংস্কৃতিবান জাতি হিসেবে গড়ে ওঠে।

ভিডিও কলে ডাক্তারের পরামর্শ পেতে Play Store থেকে ডাউনলোড করুন Bissoy অ্যাপ